ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের আদেশ পেয়েও সিদ্ধিরগঞ্জে এক প্রধান শিক্ষককে স্বপদে পুনর্বহাল না করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত রোববার প্রতিকার চেয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে ওই প্রধান শিক্ষক আবেদন করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে আদমজীর মার্চেন্ট ওয়ার্কার্স (এম.ডব্লিউ) উচ্চ বিদ্যালয়ে।
২০২১ সালে তৎকালীন এডহক কমিটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদাকে সাময়িক বরখাস্ত করে। বিভাগীয় তদন্তে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হলে ৫ সেপ্টেম্বরে তাকে স্বপদে পুনর্বহালের আদেশ দেয় শিক্ষা বোর্ড। বর্তমান কমিটির সভাপতি মতিউর রহমান মতি তাঁকে পুনর্বহাল করতে কালক্ষেপন করছেন। প্রায় ৩ বছর ধরে বেতন ভাতাদি না পাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন ওই প্রধান শিক্ষক।
জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীনগরে অবস্থিত মার্চেন্ট ওয়ার্কার্স (এম.ডব্লিউ) উচ্চ বিদ্যালয়ে গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সালে গাজী নাজমুল হুদা প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। স্কুলের তৎকালীন এডহক কমিটি ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। সাময়িক বরখাস্ত থাকা অবস্থায় একাধিকবার বিভাগীয় তদন্ত হয়। তদন্তে প্রধান শিক্ষক নির্দোষ প্রমাণিত হলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে পুনর্বহাল করেনি। পরবর্তীতে কোন উপায় না পেয়ে গাজী নাজমুল হুদা মহামান্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন (নং- ২৮৩৮/২৩) দায়ের করলে হাইকোর্ট দুই মাসের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকাকে নির্দেশ দেয়। শিক্ষা বোর্ড তাদের আপিল এন্ড আরবিট্রেশন বোর্ডের তদন্ত, যাচাই বাছাই এবং তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে তাকে স্বপদে পুনর্বহালের জন্য সুপারিশ করে, যা গত ২১ আগষ্ট ২০২৩ তারিখের ২২৮তম বোর্ড সভায় অনুমোদিত হয়। এরপর গত মাসের ৫ তারিখে প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদাকে স্বপদে পুনর্বহালের জন্য ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সচিব স্বাক্ষরিত একটি পত্র স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়। উক্ত পত্র নিয়ে গাজী নাজমুল হুদা গত ১২ সেপ্টেম্বর তারিখে একটি যোগদান পত্র স্কুলের সভাপতির বরাবর প্রেরণ করলেও গতকাল পর্যন্ত কোন জবাব পায়নি। স্কুল কর্তৃপক্ষের কোন সহযোগিতা না পেয়ে ও স্কুলে যোগদান করতে না দেয়ায় এর প্রতিকার চেয়ে গাজী নাজমুল হুদা গত রোববার জেলা প্রশাসক, নারায়ণগঞ্জ এর বরাবরে একটি লিখিত আবেদন করেছেন।
গাজী নাজমুল হুদা জানান, একাধিক বার চেষ্টা করেও সভাপতির দেখা পাইনি। যোগদানের অনুমতি চেয়ে পত্র পাঠিয়েও কোন জবাব পাইনি। তিনি আরও জানান, আমি নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার পরও আমাকে যোগদান করতে দিচ্ছে না। গত ৩ বছর ধরে বেতন ভাতাদি না পাওয়ায় আমি আমার পিতা-মাতা ও পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি।
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ইউনুছ ফারুকী জানান, বিষয়টি বোর্ডে জানানো হবে। এ বিষয়ে জানতে স্কুলে গেলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রওশনআরা কথা বলতে রাজি হয়নি। এসময় একটি সুত্র জানায়, স্কুলের সভাপতি মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলায় ওয়ারেন্ট থাকায় গতকাল থেকে সে আত্মগোপনে রয়েছে। একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ/

Discussion about this post