সিলেট অফিস :
সিলেটে টানা বৃষ্টির ফলে গোটা নগরীতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী।
রোববার (২ জুলাই) সকাল থেকে সিলেটে মুষলধারার বৃষ্টিতে নগরের প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলি তলিয়ে গেছে পানিতে। ঈদ ও সরকারি ছুটি থাকায় নগরে বাইরের মানুষের চলাচল কম ছিল। এরপরও জরুরি প্রয়োজনে যারা বাইরে বের হয়েছিলেন; তারা ভিজে একাকার হয়েছেন। হাঁটুসমান জলাবদ্ধ সড়কে চলাচলে রীতিমতো নাকাল হতে হয়েছে সেসব নগরবাসীকে। এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগামী তিন দিন বৃষ্টিপাতের প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রোববারের মুষলধারার বর্ষণে সিলেট নগরের প্রায় সব এলাকার সড়কে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এদিকে গত দুদিন এ মৌসুমের সবচেয়ে ভারী বর্ষণ হয়েছে সিলেটে। এছাড়া শুধু রোববারের এই বৃষ্টিতে সিলেট নগরের প্রধান সড়ক জিন্দাবাজার-চৌহাট্টা এলাকার সড়ক থেকে শুরু করে মদিনা মার্কেট, আখালিয়া, সুবিদবাজার, জালালাবাদ, হযরত শাহজালাল (র.) মাজার এলাকার পায়রা ও রাজারগল্লি, বারুতখানা, হাওয়াপাড়া, দাড়িয়াপাড়া, যতরপুর, ছড়ারপাড়, তালতলাসহ বেশ কিছু নিচু এলাকার জলাবদ্ধতা দেখা গেছে।
শুধু এসব এলাকা নয়, নগরের প্রায় সব এলাকার চিত্রই ছিল একইরকম; জলাবদ্ধ-কর্দমাক্ত সড়কে নগরবাসীর ভোগান্তির চূড়ান্ত অবস্থা ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে বৃষ্টিপাতের গড় ছিল প্রায় ১১১ মিলিমিটার।
টানা বৃষ্টিতে নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ ও এলাকাবাসী দোষারোপ করছেন নগর কর্তৃপক্ষকে। তারা এই জলাবদ্ধতার জন্য সিটি করপোরেশনের উদাসীনতাকে দায়ী বলে মনে করছেন।
অনেকে বলছেন, ড্রেনেজ সিস্টেম যদি সঠিক সময় সংস্কার করে রাখা হতো, তাহলে এই ভোগান্তি জনগণকে পোহাতে হতো না। বার বার এই ভোগান্তির পর সিসিকের টনক না নড়ায় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
নগরের পানি নিষ্কাশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধিরা বলছেন, গত কয়েকদিন যাবত এ মৌসুমের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে সিলেটে। আজ তা মাত্রা ছাড়িয়েছে। এ কারণে সড়কগুলোয় পানি জমেছে।
জানতে চাইলে সিএনজি অটোরিকশার চালক সাগর বলেন, বৃষ্টি শুরুর কিছুক্ষণ পরেই চৌহাট্টা সড়কে পানি জমে যায়। এর মধ্যে গাড়িতে যাত্রী নিয়ে আসার সময় ইঞ্জিন হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। পরে যাত্রী নামিয়ে কিছুদূর গাড়ি ঠেলে নিয়ে আসতে হয়েছে। পরে গাড়ি স্টার্ট নিয়েছে। নগরের অনেক স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা গেছে।
এদিকে বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা ও যানজট পরিস্থিতি তুলে ধরে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে তাদের ক্ষোভের কথা তুলে ধরেছেন। সিলেটের জলাবদ্ধতার এ করুণ দশায় অনেকে হতাশ হয়ে, আবার কেউ কেউ রসিকতাও করছেন।
এ ব্যাপারে জানতে সিলেট সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলী আকবরের মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেট কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসেন জানান, গতকাল শনিবার রাতে ও আজ রোববার সকালে সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি হয়েছে। শনিবার সকাল ৬ থেকে রোববার সকাল ৬ পর্যন্ত সিলেটে ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টিপাত আরও বাড়তে পারে। আজ সারাদিন ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানায় আবহাওয়া অফিস। এদিকে আগামীকাল সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানিয়েছে সিলেট আবহাওয়া অফিস।
দৈনিক দেশতথ্য// এইচ//

Discussion about this post