মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা :
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে তীব্র লোড শেডিংয়ের কারনে শিল্প, বাণিজ্যিক ও আবাসিক মিটার ও ট্রান্সফরমার চুরির হিড়িক পরেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলার টাঙ্গাইল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর গোড়াই জোনাল অফিস এবং টাঙ্গাইল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ মির্জাপুর জোনাল অফিস এরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় মিটার ও ট্রান্সফরমার চুরির হিড়িক পরেছে। পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিস গোড়াই ও মির্জাপুর জোনাল অফিস এবং পুলিশ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, গ্রাহকদের নিকট থেকে মিটার ও ট্রান্সফরমার চুরির নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার ও মিটার উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সুত্রে জানা গেছে, টাঙ্গাইল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর গোড়াই জোনাল অফিস এবং টাঙ্গাইল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ মির্জাপুর জোনাল অফিস এরিয়ার অধিনে গ্রাহক সংখ্যা রয়েছে প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার। ঘন্টার পর ঘন্টা তীব্র লোড শেডিংয়ে পল্লী বিদ্যুৎ মিটার গ্রাহকদের অতিরিক্ত বিলের কারনে নাভিশ্বাস। তার উপর একের পর এক মিটার চুরির ফলে চরম বিপাকে পরেছছন অসহায় ও ভুক্তভোগির গ্রাহকরা। এ যেন প্রাহকদের উপর মরার উপর খরার ঘা।
ভুক্তভোগি গ্রাহকদের মধ্যে জামুর্কি ইউনিয়নের বানিয়ারা গ্রামের রাইজ মিলের মালিক শাহজালাল, মনির হোসেন, ও পরাগ কাজী অভিযোগ করেন,লোড শেডিংয়ের কারনে তাদের মিলের শিল্প মিটার চুরি হয়। প্রতারক চক্র মিটার নিয়ে চিরকুটে মোবাইলে বিকাশে ১০-১২ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেছে। ঝামেলা এড়াতে জনপ্রতি ১০ হাজার টাকা চক্রের সদস্যদের দিয়ে মিটার ফেরত পেয়েছে।
চুরি হওয়া একটি ট্রান্সফরমার কিনতে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসকে দিতে হচ্ছে ৩০-৮০ হাজার টাকা। একই ভাবে গোড়াই শিল্পাঞ্চলের সোহাগপাড়া এলাকার শওকত হোসেন (৫৬) আসান উদ্দিন (৫৩), করিম মিয়া (৪৫), ওয়াজেদ মিয়া (৫৫)সহ একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, সংঘ বদ্ধ চোরের দল শিল্প মিটার, বাণিজ্যিক মিটার ও ফ্লাট বাড়ির মালিকদের আবাসিক মিটার টার্গেট করে চুরি করে নিয়ে যায়। মিটার চুরির পর চিরকুটে মোবাইল নম্বর লিখে যায়। বাংলা লিংকের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করে বিকাশের মাধ্যমে ৮-১০ হাজার টাকা চাঁদা দিলে মিটার ফেরত পাওয়ার আশ্বাস দেন। পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ঝামেলা এড়াতে ভুক্তভোগি অনেক গ্রাহক মোবাইল নম্বরে সংঘ বদ্ধ প্রতারক চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিকাশে টাকা পাঠিয়ে মিটার ফেরত পাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফরিদ মিয়ার একটি, কানু মিয়ার একটি, নজরুল মিয়ার একটি, জাহাঙ্গীর মিয়ার দুইটি, কাশেম মিয়ার একটিসহ শতাধিক মিটার চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মির্জাপুর পৌরসভা, মহেড়া, জামুর্কি, ফতেপুর, বানাইল, আনাইতারা, ওয়ার্শি, ভাতগ্রাম, ভাওড়া, বহুরিয়া, লতিফপুর, আজগানা, তরফপুর ও বাঁশতৈল ইউনিয়নে প্রতিনিয়তই মিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে ভুক্তভোগি এলাকাবাসি অভিযোগ করেছে। তবে সবচেয়ে বেশী মিটার চুরি হচ্ছে গোড়াই শিল্পাঞ্চলে। সংঘবদ্ধ মিটার চোর চক্রের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জোর দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসি।
টাঙ্গাইল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর গোড়াই জোনাল অফিসের (ডিজিএম) বলেন, একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট চক্র মিটার চুরির সঙ্গে জড়িত বলে তাদের ধারনা। মিটার চুরি হওয়া গ্রাহকদের নিকট থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানা পুলিশ ও টাঙ্গাইল র্যাব-১২ কে জানানো হয়েছে। অপরাধীদের ধরতে তারা কাজ করছেন।
টাঙ্গাইল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর মির্জাপুর জোনাল অফিসের (ডিজিএম) জাকির হোসেন বলেন, গ্রাহকের নিকট থেকে মিটার চুরির বিভিন্ন সময় অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি তারা থানা পুলিশ ও টাঙ্গাইল র্যাব-১২ কে জানিয়েছেন। ই
মির্জাপুর থানার ওসি (তদন্ত) মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ এবং গ্রাহকদের নিকট থেকে এর আগে মিটার চুরির বিষয়ে অভিযোগ এবং কিছু মোবাইল নম্বর ইতিপুর্বে পাওয়া গেছে
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//

Discussion about this post