মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা:
দীর্ঘ দিন ধরে জটিল রোগে আক্রান্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. লাল মিয়া (৭১) অর্থের অভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না। ইতিমধ্যে তার একটি পা কেটে ফেলতে হয়েছে।
হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা লাল মিয়া। তার চিকিৎসার জন্য পরিবারটি এখন অসহায় হয়ে পরেছে।
অপর দিকে স্থানীয় একটি চক্র বীর মুক্তিযোদ্ধা লাল মিয়ার অসুস্থ্যতার সুযোগ নিয়ে তার বাড়ির যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবারটি। ফলে পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের পুষ্টকামুরী গ্রামের মৃত দবির উদ্দিনের পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা লাল মিয়ার বাড়ি।
আজ শনিবার (২৫ মার্চ) কুমুদিনী হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, পা কেটে ফেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা লাল মিয়া হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সহভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা লাল মিয়ার কন্যা এমেলি বেগম জানায়, তার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয় কর্তৃক জারিকৃত মুক্তিযোদ্ধা নম্বর-১৯৩০০০১৫৫৩। মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতীয় তালিকায় (সেক্টর) নম্বর- ৫১৬০, লাল মুক্তিবার্তা নম্বর-০১১৮০৫০০৩৪ এবং বেসামরিক গেজেট নম্বর-২৯৪৩। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে শারীরিক নানা সমস্যসহ জটিল রোগে আক্রান্ত। বিছানা থেকে উঠতে ও বসতেও পারেন না। বেসরকারী বিভিন্ন ক্লিনিক, কুমুদিনী হাসপাতাল ও রাজধানী ঢাকার বারডেম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। চিকিৎসকদের পরামর্শে তার ডান পা কেটে ফেলতে হয়েছে। এখন বাম পায়েও পচন ধরেছে। মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে এখনও চিকিৎসাধীন। তাকে চিকিৎসা করাতে ইতিমধ্যে নিঃস্ব হয়ে পরেছে পুরো পরিবার।
এদিকে তার পরিবার আরও অভিযোগ করেছে, স্থানীয় একটি চক্র অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে বাড়িতে যাতায়াতের জন্য একটি রাস্তা বন্ধ করার চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃস্টি করেছে। বিষয়টি তারা পৌরসভার মেয়রসহ বিভিন্ন দপ্তরকে জানিয়েছেন। ন্যায় বিচারের জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবী জানিয়েছে।
এদিকে চিকিৎসকগন জানিয়েছেন তাকে বাঁচাতে হলে দেশের বাহিরে (বিদেশে) নিয়ে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। সে জন্য ৪০-৫০ লাখ টাকার দরকার। বিপুল পরিমান অর্থ যোগাড় করা অসহায় এই পরিবারের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন। প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বাস্থ্য ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়সহ দেশবাসির নিকট আর্থিক ভাবে সাহায্যের জন্য আকুল আবেদন জানিয়েছেন তার এক পুত্র ও এক কন্যা। তাকে সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা মো. লাল মিয়া, সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর-৬০১৭০২৬০০০৭৬৭, সোনালী ব্যাংক, মির্জাপুর শাখা, টাঙ্গাইল। মোবাইল নগদ বিকাশ নম্বর ০১৭৩৮-৬২৬৩২৩।
এ ব্যাপারে সাবেক পৌরসভার সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শহিদুর রহমান সহিদ মনি, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সরকার হিতেশ চন্দ্র পুলক, মো. লাল মিয়া একজন প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি সরকারী ভাবে ভাতাও পাচ্ছেন। দীর্ঘ দিন ধরে তিনি খুসবই অসুস্থ। এই ভাতার টাকায় তার চিকিৎসা ও পরিবারের ব্যয়ভার নির্বাহ করা খুবই কষ্টকর। তাকে সার্বিক ও অর্থনৈতিক ভাবে সহযোগিতা করার জন্য তারা সরকারের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।

Discussion about this post