কুষ্টিয়ার কুমারখালীত মোটরসাইকেলের ধাক্কায় সামিয়া আফরিন সোহাগী (৭) নামের একজন ছাত্রী নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় চালকসহ আরো একজন ছাত্রী গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সোমবার দুপুরের দিকে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের ৩২ নং চড়াইকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সামনে এদুর্ঘটনা ঘটে। এঘটনায় মোটরসাইকেলটিকে জব্দ ও চালককে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত ছাত্রী ওই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী ও উপজেলার নন্দনালপুর ইউনিয়নের চড়াইকোল হওতাপাড়ার দিনমজুর মো. সোহান শেখের মেয়ে। আহত হালিমা আক্তার মুন্নি (৭) একই এলাকার মো. হালিম আলীর ছেলে ও একই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। আর মোটরসাইকেল চালক কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কাঞ্চনপুর রাতুলপাড়ার মো. হেকমত আলীর ছেলে মো. নাইমুল হোসেন নয়ন। তিনি একজন কসমেটিক্স ব্যবসায়ী।
দুর্ঘটনার পর বিদ্যালয় এলাকায় সড়কে স্প্রিডব্রেকার এবং ঘাতক চালককের বিচারের দাবিতে ওই বিদ্যালয়ের কয়েকশত শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে প্রায় ৩০ মিনিট সড়কের যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে কুমারখালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে অবরোধকারীদের দাবি মেনে নেন এবং যানচলাচল স্বাভাবিক করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় এলঅকাবাসী জানান, বিদ্যালয়ের সামনের কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী সড়কটি ২৪ ঘণ্টা ব্যস্ত থাকে। সড়কে বিদ্যালয় এলাকায় কোন স্প্রিডব্রেকারে বা গতিরোধক নেই। প্রতিদিনই শিক্ষক ও স্থানীয়রা শিক্ষার্থীদের সড়ক পারাপার করে দেন। সোমবার দুপুরে বিদ্যালয়ের সকাল শিফট ছুটির পর সহকারী শিক্ষক মুক্তা রাণী শিকদার ও স্থানীয় মিঠুন আলী শিক্ষার্থীদের সড়ক পারাপার করছিলেন। এ সময় অতিরিক্ত গতি নিয়ে কুষ্টিয়া থেকে একটি এ্যাপাসি ফোর ভি মডেলের মোটরসাইকেলটি কুমারখালীর দিকে যাওয়ার সময় গাড়ির চালক গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে শিক্ষার্থীদের ধাক্কা দিলে দুর্ঘটনাটি ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই সামিয়া আক্তার সোহাগী নিহত হয়। এঘটনায় আরেক ছাত্রী হালিমা আক্তার মুন্নি ও চালক নাইমুল হোসেন নয়ন গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
এবিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মুক্তা রাণী শিকদার বলেন, বিদ্যালয় ছুটির পর তিনি শিক্ষার্থীদের সড়ক পারাপারে সহযোগীতা করছিলেন। হঠাৎ দ্রুত গতি সম্পন্ন একটি মোটরসাইকেল দুইজন বাচ্চাকে সজোরে ধাক্কায় দেয়। এতে ঘটনাস্থলই সোহাগী মারা যায়। মুন্নি নামের আরেকজন ছাত্রী গুরুতর আহত হয়েছে। তিনি বিদ্যালয় এলাকায় স্প্রিডব্রেকার নির্মাণ ও চালকের শাস্তির দাবি জানান।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোহসীন হোসাইন বলেন, মোটরসাইকেলেরর ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই একজন ছাত্রী নিহত হয়েছে। এঘটনায় চালকসহ আরো একজন ছাত্রী আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। বিদ্যালয় এলাকায় স্প্রিডব্রেকারে নেই এবং মোটরসাইকেলের অতিরিক্ত গতি থাকার কারণে এদুর্ঘটনাটি ঘটেছে। দুর্ঘটনার পর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে প্রায় ৩০ মিনিট যানচলাচল বন্ধ করে দিয়েছিলেন। পরে তাঁদের দাবি মেনে নিয়ে যানচলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, মোটরসাইকেলটি জব্দ ও চালককে আটক করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খালিদ সাইফুল,দৈনিক দেশতথ্য,৩০ জানুয়ারি ২০২৩

Discussion about this post