মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা :টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বংশাই নদীর ফতেপুর ইউনিয়নের হাট ফতেপুর বাজার ও হাট ফতেপুর রক্ষায় গাইড বাঁধ হঠাৎ ধসে পরেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিনে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত গাইড বাঁধ ধ্বসে যাওয়ায় হুমকির মুখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট বাজার, রাস্তাঘাট ও ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এলাকায় তীব্র আতংক দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গন ঠেকাতে টাঙ্গাইলের পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ (বালির ব্যাগ) ফেলে ভাঙ্গন প্রতিরোদের জন্য চেষ্টা করছেন।
আজ শুক্রবার (৩ জুন) হাট ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফরিদ হোসেন জানান, বংশাই নদীর সন্নিকটে হাট ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, মসজিদ. হাট ফতেপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদ, স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র, ইউনিয়ন ভুমি অফিস, মির্জাপুর-বাসাইল রাস্তা, ফতেপুর-মহেড়া-মির্জাপুর রাস্তাসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান এবং হাট ফতেপুর হাট ও বাজার রয়েছে। প্রমত্তা ও করালগ্রাসী বংশাই নদীর ভাঙ্গনে বিদ্যালয়ের দক্ষিন পাশ ভেঙ্গে পরেছে। এখন পুরো এলাকা হুমিকর মুখে। এলাকাবাসির দাবীর প্রেক্ষিতে ২০১৩-২০১৪ অর্থ বছরে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে গাইড বাঁধ নির্মান হলেও প্রতি বছর ভাঙ্গন অব্যাহত থাকায় বাজার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখন চরম দুমকির মুখে। ৮শতাদিক শিক্ষার্থী নিয়ে তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
ফতেপুর ইউনয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রউফ বলেন, বংশাই নদীর বাঙ্গনের ফলে ফতেপুর, থলপাড়া, বৈল্যানপুর, হিলড়া আদাবাড়ি বাজার, গোড়াইল, গাড়াইল, পুষ্টকামুরী পুর্বপাড়া, বাওয়ার কুমারজানি, ত্রিমোহন, বান্দরমারা, যুগিরকোপা, রশিদ দেওহাটা চাকলেশ্বরসহ ১০-১২ টি গ্রাম বিলিন হওয়ার পথে। ইতিমধ্যে কুরনি-ফতেপুর-বাসাইল রাস্তা ভেঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তারা টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করেছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড গতকাল বৃহস্পতিবার (২ জুন) থলপাড়া মাদ্রাসা এবং ফতেপুর বাজার এলাকায় ৩৩ হাজার জিও ব্যাগ (বালির বস্তা) ফেলে ভাঙ্গন ঠেকানোর জন্য কাজ করেছেন।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড টাঙ্গাইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, মির্জাপুর উপজেলার হাট ফতেপুর বাজার ও স্কুল রক্ষার জন্য বংশাই নদীর পাড়ের গাইড বাঁধে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে বলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. ফরিদ হোসেন জানিয়েছেন। এছাড়া এই ইউনয়নে ১০-১২ টি গ্রাম ও আর পাশেও নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গন প্রতিরোধের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। বরাদ্ধ আরও বাড়ানোর জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জাননো হয়েছে। বরাদ্ধ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ফতেপুর ইউনিয়ন, মির্জাপুর পৌরসভা, লৌহজং ও বংশাই নদীতে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। বিষয়টি মাননয়ি জাতীয় সংসদ সদস্য এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যে কিছু এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে। প্রয়োজনীয় বরাদ্ধ পেলে ক্ষতিগ্রস্থ্যদের মধ্যে সহায়তা করা হবে।
এ ব্যাপারে ভূমি মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্তায়ী কমিটির সদস্য খান আহমেদ শুভ এমপি বলেন, বংশাই ও লৌহজং নদীর বিভিন্ন এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। এলাকা পরিদর্শন করে উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আরোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্তা নেওয়া হবে।
দৈনিক দেশতথ্য//এল//

Discussion about this post