যৌবন হারিয়েছে এক সময়ের খরস্রোতা হিসনা নদী। আর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে হিসনা নদী মতোই হারিয়ে যাচ্ছে ছোট ছোট নদী। প্রয়োজনীয় সংস্কার না করায় তলদেশ ও দুই পাড় ভরাট হয়ে গভীরতা কমে নদী মরা খালে পরিণত হচ্ছে। ফলে নদীবক্ষে চলছে ধানসহ বিভিন্ন চাষাবাদ। এদিকে প্রভাবশালীদের হাতে চলছে নদী দখলের মহোৎসব। অনেকেই নদীর ভিতর গড়ে তুলেছেন দোকান ও ঘরবাড়ি। এতে এলাকায় সংকট দেখা দিচ্ছে দেশি জাতের মাছের। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা শহরের উত্তর রেলগেট এলকায় অবস্থিত হিসনা নদীর ব্রীজের নিচে চলছে ধান কাটা। পানি না থাকায় হিসনা নদীতে এলাকার কৃষকরা ধান রোপন করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নদ-নদী এরই মধ্যে অনেকটা বিলীন হয়ে গেছে। ভেড়ামারা শহরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে হিসনা নদী। এ নদীর জায়গা দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে বড় বড় ভবন। নদীর জায়গা মাটি দিয়ে ভরাট করে পাকা বাড়ি নির্মাণ ও গাছের বাগান করা হয়েছে। একইভাবে কয়েকজন প্রভাবশালী নদীর জায়গা দখল করে বাড়ি ও দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন। হিসনা নদীতে ইরি ধানের আবাদ শেষে চলছে ধান কাটা। অনেক কৃষক ভুয়া লিজের নামে নদী দখল করে ঘরবাড়ি তৈরি ও চাষ করে নদী হত্যার সব আয়োজন সম্পন্ন করেছেন। এসব দেখার যেন কেউ নেই। কালের বিবর্তনে এখন এ নদী মরা খালে পরিণত হয়েছে। নদীর জায়গা দখল করে মার্কেট ও বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। নদীবক্ষে চলছে ধান চাষ। নদীর জায়গা এলাকার প্রভাবশালীরা ৯৯ বছরের লিজের কথা বলে দখল করে পুকুর করেছেন। সেখানে চাষাবাদও করা হচ্ছে।
এ নদীর দুই ধারের জায়গা দখল করে বাড়ি, মার্কেট ও বিভিন্ন স্থানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। খননের অভাবে জেগে ওঠা চরে চরানো হচ্ছে গবাদিপশু। শুকিয়ে যাওয়ার কারণে চলছে দখলবাজি। মানুষের চাহিদা অনুযায়ী যে যার মতো নদী ব্যবহার করছেন। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নদ-নদী দখলমুক্ত করতে ইতিমধ্যে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন। এ ক্ষেত্রে সরকার বা জেলা প্রশাসনের কোনো তদারকিই নেই বলে এসব সংগঠনের অভিযোগ।
কৃষক আ: সাত্তার জানান, পানি না থাকায় হিসনা নদীতে ধান আবাদ করি। ধান গুলো পাকার কারণে কাটা শুরু হয়েছে। এবার হিসনা নদীতে ধানের ফলন ভালো হয়েছে।
হাসান আলী জানান, হিসনা নদীর জায়গা দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে বড় বড় ভবন। মাটি দিয়ে ভরাট করে পাকা বাড়ি নির্মাণ ও গাছের বাগান করা হয়েছে। একইভাবে কয়েকজন প্রভাবশালী নদীর জায়গা দখল করে বাড়ি ও দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন।
ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসিনা মমতাজ বলেন, হিসনা নদী দখল ও খননের বিষয়টি ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মাধ্যমে নদী রক্ষা কমিশনকে জানানো হয়েছে। আশাকরি দ্রুতই কাজ শুরু হবে।
খালিদ সাইফুল, দৈনিক দেশতথ্য, ৭ মে ২০২৩

Discussion about this post