যশোরের সাতটি নদ নদীতে অপরিকল্পিতভাবে কম উচ্চতার নির্মাণ করা হচ্ছে ৯টি সেতু।
যার ফলে বর্ষায় এসব সেতুর নিচ দিয়ে নৌযান চলাচল ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ খুলনার নৌ সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আশ্রাফ উদ্দীন।
প্রাপ্ত সূত্র মতে, যশোরের মণিরামপুর উপজেলার টেকারঘাট এলাকায় টেকা নদীর ওপর পুরোনো সেতু ভেঙে সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। পানি থেকে এই সেতুর উচ্চতা খুবই কম। একই উপজেলার হরিদাসকাটি ইউনিয়নে মুক্তেশ্বরী নদীর দেড় কিলোমিটারের মধ্যে কম উচ্চতার দুটি নতুন সেতু নির্মাণের কাজ চলছে। এর মধ্যে সুবলকাঠি সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে সংযোগ-সেতু নির্মাণের কাজ। হাজরাইল সেতুর নির্মাণ চলমান।
দুটি সেতু নির্মাণ করতে মুক্তেশ্বরী নদীতে আড়াআড়িভাবে মাটির বাঁধ দেওয়া হয়েছে। একই উপজেলার নেহালপুর এলাকায় শ্রী নদীর ওপর সেতু নির্মাণকাজ সম্প্রতি শেষ হয়েছে। মণিরামপুর ও চিনাটোলা এলাকায় হরিহর নদের ওপর পুরোনো সেতু ভেঙে কম উচ্চতায় দুটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে।
যশোর সদর উপজেলার দাইতলা এবং বাঘারপাড়া উপজেলার ছাতিয়ানতলায় ভৈরব নদের ওপর নির্মিত পুরোনো দুটি সেতু ভেঙে সেখানে কম উচ্চতার দুটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। বাঘারপাড়া উপজেলার খাজুরা ও সীমাখালীতে চিত্রা নদীর ওপর কম উচ্চতার একটি সেতু নির্মাণকাজ চলছে। শার্শা উপজেলায় বেতনা নদীর এক কিলোমিটারের দূরত্বের মধ্যে কাজীরবেড়-ইসলামপুর মোড়ে ও শিয়ালকোনা গাতিপাড়া ও নিশ্চিন্তপুর গ্রামের সংযোগস্থলে কম উচ্চতার দুটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিএর সূত্র মতে, এখন যে সাতটি নদীর ওপর সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে নিয়ম অনুযায়ী সেগুলোর কোনোটির ক্ষেত্রে সেতুর উচ্চতা হওয়ার কথা পানির স্তর থেকে গার্ডারের নিচ পর্যন্ত ১৬ ফুট, কোনোটির ২৫ ফুট। কিন্তু যে সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে তার সব কটির উচ্চতা ৪ দশমিক ৫৯ ফুট থেকে ১১ দশমিক ৫০ ফুট পর্যন্ত। সেতুগুলোর মধ্যে ১০টি সেতু নির্মাণ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এবং একটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের (ডব্লিউবিবিআইপি) আওতায়।
অভ্যন্তরীণ জলপথ ও তীরভূমিতে স্থাপনাদি নির্মাণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা অনুযায়ী, নৌপথে খুঁটিসহ বৈদ্যুতিক লাইন ও সেতু নির্মাণ করতে হলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) থেকে ছাড়পত্র (নেভিগেশনাল ক্লিয়ারেন্স) নেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু এসব সেতু নির্মাণে বিআইডব্লিউটিএর ছাড়পত্র নেয়নি এলজিইডি ও সওজ।
বিআইডব্লিউটিএ খুলনার পশ্চিম বদ্বীপ শাখার নৌ সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আশ্রাফ উদ্দীন বলেন, ‘নদীর ওপর সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে নেভিগেশন ক্লিয়ারেন্স নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু যশোরে নদীর ওপর ৯টি সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে নেভিগেশন ক্লিয়ারেন্স নেওয়া হয়নি। সেতুর উচ্চতা কম হওয়ায় নদীতে ছোট ও মাঝারি আকারের নৌযান চলাচল বাধাগ্রস্ত হবে।

Discussion about this post