মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা: টাঙ্গাইলর মির্জাপুরে সিফাত হোসেন (১৩) নামে সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা ছাত্রকে পায়ুপথে বাতাস ও লাঠি ঢুকিয়ে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
হত্যার পাঁচ ঘন্টা পর পুলিশ রেল লাইনের পাশ থেকে সিফাতের লাশ উদ্ধার করেছে।
সিফাতের পিতার নাম মো. শহিদুর রহমান। গ্রামের বাড়ি মির্জাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের গোড়াইল গ্রামে। সিফাতের নির্মম খুনের পর পুরো এলাকা স্তব্দ হয়ে গেছে। পরিবারে চলছে শোকের মাতম। পৈশাচিক এই খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে তার সহপাঠি, পরিবার এবং এলাকাবাসি।
জানা গেছে, সিফাত মির্জাপুর উপজেলা সদরের আফাজ উদ্দিন সিনিয়র দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র। আজ মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে সিফাতদের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য। ছেলেকে হারিয়ে মা রুনা বেগম এবং বাবা মো. শহিদুর রহমান শোকে পাথর হয়ে গেছে।
সিফাতদের প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন, রুমেছা বেগম ও পারুলসহ একাধিক নারী পুরুষ জানায়, গতকাল সোমবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে ফুসকা খাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে সিফাত ও তার বাল্য বন্ধু নুরুল আমীন মির্জাপুর বাইপাস রেল স্টেশনের পাশে যায়। সন্ধায় নুরুল আমীন বাড়ি ফিরে এলেও সিফাত বাড়ি ফিরেনি। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজির পর রাত এগারটার দিকে রেললাইনের ব্রিজের পাশে সিফাতের লাশ পাওয়া যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
সিফাতের মা রুনা বেগম ও বাবা শহিদুর রহমান অভিযোগ করেন, গত ১০-১২ দিন পুর্বে সিফাত নদীতে গোসল করতে গিয়ে তার বাল্য বন্ধু বখাটে হিরনের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়। এই ঘটনায় বখাটে হিরন ও তার কয়েকজন বন্ধু মিলে সিফাতকে বেদম প্রহার করলে সে অসুস্থ হয়ে পরে। এই ঘটনায় গ্রাম্য শালিসে হিরনকে স্থানীয় মাতাব্বরগন শাসন করে। তাদের ধারনা পুর্ব শত্রুতা ও ঘটনার প্রতিশোধ নিতে ক্ষোভে বখাটে হিরন ও তার সহযোগিরা তার ছেলে সিফাতকে ধরে নিয়ে পায়ু পথে বাতাস ও লাঠি ঢুকিয়ে অমানবিক নির্যাতনের পর নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। তারা সিফাত হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার এবং ফাঁসির দাবী জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আবু সাইদ বলেন, সিফাতের লাশ উদ্ধারের পর ময়না তদন্ত করে তার পরিবারের কাছে দেওয়া হয়েছে। তার বাবা শহিদুর রহমান বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। তদন্ত চলছে। হত্যার রহস্য উৎঘাটনসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম বলেন, মাদ্রাসা ছাত্র সিফাত হত্যার পর তার পিতা বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন। পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। হত্যার রহস্য উৎঘাটনের চেষ্টা চলছে। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা করছেন।
দৈনিক দেশতথ্য//এল//

Discussion about this post