যশোরের কেশবপুরে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে পাইকগাছার ষাটোর্ধ সৎমায়ের রহস্যজনক আত্নহত্যার ঘটনা ঘটেছে। থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে মর্গে প্রেরণ করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) সকালে।
পারিবারিক সূত্রে জানাগেছে, খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনির কাশিমনগর গ্রামের মৌলবি শেখ’র স্ত্রী সূর্য বিবি (৬২) শুক্রবার (১৯ আগস্ট) যশোরের কেশবপুর উপজেলার গৌরিঘোনা ইউনিয়নের ভেরচী গ্রামে তার সতীনের মেয়ে ওমর আলী খাঁ’র ছেলে আতিয়ার খাঁর স্ত্রী পলি বেগমের বাড়িতে বেড়াতে যায়। সেখানে সোমবার রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
পরের দিন মঙ্গলবার সকাল আনুমানিক ১০ টার দিকে ঘুম থেকে উঠতে দেরি দেখে ঘরের জানালা দিয়ে তার ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ দেখতে পায়। খবর পেয়ে কেশবপুর থানা পুলিশ সন্ধ্যার আগে ঘটনাস্থলে পৌছে তার মরদেহ উদ্ধার করে। এরপর সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়না তদন্তের জন্য লাশ যশোর মর্গে প্রেরন করেছে।
পারিবারিক সূত্র সূর্য বিবিকে মস্তিষ্ক বিকৃত বলে দাবি করলেও পারিবারিক পৃথক সূত্র দাবি করছে, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্র জানায়, পাইকগাছার কাশিমনগরে স্বামীর গৃহে বিভিন্ন বিষয়ে ঝামেলা চলছিল। একপর্যায়ে স্বামীর সিদ্ধান্তে শুক্রবার তাকে তার সতীনের মেয়ে কেশবপুরের ভেরচিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এরপর সূর্যর স্বামী মৌলবি শেখ সোমবার সেখানে গিয়ে মঙ্গলবার সকালে স্ত্রীকে রেখে নিজ বাড়ীতে ফিরে যায়। এরপর দপুরের দিকে স্ত্রী সূর্য বিবির মৃত্যুর খবরে ফের কেশবপুরে মেয়ের বাড়িতে যায়।
এলাকাবাসীর প্রশ্ন, সোমবার মেয়ের বাড়িতে স্ত্রীকে দেখতে গিয়ে তাকে না নিয়েই কেন ফিরে আসে? আর রাতে সেখানে ঠিক কি ঘটেছিল যে সকালেই স্বামী চলে আসার পর বৃদ্ধা স্ত্রীকে গলায় রশি দিয়ে আত্নহত্যা করতে হলো? তাছাড়া সকালে স্ত্রীকে জীবিত দেখে তিনি বাড়িতে ফিরেছিলেন? নাকি সকালে তার খোঁজ না নিয়ে ঘরে মৃত ঝুলন্ত অবস্থায় স্ত্রীকে রেখে বাড়িতে ফেরেন? এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, সূর্য বিবি কি রাতে আত্মহত্যা করেন নাকি সকালে? আত্নহত্যার সঠিক সময় জানাগেলে খানিকটা নিশ্চিত হওয়া যাবে তিনি আত্নহত্যা করেছেন নাকি তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, খোলা জানালার ঘরে তার লাশ ঘরের আড়ায় রশি দিয়ে ঝুলন্ত থাকলেও তার একটি পা খাটের উপর ভাঁজ করে ও অপর পা একটি চেয়ারের উপর ছিল। এছাড়া চেয়ারের উপর বইসহ ব্যাগ রাখা ছিল। এর কিছুটা দূরে তার বাঁধানো একটি দাঁত পড়ে ছিল। লাশের অবস্থা দেখে বোঝার উপায় নেই যে, তিনি আত্নহত্যা করে থাকতে পারেন।
এলাকাবাসী জানায়, এনিয়ে ঐ বাড়িতে গত প্রায় দেড় বছরের মধ্যে তিনজনের আত্নহত্যার ঘটনা ঘটল।
এব্যাপারে কেশবপুর থানার এসআই মাইনুর জানান, লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরন করা হয়েছে।
এসআই বাশার জানান, ঘটনাটি হত্যা নাকি আত্নহত্যা তা ময়না তদন্ত রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছেনা।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//আগস্ট ২৩,২০২২//

Discussion about this post