এম.এস ইসলাম, ঝিনাইদহ ।। ডাক্তারী সার্টিফিকেটের জন্য এখন আর পড়ালেখার প্রয়োজন নেই। টাকা দিলেই কোনো ঝামেলা ছাড়া অনায়াশেই পাওয়া যাচ্ছে সার্টিফিকেট।
কালীগঞ্জ শহরের ফয়লা (কোলা রোডের) পশ্চিম পাশে জাল সার্টিফিকেট তৈরির সিন্ডিকেট চক্রের দৌরাত্ম্য এখন চরমে। প্রতিদিনই চলছে এ অবৈধ কর্মকাণ্ড।
এ চক্র ডাক্তারীসহ পঁচিশ পদের সার্টিফিকেটর পাশাপাশি বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে প্রশিক্ষণের নামে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
খুবই গোপনে বিভিন্ন কৌশল আর প্রযুক্তি ব্যবহার করে কালীগঞ্জের লাইফ সাইন্স মেডিকেল টেকনোলজি ট্রেনিং ইনিস্টিউট সোসাইটি পরিচালিত একটি আধুনিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নামের অবৈধ প্রতিষ্ঠানটি দিনের পর দিন এ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
এ প্রতিষ্ঠানের মালিক হোমিওপ্যাথি ডাঃ বিশ্বাস রাজীব কিশোর ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ফয়লাতে কোলা রোড এর পশ্চিম পাশে তার তিন তলা ভবনে দীর্ঘদিন ধরে এই সার্টিফিকেটের রমরমা ব্যবসা করে আসছে।
মাঝে মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান পরিচালনা করে দুই একজনকে আটক করলেও মূল হোতারা সব সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।
এবিষয়ে কর্মরত সাংবাদিকেরা “লাইফ সাইন্স মেডিকেল টেকনোলজি ট্রেনিং ইনিস্টিউটে” মঙ্গলবার দুপুরে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে ঐ প্রতিষ্ঠানের মালিক ডাঃ বিশ্বাস রাজীব কিশোর তার কোন বৈধ কাগজ-পত্র দেখাতে পারিনি এবং সাথে সাথে তার প্রতিষ্ঠানের নিচ তলার একটি রুম ও দ্বিতীয় তলায় ওঠার সিঁড়ির গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। সাংবাদিকদের কোন ছবি তুলতেও নিষেধ করেন।
এব্যপারে তিনি ক্যামেরার সামনে কোন কথা বলতেও নারাজ। তিনি আরও বলেন, ”ছবি ও ভিডিও করে কোন লাভ হবে না তার কারণ আমার প্রতিষ্ঠান ও আমার নামে অনেক নিউজ হয়েছে কেউ কিছু করতে পারিনি আর পারবেও না।”
কিছু করতে পারবে না এবিষয়ে জানতে চাইলে হোমিওপ্যাথি ডাঃ বিশ্বাস রাজীব কিশোর বলেন, আমার পরিচয়টা দিতে চাচ্ছি না আমি সবাইকে ম্যনেজ করে চলি আর ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিসেও অনেক বার গিয়েছি। দরকার হলে আবারও যাবো কোন সমস্যা নেই। এই প্রতিষ্ঠানে কোন কোন ডাক্তার দ্বারা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় জানতে চাইলে ডাঃ বিশ্বাস রাজীব কিশোর কোন ডাক্তারের নাম বলতে পারিননি।
ডাঃ বিশ্বাস রাজীব কিশোর হোমিওপ্যাথ ডি এইচ এম এস (ঢাকা) এই কোর্স করে তার ব্যবস্থাপনাপত্রে ডাঃ লেখার নিয়ম আছে কি না জানাতে চাইলে তিনি বলেন, “আমাদের ডাক্তার লেখা নিয়ম আছে। আমি কোলকাতা থেকে সাত দিনের কোর্স করে এসেছি।”
এদিকে লেখাপড়া না করে এভাবে টাকার বিনিময়ে ভুয়া ডাক্তারের সার্টিফিকেট কেনার নিয়ম অব্যাহত থাকলে বছরের পর বছর পরিশ্রম করে যারা সার্টিফিকেট পায় তাদের মর্যাদা ক্ষুন্ন হবে। একই সঙ্গে এর একটা খারাপ প্রভাব সমাজের ওপর পড়বে বলে মনে করেন অনেকে।
এবিষয়ে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন সুভ্রা রানী দেবনাথ বলেন, ”এই প্রতিষ্ঠানের নাম আজই শুনলাম। আজই খবর নিবো আগামীকাল সেখানে যাবে এবং তথ্য সঠিক হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।”
ডি এম এফ ও ডি এইচ এম এস কোর্স করা ডিপ্লোমা ধারীরা ব্যবস্থাপনাপত্রে ডাক্তার লেখতে পারবে কি না জানাতে চাইলে তিনি বলেন, ”এ ধরনের ডিপ্লোমাধারী ব্যক্তিরা তাদের ব্যবস্থাপাপত্রে ডাক্তার লেখতে পারবে না।”
আর//দৈনিক দেশতথ্য//১৯ আগষ্ট-২০২২

Discussion about this post