মো:ফয়সাল আলম, রাজশাহী প্রতিনিধি:রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ২১ জুন। গত ২ জুন প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার প্রথম দিন থেকেই জোরেশোরে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন প্রার্থীরা।
প্রচার-প্রচারণা এখন তুঙ্গে। প্রার্থীদের গণসংযোগে সরগরম হয়ে উঠেছে নগরী। তীব্র রোদ ও গরম উপেক্ষা করেই মিছিল, মিটিং, মাইকিং আর বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারপত্র বিলির কাজ চলছে। রাজশাহী যেন এখন পরিণত হয়েছে ভোটের নগরীতে।
রাজশাহীর ৩০টি ওয়ার্ডে মেয়র,সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা চলছে। কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে চলছে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ।
বেলা ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলছে মাইকিং। নগরীর রাস্তাঘাট, অলিগলি ছেয়ে গেছে পোস্টার, ব্যানারে। বিকেল হতেই প্রচার-প্রচারণা জমজমাট হয়ে ওঠে। উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রার্থীরা ভোটারের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা চলবে আগামী ১৯ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হতে চার দলের চারজন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। যাচাই বাছাই শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন চারজনের মনোনয়নপত্রই বৈধ ঘোষণা করেন। তবে বাতিল করেন সাতজন কাউন্সিলর প্রার্থীর মনোনয়নপত্র। চারজন বৈধ মেয়র প্রার্থী হলেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী সদ্য সাবেক সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, জাতীয় পার্টির সাইফুল ইসলাম, জাকের পার্টির লতিফ আনোয়ার ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. মুরশিদ আলম। এছাড়া ১০টি সংরক্ষিত নারী আসনের ৪৬ প্রার্থীর সবার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। তবে সাধারণ ওয়ার্ডের সাতজন কাউন্সিলর প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। বরিশাল সিটি নির্বাচনে দলের মেয়র প্রার্থীর ওপর হামলার প্রেক্ষাপটে ইসলামী আন্দোলন সিলেট ও রাজশাহীর নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়ায় রাজশাহীতে এখন মেয়র প্রার্থী তিন জন।
এদিকে নগরীর অন্তত ১৩টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীদের সমর্থকদের মাঝে উত্তেজনা, মারপিট, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে,রাসিক নির্বাচন এবার অনেকটাই উত্তাপহীন। মেয়র পদে আওয়ামীলীগের প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের প্রতিদ্বন্দী তেমন কোন প্রার্থী না থাকায় এ নির্বাচন ঘিরে অনেকটা ঢিলেঢালা পরিবেশ বিরাজ করছে। ফলে অন্য মেয়র প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যেও তেমন কোন উত্তেজনা নেই। তবে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীরা প্রচারে যেমন বেশ সরব,তেমনি কর্মী সমর্থকদের মাঝে উত্তেজনা, হামলা,পাল্টা হামলাও চলছে। কয়েকটি নির্বাচনী অফিস ভাংচুর এমনকি খোদ কাউন্সিলর প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে।
রাজশাহী সিটির ২০ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি ২৯টি ওয়ার্ডে এবার সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ১১২জন যাঁদের মধ্যে ২৯ জন রয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলরও। তাঁরাও এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর মূলত তাঁদেরকে ঘিরেই ওয়ার্ডগুলোতে উত্তেজনার পারদ বাড়ছে। বিশেষ করে নগরীর ৩,৭,৮,১৩,১৪,১৭,১৮,১৯,২১,২২,২৩,২৫,২৬ নম্বর ওয়ার্ডে পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হচ্ছে।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২১ জুন ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মোট ১৫২টি কেন্দ্রের এক হাজার ১৭৩টি কক্ষে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে।
লাখ ৮০ হাজার ৯৭১। নতুন ে রাসিক নির্বাচনে এবার ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৫২ হাজার ১৫৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৭১ হাজার ১৮৫ এবং নারী ভোটার এক ভোটার সংখ্যা ৩০ হাজার ১৫৭।
দৈনিক দেশতথ্য// এইচ//

Discussion about this post