মৌলভীবাজার সদরে বাবার বিরুদ্ধে ২মাসের কন্যা শিশুকে হত্যা করে বস্তায় ভরে ফেলে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনার ২দিন পর ১০ নভেম্বর সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর শ্রীফুলিয়া এলাকা থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
অভিযুক্ত পিতা মেহেদী হাসান খাঁন (৩০)উপজেলার ১০নং নাজিরাবাদ ইউনিয়নের ছিকরাইল গ্রামের।
এ ঘটনায় নরসিংদী জেলার শিবপুর মডেল থানায় স্বামী মেহেদী হাসান খানের বিরুদ্ধে হত্যা (মামলা নং- ৮/৩২২) পরস্পর যোগসাজসে হত্যা করার অপরাধে মামলা দায়ের করেছেন নরসিংদী গ্রীন লাইফ হাসপাতালে কর্মরত ওটি নার্স ও ভুক্তভোগী স্ত্রী লাভলী আক্তার শাকিলা (২৯)। মামলার অন্যান্য অভিযুক্তরা হলেন- মেহেদী হাসান খাঁন (৩০) এর বড়ভাই মজনু খাঁন (৩২) বোন লিপি বেগম (৩৬)।
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী সুত্রের বরাতে জানা গেছে- নরসিংদী গ্রীন লাইফ হাসপাতালে কর্মরত ওটি নার্স লাভলী আক্তার শাকিলা (২৯) ( বর্তমানে- বাসাইল, মেয়রের বাড়ীর মোড়, মৃত: কিরণ হাজীর বাড়ীর ভাড়াটিয়া) এর সাথে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ১০নং নাজিরাবাদ ইউনিয়নের ছিকরাইল গ্রামের মেহেদী হাসান খাঁন (৩০) এর সাথে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে। বিগত ৫/৮/২০১৮ইং ইসলামী শরীয়া মোতাবেক তাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়। তাদের সংসারে এক কন্যা শিশু জন্ম গ্রহন করে। কন্যা মেহেরীন আফরোজ এর বর্তমান বয়স ২ মাস ৯দিন। সর্বশেষ গত ৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় স্বামী মেহেদী হাসান খাঁন চায়ের মধ্যে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে তার স্ত্রীকে অচেতন করে রাত অনুমান ৯ ঘটিকা থেকে ভোর অনুমান সাড়ে ৫টার মধ্যে যে কোন এক সময় দুগ্ধজাত কন্যা সন্তানকে একটি ব্যাগে নিয়ে পালিয়ে যায়। চলতি বছরের গত ১০ নভেম্বর সকাল ১০টার দিকে সংবাদ প্রাপ্ত হয়ে শ্রীফুলিয়া এলাকা থেকে বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে শিবপুর মডেল থানার পুলিশ।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে গ্রীন লাইফ হাসপাতালে কর্মরত ওটি নার্স লাভলী আক্তার শাকিলা মুঠোফোনে ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে বলেন-স্বামী মেহেদী হাসান খাঁন তার মা ও ভাইয়ের পরামর্শক্রমে, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আমাকে চায়ের সাথে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে দেয়। সেইদিন আদর করে আমাকে সে নিজেই চা বানিয়ে দিয়েছে। ভোর অনুমান সাড়ে ৫টার দিকে ঘুম ভাঙলে দেখতে পাই ঘরের ভেতরে আমার স্বামীসহ কন্যা সন্তান নেই। জিনিষপত্র এলোমেলে অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তাদের কোথাও না পেয়ে বাসার মালিকসহ অন্যান্য ভাড়াটিয়াদের বিষয়টি অবগত করলে বাসার মালিক জানান- মেহেদী হাসান খাঁন একটি ব্যাগ হাতে নিয়ে বাসা থেকে চলে যেতে দেখেছেন। এ ব্যপারে জানতে চাইলে বাসার মালিক রহিমা আক্তার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন- দীর্ঘদিন যাবৎ মেহেদী হাসান খাঁন ও লাভলী আক্তার শাকিলা ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস করে আসছেন। তাদের সংসারে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ঘটনার ভোরে মেহেদী হাসান খাঁন একটি ব্যাগ হাতে নিয়ে বাহির হয়ে যেতে দেখেছেন।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ১০নং নাজিরাবাদ ইউনিয়নের ছিকরাইল গ্রামের মেহেদী হাসান খাঁন এর মা হাজেরা বেগম বলেন- তিনি এসব বিষয়ে কিছুই জানেন না। মেহেদী হাসান খাঁন কলেজে পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করছে। শিশু জন্ম গ্রহনের বিষয়টি তিনি অবগত নন। তাছাড়া শিশুটি কার সন্তান এবং কি করে মারা গেছে তা তিনি বলতে পারবেন না। এ বিষয়ে ১০নং নাজিরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন বলেন- বিষয়টি একটু যাচাই করার প্রয়োজন আছে।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//

Discussion about this post