সিলিন্ডার গ্যাসের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ায় বাড়ছে মাটির চুলার কদর। এ অঞ্চলের গ্রামের মানুষ ফিরছেন মাটির চুলায়। টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে খুচরা গ্যাস বিক্রেতাদের গ্যাস-সিলিন্ডার বিক্রিও অস্বাভাবিকহারে কমে গেছে।
শহর অ লের গ্যাস বিক্রেতাদের তিন শতাধিক দোকান বন্ধ হওয়ার উপক্রম। তাই খুচরা বিক্রেতাদের দাবি, ১১০০-১২০০ টাকার মধ্যে গ্যাস সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করা হোক।
স্থানীয়রা জানায়, কয়েক দিনের মধ্যে গ্যাসের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ায় ঘাটাইল পৌর শহর এবং হামিদপুর বাজারের প্রায় তিন শতাধিক দোকান ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়েছে। সপ্তাহখানেক আগে গ্যাস ভর্তি সিলিন্ডারের দাম ছিল এক হাজার ৩৫০ টাকা থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা। এখন তা বেড়ে এক হাজার ৬০০ টাকা থেকে এক হাজার ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিনে গতকাল শুক্রবার বিকেলে উপজেলার রতন বরিষ গ্রামের গৃহবধূ আকেবা বেগম (৪৩) বলেন, ‘আগে দাম কম ছিল, তাই গ্যাসে রান্না করতাম। এখন দাম এক হাজার ৪৯৮ টাকা করা হলেও খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৬০০ টাকা থেকে এক হাজার ৬৫০ টাকায়। এই দামে গ্যাস কেনার সাধ্য আমাদের নেই। এ কারণে মাটির চুলায় রান্না শুরু করেছি। সরকার গরিবের কষ্ট বুঝল না।’
একই এলাকার ইটভাটা শ্রমিক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের পক্ষে এক হাজার ৬০০ টাকা দিয়ে গ্যাস কেনা অসম্ভব। এত দামে গ্যাস কিনে সংসার চালাব কী করে? শ্রমিকের মজুরি বাড়ছে না, অথচ সব জিনিসের দামই বেড়েছে। এ যেন মরণ দশা।’
এক চাকরিজীবীর স্ত্রী মিনা বেগম বলেন, ‘বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। কিন্তু সে তুলনায় বেতন বাড়েনি। তাই গ্যাসের চুলার বদলে মাটির চুলায় রান্নাবান্না করছি।’
ঘাটাইলের দেউলাবাড়ীর খুচরা গ্যাস বিক্রেতা খন্দকার হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আগে প্রতিদিন চার-পাঁচটা গ্যাসভর্তি সিলিন্ডার বিক্রি হতো। এখন সপ্তাহে দু-একটা বিক্রি হচ্ছে। তাই মনে করছি, গ্যাসের ব্যবসা বন্ধ করে দেব।’
ঘাটাইল শহরে মনি এন্টারপ্রাইজের মালিক মোতালেব হোসেন বলেন, ‘সপ্তাহখানেক আগেও প্রতিদিন ১৫-১৬টি গ্যাসভর্তি সিলিন্ডার বিক্রি করেছি। এখন বিক্রি হচ্ছে দুই-তিনটা। সপ্তাহখানেক আগে প্রতিটি সিলিন্ডার এক হাজার ৩৫০ টাকা থেকে এক হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি করেছি। এখন এক হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। কিন্তু এই দামে মানুষ কিনতে চাইছে না। তা ছাড়া শুনেছি, আগে যাঁরা গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহার করতেন, তাঁদের অনেকেই এখন মাটির চুলায় রান্নাবান্না করছেন। ফলে আমাদের গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির ব্যবসা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//ফেব্রুয়ারী ১০,২০২৩//

Discussion about this post