কুষ্টিয়া সদর থানার আলামপুর ইউনিয়নের অবহেলিত একটি গ্রাম চাপাইগাছি যা চাপাইগাছি বিল নামে সকলের নিকট অতি পরিচিত। এই গ্রামে এক কিলোমিটার একটি সড়কের জন্য গ্রামবাসীকে আট কিলোমিটার সড়ক ঘুরে যাতায়াত করতে হয়।
আলামপুর ইউনিয়নের আনাচে কানাচে পাকা সড়ক করা হলেও অত্যন্ত জনবহল স্থানে আজ পযর্ন্ত সড়ক নির্মানে কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে। অথচ এই সড়কটি করা হলে নাজিরপুর, সওরাতলা, নান্দিয়া, হারুরি, দিঘি, গোস্বামীদুগাপুর মিলে চাপাইগাছি একত্রে জনসাধারণ চলাচলের সুযোগ পেতো। কাচা সড়ক পাকা হবে এ আশায় এলাকাবাসী অনেক বছর ধরে অপেক্ষায় আছেন। কিন্তু কাচা সড়ক আর পাকা হয় না। জনপ্রতিনিধিরা বারবার শুধু প্রতিশ্রুতিই দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু আজোবধি ওই সড়কটিতে কোন কাজ হয়নি।
চাপাইগাছির লিটু মন্ডলের বাড়ী থেকে বিলপাড়া ও আলামপুর আবাসন হয়ে চলে গেছে ১ কিলোমিটার সড়কটি এবং সাথেই রয়েছে একটি শ্বশান ঘাট। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত লোককে কাদা ডেঙে যাতায়াত করতে হয়। বর্ষায় সড়কটি কর্দমাক্ত হয়ে যায়। ফলে কোনো ভ্যান, সাইকেল, মোটরসাইকেল তো দূরের কথা, মানুষ পায়ে হেঁটে চলতেও কষ্টের শিকার হন।
সরেজমিনে দেখা যায়, দীর্ঘদিনেও সংস্কার না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই কাদা পানিতে একাকার। সড়কের মাঝখানে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় গর্তের। আর তাতে প্রতিনিয়ত জমছে পানি। চলাচল করতে পারছে না যানবাহন। পায়ে হেটে চলাচল করাও এখন কষ্টসাধ্য। সড়কটি পাকা হলে একদিকে যেমন বিভিন্ন গ্রামের ছাত্র-ছাত্রী ও লোকজনের যাতায়াতে ভোগান্তি কমবে, অন্যদিকে মুমূর্ষু রোগী বহনে বেগ পেতে হবে না। শ্রমজীবী মানুষেরা ভ্যান, অটোরিকশা চালিয়ে সহজে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন। এলাকার কৃষকরা ধান, পাট, কাঁচা ফসল কম খরচে বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে পারবেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, একের পর এক চেয়ারম্যান-মেম্বার পরিবর্তন হলেও তাদের সড়কের উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি। এই গ্রামের শিক্ষার্থীরা কাচা সড়কটি ব্যবহার করে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে পড়াশোনা করতে দুই কিলোমিটার দূরের চাপাইগাছি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুই কিলোমিটার দুরে আলামপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও তিন কিলোমিটার দুরে অবস্থিত আলামপুর বালিয়াপাড়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে। তাছাড়াও কুষ্টিয়া জেলা এবং বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম বৃহত্তম পশুহাট বালিয়াপাড়া পশুহাটে পশু বহনকারী যানবাহন নিয়ে যেতেও অনেক সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছে উক্ত অঞ্চলের এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীরা।
এ বিষয়ে চাপাইগাছি ইউপি সদস্য মোঃ আশরাফুল ইসলাম জানান, তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর ইউনিয়নের বাজেট থেকে রাস্তায় সাময়িক চলাচলের কিছুটা ব্যবস্থা করা হয়েছে।তবে চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে খুব দ্রুত রাস্তাটি সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ইমানুর রহমান বলেন সড়কটি খুবই জরুরী কিন্তু পাকা না করার কারণে জন সাধারণকে অনেক কষ্ট করে অনেক পথ ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে। তিনি আরোও বলেন আলামপুর ইউনিয়নের সব জায়গার রাস্তা পাকা হয়ে গেছে তাই বতর্মানে এই রাস্তাটি অতীব জরুরী ভাবে পাকা করা প্রয়োজন।
খালিদ সাইফুল, দৈনিক দেশতথ্য, ১৭ মে ২০২৩

Discussion about this post