কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পূর্ব সাতবাড়িয়া মৃত কুদ্দুস মন্ডলের ছেলে সাগর আহমেদ রাজা আদম দালালের খপ্পরে সৌদি কারাগারে, স্ত্রী জেসমিন তিন সন্তান নিয়ে দিন কাটাচ্ছে অনাহারে।
জেসমিন সাংবাদিকদের জানান, গত ২ বছর ৭ মাস আগে স্বামী সাগর আহমেদ রাজা (পাসপোর্ট নম্বর- EB0202302) কে জমি বিক্রয় করে দৌলতপুর থানার কল্যানপুর ঘোষপাড়া গ্রামের মতিয়ার বিশ্বাসের ছেলে আতিয়ার বিশ্বাস আদম ব্যবসায়ী দালালের কথায় তার মাধ্যমে কর্মসংস্থানের জন্যে সৌদি আরব পাঠায়। স্বামী সৌদি আরব ঠিকি পৌঁছালেন কিন্তু কর্ম স্থানে না, সৌদি কারাগারে। কারাগার থেকে স্বামী রাজা স্ত্রীকে জানান আতিয়ার বিশ্বাস আচার জারের কথা বলে তার ব্যাগে নিষিদ্ধ ইয়াবা ট্যাবলেট পাচারের উদ্দেশ্যে ঢুকিয়ে দেয়। একারণে সৌদি পুলিশ তাকে ১১ বছর কারাদণ্ড প্রদান করেছে। স্ত্রী জেসমিন বিষয়টি জানার পরে আতিয়ার বিশ্বাসকে ফোন দিলে সে নানা রকম ভয় ভীতি দেখিয়ে বিষয়টি চেপে যেতে বলে। যদি বিষয়টি গোপন না রাখা হয় তাহলে তার স্বামী রাজাকে সৌদি কারাগার থেকে ছাড়ানোর কোন চেষ্টা করা হবে না এবং কোন দিন রাজা বাংলাদেশে মূখ দেখতে পারবে না বলে আতিয়ার বিশ্বাস তাদের জানান। কিন্তু একদিন দুইদিন করতে করতে ২ বছর ৭ মাস হয়ে গেছে স্বামী রাজা ফিরে আসেনা। এদিকে উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম স্বামী রাজা না থাকায় প্রায় তিন সন্তান নিয়ে অনাহারে দিন কাটছে স্ত্রী জেসমিনের।
জেসমিন আরো জানান, আদম ব্যবসায়ী দালাল আতিয়ার বিশ্বাসকে ফোন দিলে উচ্চস্বরে ও রাগান্বিত ভাবে কথা বলেন। বলে তোর কোন বাপ থাকলে তার কাছে আমার নামে নালিশ দিয়ে কিছু করতে পারলে করিস। আমি বাংলাদেশের রূপকার দেশনেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, বাবা জীবিত থেকেও আমার সন্তানরা আজ এতিম। আমি হয়েছি সর্বহারা। দয়া করে আমার সন্তানদের বাবাকে তাদের কাছে ফিরিয়ে দিন এবং আতিয়ার বিশ্বাসের মত আদম দালালদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করুন।
প্রতিবেশিরা জানান, রাজায় ছিল জেসমিনের সংসারে এক মাত্র উপার্জনের মাধ্যম। আতিয়ার বিশ্বাসের কথায় ছোট ছেলেকে জেসমিনের গর্ভে রেখেই বিদেশ গমন করেন রাজা। আজ রাজা কারাগারে। বর্তমানে জেসমিন পরের বাসায় কাজ করে তিন সন্তানের আহার যোগায়। টাকার অভাবে তার বড় মেয়ের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে আর ছোট ছেলে তো তার বাবাকে এখনো চোখেই দেখে নাই। আতিয়ার বিশ্বাসের মত আদম ব্যবসায়ীদের কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার।
সাংবাদিকরা ফোন যোগে আতিয়ার বিশ্বাসের সাথে কথা বললে, সে রাজার সৌদি পাঠানোর বিষয়টি স্বীকার করে। কিন্ত ব্যাগে নিষিদ্ধ ইয়াবা ট্যাবলেট সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে জানান।
খালিদ সাইফুল // দৈনিক দেশতথ্য // ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

Discussion about this post