পরকীয়া সংক্রান্ত কারণেই স্বামীর হাতে খুন হতে হয়েছে মিরপুরের কৃষ্ণপুর গ্রামের রাজিয়া খাতুন সুমি’র। লাশ উদ্ধারের ১৮ ঘণ্টার মধ্যেই রহস্য উদঘাটন করল পুলিশ।
শুক্রবার (২৫ আগষ্ট) কুষ্টিয়ার মিরপুরে পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় রাজিয়া খাতুন সুমি (২৭) নামের এক গৃহবধূর বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। উক্ত ঘটনায় পরপরই নিহতের স্বামী রকিবুল ইসলামের ভাষ্যমতে পুলিশ পরকীয়া প্রেমিক নজরুল ইসলাম (৩৭) কে আটক করে।
এরপর ওইদিন রাত ১২টায় আটক করে নিহতের স্বামী রকিবুল ইসলাম (৩৫) কে। পরবর্তীতে মিরপুর থানার ওসি মোঃ রফিকুল ইসলাম ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলামের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা উক্ত ঘটনার সাথে কিভাবে সম্পৃক্ত তা পৃথকভাবে স্বীকার করে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম রাজিয়া খাতুন সুমি’র সাথে আসামী নজরুল ইসলামের মধ্যে দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। পরবর্তীতে উক্ত সম্পর্ক শারীরিক সম্পর্কে রূপ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন অর্থাৎ ২৪ আগষ্ট রাত অনুমান সাড়ে ৯ টার সময় ফোন পেয়ে ভিকটিম সুমি তার পরকীয়া প্রেমিক আসামী নজরুল ইসলামের সাথে বাড়ি সংলগ্ন ডোবা পুকুরের পাড়ে বিছালি পালার পাশে গিয়ে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। ওই সময় স্বামী রকিব ঘর থেকে বের হয়ে স্ত্রী সুমিকে খুঁজতে গিয়ে দেখে যে আসামি নজরুলের সাথে ভিকটিম সুমি শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছে। বিষয়টি দেখে স্বামী রকিবের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
তাই তিনি ঘটনাস্থলের দিকে যায়। এসময় পরকিয়া প্রেমিক নজরুল ইসলাম ভিকটিমের সাথে শারীরিক সম্পর্ক শেষ করে পাশের বাঁশ বাগান দিয়ে দ্রুত চলে যায়। এসময় স্বামী রকিবুল ইসলাম ঘটনার বিষয় জিজ্ঞাসাবাদ করলে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে স্বামী রকিব রাগান্বিত হয়ে ভিকটিমকে মুখে চড় থাপ্পর ও গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে। হত্যার পর আসামী তার মৃতদেহ টেনে পুকুরের মধ্যে ফেলে দিয়ে বাড়ীতে এসে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের সবাইকে খোঁজ করতে বলে। যেন কেউ বুঝতে না পারে সেই খুন করেছে। আসামি রকিবুল এসময় শাশুড়ী এবং খালা শাশুড়ীকেও ফোন করে বলে সুমিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। উক্ত ঘটনার বিষয়ে আসামী নজরুল ইসলাম ও রকিবকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামী রকিবুল ইসলাম বিজ্ঞ আদালতে দোষ স্বীকার করে ঘটনার বিষয়ে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন বলে জানা যায়।
এ প্রসঙ্গে মিরপুর থানার ওসি মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার আব্দুর রকিব বিপিএ, বিপিএম (বার) স্যারের দিক নির্দেশনায় মিরপুর সার্কেল এএসপি আব্দুল খালেক স্যার এর সার্বিক তদারকিতে মিরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত শফিকুল ইসলামের চৌকোস তদন্তে আমরা ঘটনার ১৮ ঘন্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হই। পরবর্তীতে উক্ত আসামীদেরকে আমরা বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেছি।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//আগস্ট ২৭,২০২৩//

Discussion about this post