কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পরীক্ষার্থীকর উত্যক্ত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ছাত্রলীগের দুপক্ষের হামলার ঘটনা ঘটেছে
শনিবার দুপরে প্রথম দফায় উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের পূর্বাশা ক্লাব এলাকায় এবং পরে যদুবয়রা ইউনিয়নের জয়বাংলা বাজারে পৃথক হামলার এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় যদুবয়রা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সোহেল রানা (২৮) সহ উভয়পক্ষের অন্তত ৪ জন আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন যদুবয়রা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিল্লাল হোসেন (৩২), ৬ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রনি আহমেদ (২৩) ও চর এতমামপুর গ্রামের মৃত সোনাউল্লাহের ছেলে মো. বাবলু শেখ (৪০)। আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত জয়বাংলা বাজারে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।বর্তমানে বাজার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, রিতা ও শারমিন নামের দুই এসএসসি পরীক্ষার্থী পরীক্ষা শেষে পান্টি কেন্দ্র থেকে যদুবয়রার দিকে আসছিল। পথিমধ্যে বেলা ১ টা ১৫ মিনিটের দিকে পূর্বাশা ক্লাব এলাকায় হেলমেট ও মুখবাধা অবস্থায় ৫ থেকে ৬ জন হাতুড়ি ও লাঠিসোটা হাতে নিয়ে পথরোধ ও উত্যক্ত করে শিক্ষার্থীদের। এ সময় রিতার ভাই রনি আহমেদকে হাতুড়ি পিটা করে রক্তাক্ত ও নীলাফলা জখম করে। খবর পেয়ে শিক্ষার্থীর বাবা ও স্বজনরা যদুবয়রা জয়বাংলা বাজারে অবস্থান নেন। বেলা দেড়টার দিকে জয়বাংলা বাজারে ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষ হয়। এতে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক গুরুতর জখম হন। স্থানীয়রা জানান, এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় দুই আওয়ামীলীগ নেতা যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান ও পরাজিত চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সাবুর মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। দুই গ্রুপের বিরোধের জেরে ইউনিয়নে উত্তাপ বিরাজ করছে। এবিষয়ে আহত ছাত্রলীগ নেতা রনি আহমেদ বলেন, ‘ ছোট বোন রিতাকে পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে নিয়ে বাড়িতে ফিরছিলাম। পথিমধ্যে পূর্বাশা ক্লাব এলাকায় পৌছালে হেলমেট ও মুখবাধা ৫ থেকে ৬ জন পথ অবরোধ করে বোনকে উত্যক্ত করতে থাকে। বাঁধা প্রদান করলে আমাকে হাতুড়িপিটা করে গুরুতর আহত করে। এসময় আমি কয়েকজনকে চিনে ফেলি। তাঁরা হলেন প্রতিপক্ষের বিল্লাল, সোহেল ও বায়োজিদ।’ তিনি আরো বলেন, ‘ আমরা এলাকায় রাজনীতি করি। পরে বুঝলাম প্রতিপক্ষরায় এহামলা চালিয়েছে।’ উত্যক্তের শিকার পরিক্ষার্থী শারমিনের বাবা শাজাহান আলী বলেন, ‘ আমার মেয়ে পরীক্ষা শেষে বাড়ি আসছিল। পথিমধ্যে প্রতিপক্ষের লোকজন ইভটিজিং করেছিল। পরে বাজারে তাঁদের সাথে হাতাহাতি হয়েছে। থানায় মামলা করব।’হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা বিল্লাল হোসেন বলেন,আমাদের চেয়ারম্যানের ওপর হামলার খবর পেয়ে বাটাম হাতে করে বাজারে ছুটে আসি। এসময় প্রতিপক্ষের তুষার, বাসার, আনিস মাষ্টার, রিপন মন্ডল আমাদের উপর হামলা চালায়। কুড়াল দিয়ে মাথায় কোপ মারেছে।’ যদুবয়রা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা বলেন, ‘ প্রতিপক্ষরা চেয়ারম্যানকে ঘিরে ফেলেছে এমন খবরে বাজারে ছুটে যায়। বাজারেরে পৌছানো মাত্রই আনিস মাস্টার পিছন থেকে কোপ মারলে আমি মাটিতে পরে যায়। এবিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা কামরুজ্জামান সাবু বলেন, বিরোধী পক্ষের লোকজন আমাদের দুই ছাত্রীকে ইভটিজিং করেছে। প্রতিবাদ করায় একজনকে হাতুড়িপিটা করেছে। পরে ওরাই আবার জয়বাংলা বাজারে আমাদের লোকজনের উপর হামলা চালিয়েছে।’যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান বলেন, ‘ প্রতিপক্ষের হামলা আমার দুজন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। যদুবয়রা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জের উসকানীতে এহামলা হয়েছে। আমি এলাকার শান্তি রক্ষার্থে হনচার্জের বদলি চাই এবং হামলাবারীদের দৃৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’কুমারখালী থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন,এসএসসি পরীক্ষার্থীদের উত্যক্ত করার ঘটনাকে কে›ন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে দুপক্ষের চারজন আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’

Discussion about this post