মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সময় জালাও পোড়াও মামলার অন্যতম আসামী এবং বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. আব্দুর রউফকে দেওয়া নৌকা প্রতিকের মনোনয়নপত্র বাতিলের দাবীতে স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও এর সহযোগি সংগঠন মানব বন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন। মানব বন্ধন, বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ এবং সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে চেয়ারম্যান পদে ঐ বিএনপি নেতার নৌকা প্রতিকের মনোনয়নপত্র দ্রুত বাতিল করে এলাকার গ্রহনযোগ্য আওয়ামীলীগ নেতাকে চেয়ারম্যান পদে নৌকার মনোয়ন দেওয়ার জোর দাবী জানিয়েছেন। আজ সোমবার (১৬ মে) টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার তিন নং ফতেপুর ইউনিয়নে ফতেপুর বাজারে বেলা এগারটায় ফতেপুর-ছাওয়ালী-মহেড়া রোডে মানব বন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। প্রতিবাদ সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি ও ফতেপুর ইউনয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন তালুকদার, ফতেপুর ইউনয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি মো. বাহার উদ্দিন মাষ্টার, মো. নজরুল ইসলাম, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি মো. আব্দুল গফুর সিকদার, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ফয়সার সিকদার, ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি কালাম মিয়া, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি হাইওল সিকদার এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. প্রমুখ।
মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন, মো. হুমায়ুন তালকদার, আব্দুল গফুর সিকদার। লিখিত বক্তব্যে তারা উল্লেখ করেন, ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নপত্র পাওয়ার জন্য আবেদন করেন সাবেক চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন তালুকদার, মো. আবুল কালাম আজাদ, মো. নজরুল ইসলাম এবং আব্দুর রউফ মিয়া। আগামী ১৫ জুন তিন নং ফতেপুর ইউনিয়নে যাকে নৌকার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে ( মো. আব্দুর রউফ মিয়া) তিনি বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সময় জালাও পোড়াও মামলার অন্যতম আসামী। মামলা নং-০৬/৪৩১। ২০১৭ সালে তিন নং ফতেপুর ইউনয়নে বিএনপি থেকে চেয়ারম্যান পদে ধানের শীষের মনোয়ন চান আব্দুর রউফ মিয়া। তিনি ধানের শীষের মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন। এর পর বিপুল অর্থের বিনিময়ে আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশ করে ২০২১ সালের ৩১ শে মার্চ ফতেপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশ করেই আওয়ামীলীগের দুর্দিনের ও রাজপথে বিরোধী আন্দোলনের নিরীহ নেতাকর্মীদের অত্যাচার নির্যাতন করে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করে আসছে। আসছে ১৫ জুন ইউপি নির্বাচনে মামলার অন্যতম আসামী ও সুবিধাবাদী আওয়ামীলীগের অনুপ্রবেশকারী আব্দুর রউফকে নৌকার মনোনয়ন দেওয়ায় তৃনমুল আওয়ামীলীগ ও এর সহযোগিহ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। তার মনোনয়নপত্র বাতিল করে ত্যাগী ও গ্রহন যোগ্য আওয়ামীলীগের যে কোন নেতাকে পুনরায় নৌকার প্রতীক দিয়ে মনোনয়ন দেওয়া হলে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তা না হলে এই ইউনিয়নে বিএনপি- জামাত জোট সরকারের সময় মামলার অন্যতম আসামী আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারী চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুর রউফের ভরাডুবি হবে। এলাকাবাসি নৌকার মনোনয়নপত্র বাতিলের জোর দাবী জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে তিন ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের নৌকার মনোনয়নপত্র পাওয়া মো. আব্দুর রউফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিভিন্ন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এলাকার জনগন আমার সঙ্গে রয়েছেন। ১৫ জুন নির্বাচন উপলক্ষে এলাকার চার জন নেতা নৌকার মনোনয়ন চেয়ে ছিলেন। সবার সাক্ষাত শেষে মনোনয়ন বোর্ড ও প্রধান মন্ত্রী আমাকে নৌকার টিকেট দিয়েছেন। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যারা আন্দোলন সংগ্রাম করছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন আওয়ামীলীগের উপজেলা, জেলা এবং কেন্দ্রীয় নেত্রীবৃন্দ।

Discussion about this post