”জাতের মেয়ে কালো ভাল, নদীর পানি ঘোলাও ভাল। ” এ বছর তিস্তা নদীর ক্ষেত্রে ভিন্নতা দেখা দিয়েছে। তিস্তা নদীর পানি আগের চেয়ে অনেক ভারী ও কাদাযুক্ত। মাছ ধরতে যাওয়া জেলেরা বলছে, পানিতে ডুব দিলে শরীরে কাদা মেখে যায়। গা চুলকায়। নদীর পানি ভারী ঘোলাটে। এই পানির কারণে নদীতে মাছ নেই। জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে।
তিস্তা নদীর পানি পরিশোধনে তিস্তা চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়ন প্রয়োজন। পানি প্রবাহ ছাড়া এই নদীর জীববৈচিত্র্যতা হারিয়ে যাবে চিরতরে। ১১ সাল হতে ঝুলে আছে তিস্তা নদীর পানি চুক্তির ভবিষ্যৎ। আদ্যোতে কী তিস্তা নদীর পানি চুক্তি হবে, প্রশ্ন দেখা দিয়েছে?
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে তিস্তা নদীর পানি হিংস্যা নিয়ে ভাগাভাগির একটি খসড়া চুক্তির রূপরেখা চুড়ান্ত হয়ে আছে প্রায় এক যুগের একটু বেশি সময় ধরে। এমন কি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের শতভাগ সমর্থন পেয়েছে বাংলাদেশ তিস্তা পানি চুক্তির বিষয়ে। এমনটি ভারতীয় পত্রপত্রিকায় ও বিভিন্ন সামাজিক মিডিয়া হাইজ গুলো হতে প্রকাশ পেয়েছে। তবে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি একটু আলাদা। পশ্চিববেঙ্গর মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির আপত্তির কারণে তিস্তা পানি চুক্তি হতে হতে হচ্ছে না। শুধু হয় হচ্ছে বলে এক যুগের বেশি সময় পার হতে চলল। আজও চুক্তি সই করা সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশের দ্বাদশ নির্বাচনের তারিখ নিধারণ হয়েছে আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি। এই নির্বাচনের প্রাককালে গত ২ আগষ্ট রংপুরে এক বিশাল জনসভায় যোগদিতে এসে ছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রংপুরবাসীর প্রত্যাশা ছিল এই জনসভায় তিস্তা পানি চুক্তি অথবা তিস্তা মহাপরিকল্পা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোন যুগোপযুগী ঘোষনা আসবে কিন্তু আসেনি। জনসভা হতে রংপুরবাসী হতাশ হয়ে ফিরে এসেছে। সাধারণ মানুষের ইচ্ছের প্রতিফলন হয়নি জনসভায়। সাধারণ মানুষের ভাবনায় ছিল। তিস্তা পানি চুক্তি যেহেতু ভারতের সাথে হতে বিলম্ব হচ্ছে তাহলে তিস্তা নদীকে বাঁচাতে নদী খনন কওে পানির রিজার্ভাও বাড়াতে সরকার তিস্তা নদী নিয়ে যে তিস্তা মহাপরিকল্পা করছে তার বাস্তাবায়নের একটি দিক নিদের্শনা মূলক ঘোষনা আসবে কিন্তু সেই ঘোষনা আসেনি। এতে করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ভূরাজনীতিতে কোন মেরুকরণ হচ্ছে কিনা। ভারত এখন সেই চুক্তির বয়ানে পরিবর্তন চায় কিনা? বিকল্প কোনও প্রস্তাব পেশ করে তিস্তা নিয়ে নতুন আলোচনা শুরু করতে চাইছে কি না ? তিস্তা নদী নিয়ে যারা ভাবছেন সেই সব বিশেষজ্ঞ মহলে প্রশ্ন উঠতেছে। কারণ দিল্লিতে একটি সংসদীয় কমিটির রিপোর্ট সেই প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে। গত বছরের ২৫শে জুলাই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে তাদের রিপোর্ট পেশ করেছে। সেখানে বলেছে, তারা সরকারকে আহবান জানাচ্ছে যাতে তিস্তা চুক্তি নিষ্পত্তি করতে বাংলাদেশের সঙ্গে ‘অর্থবহ সংলাপের সূচনা’ করা হয়। রিপোর্ট পেশকৃত কমিটিতে ভারতের সব বড়দলের প্রতিনিধিত্ব ছিল। তারা সর্বসম্মতি ক্রমে রিপোর্টটি পেশ করেছে বলে জানাযায়। সূত্র বলছে ধারণা করা হয় পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন যে, তৃণমূল কংগ্রেসের বাধায় তিস্তা পানি চুক্তির জট খুলছে না বলে মনে করা হয়। সেই দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা অভিষেক ব্যানার্জিও এই কমিটির অন্যতম সদস্য বলে জানা গেছে। তবে রিপোর্টটিতে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা কোন আপত্তি তুলেনি বলে নিশ্চিত করেছে। তারাও তিস্তা পানি চুক্তি চায়। জনমনে প্রশ্নে সকলে তিস্তা পানি চুক্তির বাস্তবায়ন চাইলে এই চুক্তি বাস্তবায়নের মুখ দেখছেনা কেন? অথচ ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে থাকা ১১১টি ছিটমহল বিনিময় চুক্তিটি কত সুন্দর ভাবে হয়ে গেলে। কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে হওয়া সেই চুক্তি নিয়ে মমতা ব্যানাজি ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কতটা না উচ্ছ্বাস ছিল। সেই সময় পশ্চিমবঙ্গও সরকারের বডিল্যাঙ্গুয়েস বলে ছিল এরপর পানি চুক্তিও সুন্দর ভাবে হবে কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়নি। তিস্তা নদীর পানি চুক্তি নিয়ে অমীমাংসিত ইস্যুটি, বাংলাদেশের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে হলে, বর্তমান সরকারের জন্য সেটা ছিল অত্যন্ত সুখকর খবর। জনগণের কাছে বাংলাদেশ – ভারত অকৃত্রিম বন্ধুত্বের উদাহরণ হয়ে থাকত। দুই দেশেরর জনগণের প্রতি সম্মানজনক মনোভাব প্রকাশ আরো দৃঢ় হত। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের আর্থিক দুর্রাবস্থার পরও বাংলাদেশকে সরাসরি যুদ্ধে সহায়তা করেছে ও সমর্থন যুগিয়েছে। এছাড়াও যুদ্ধকালীণ ৯ মাস প্রায় এক কোটি বাঙ্গালি শরনাথীকে আশ্রয় দিয়েছে। দিয়েছে খাদ্য সহায়তা ও চিকিৎসা সেবা এবং নিরাপত্তা। যাহা বাংলাদেশ কখনো ভুলবেনা। মহান মুক্তিযুদ্ধেও ৯ মাসে এই তিস্তা নদীর বুকে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতের সৈনিক মিত্র বাহিনীর শহীদের রক্তের প্রবাহ মিশে আছে। সেটি দুই দেশের জনগণ কখনো ভুলেনি।
” তিস্তা পানি চুক্তির বর্তমান অবস্থা ”
বাংলাদেশের একটি শীর্ষ কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, পুরনো চুক্তির খসড়াটি অবিকৃত রেখে নতুন করে আলোচনার কথা বলা হচ্ছে। এতে করে প্রশ্ন উঠতে পারে। তাহলে কি ভারতের পার্লামেন্টারি কমিটি সম্পূর্ণ নতুন আকারে চুক্তি নিয়ে কথাবার্তা শুরু করার কথা বলতে চাইছে। বাংলাদেশ কি শেষ পর্যন্ত সে বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছে। আবারও নতুন করে তিস্তা পানি চুক্তি নিয়ে দুইদেশ কে ভাবতে হবে। তাহালে ২০১১ সালে পানি চুক্তির চুড়ান্ত করা হয়ে ছিল। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বাংলাদেশে এসে ঘোষনা পর্যন্ত দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বিরোধীতায় চুক্তিটি চুড়ান্ত বাস্তবায়নের মুখ দেখেনি। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের দলনেত্রী মমতা ব্যানার্জি তিস্তা চুক্তির বিরুদ্ধে নন কিন্তু ‘পশ্চিমবঙ্গকে বঞ্চিত করে’ কোনও চুক্তি করার চেষ্টা হলে তৃণমূল সেটা কিছুতে মেনে নেবে না। কথাটি ঘুরে ফিরে তিস্তা চুক্তির বিরুদ্ধে যায়। কারণ পশ্চিমবঙ্গেও উপর দিয়ে তিস্তা নদী প্রবাহিত হয়ে আসছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পার্লামেন্টারি স্ট্যান্ডিং কমিটির বর্তমান চেয়ারপার্সন হলেন বিজেপি-র এমপি পি পি চৌধুরী। শাসক ও বিরোধী দল মিলিয়ে মোট ৩০জন এমপি এই কমিটিতে আছেন। কয়েক দিন আগে তারা লোকসভা ও রাজ্যসভায় ভারতের ‘নেইবারহুড ফার্স্ট’ (প্রতিবেশীরা সবার আগে) পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেন – যাতে একটা বড় অংশ ব্যয় করা হয়ে ছে বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে।
” ২০১১ সালের তিস্তা পানি চুক্তির চুড়ান্ত খসড়া”
২০১১ সালে যে তিস্তা চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করা হয়ে ছিল, তাতে তিস্তা নদীর প্রবাহ বজায় রাখার জন্য একটা নির্দিষ্ট অংশ ছেড়ে দিয়ে বাকি পানি দুই দেশের মধ্যে সমান ভাগাভাগির কথা বলা হয়ে ছিল বলে জানা গেছে। যদিও বাংলাদেশ ও ভারত কোন রাষ্ট্রের তরফ হতে কেউই সেই চুক্তির খসড়াটি কখনো প্রকাশ করেনি। এই চুক্তির পানি বন্ঠনের পরিমাপ সম্পর্কেও কথা বলেননি। তবে দুই দেশের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন এই আধাআধি ভাগের ফর্মুলা নিয়ে তখন তিস্তা পানি চুক্তির চুড়ান্ত খসড়ার অনুমোদন নিয়ে ঐক্য মত হয়ে ছিল। এখন মমতা ব্যানার্জির দাবি মানতে গেলে সেই পুরনো ফর্মুলা অনুযায়ী চুক্তি করা সম্ভব নয়। বরং এক্ষেত্রে দুটো বিকল্প রাস্তা তৃণমূল সরকারের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে পারে। শুষ্ক মরশুমে ভারতের হিস্যা কিছুটা বাড়িয়ে ় পশ্চিমবঙ্গের তিস্তা অববাহিকার জেলাগুলোকে বাড়তি সেচের জল পাইযে দেয়া। সেক্ষেত্রে তৃণমূল নেত্রী দেশের স্বার্থে চুক্তিতে রাজি হয়েছে। সেই সাথে তিনি পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থে কোনও আপষ করেননি। তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী এক ডিলে দুই পাখি শিকার করে ফেলবেন। চুক্তিও হয়ে গেল আবার ভোটের রাজনীতিতে পশ্চিমবঙ্গেও জনতাও সামলানো গেল। বাংলাদেশের পক্ষে বিকল্প পানি চুক্তির প্রস্তাব মেনে নেওয়া প্রায় অসম্ভব। ভারত যদি অর্ধেকের চেয়ে বেশি তিস্তার পানি পায়। এতে বাংলাদেশের হিস্যা ৫০ শতাংশর নিচে নেমে যায়। সেটা রাজনৈতিক ভাবে শেখ হাসিনার জন্যও ‘রাজনৈতিক পরাজয়ের’ সামিল হবে। এছাড়া তিস্তা পানির ২০১১ সালের চুক্তিতে তিস্তার মূলধারা বা প্রবাহ সঠিক রেখে আধাআধা ভাগাভাগি। এতে করে পশ্চিমবঙ্গ এমনিতে বেশী পানি পাবে। কারণ পশ্চিমবঙ্গে মূলধারা সঠিক রেখে প্রবাহ বাকি অর্ধেকের।
দ্বিতীয় বিকল্পটি বাতলে ছিলেন মমতা ব্যানার্জি নিজে। প্রায় সোয়া ছ’বছর আগে ২০১৭ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময়। দিল্লিতে তাঁদের দুজনের শেখ হাসিনা ও মমতার মধ্যে দেখা হয়ে ছিল তখন বলে ছিলেন। মমতা ব্যানার্জি তখন বলে ছিলেন, তিস্তার জল না-দিতে পারলেও উত্তরবঙ্গে তোর্সা-দুধকুমার-সঙ্কোশ-ধরলার মতো আরও যে সব নদীতে উদ্বৃত্ত জল আছে তা খাল কেটে বাংলাদেশের তিস্তা অববাহিকায় পাঠানো যেতে পারে। দ্বিতীয় এই প্রক্রিয়াটি অবশ্য সময় সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল। একটি সূত্রের দাবি পশ্চিমবঙ্গ সরকার কিন্তু তাদের এই বিকল্প প্রস্তাব থেকে এখনও সরে আসেনি। বাংলাদেশ অবশ্য এই প্রস্তাব নিযে কখনো বিশেষ আগ্রহ দেখায়নি। আবার সরাসরি নাকচও করে দেয়নি।
এদিকে বাংলাদেশের পানি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন , বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে অভিন্ন নদীগুলোর পানি বন্টন ও তিস্তা পানি চুক্তির প্রশ্নে দ্বিপাক্ষিকভাবে অগ্রগতি যেহেতু হচ্ছে না । এখন আন্তর্জাতিক তৃতীয় কোন পক্ষের সহযোগিতা নেয়া উচিত। এমন কী জাতিসংঘের মধ্যস্ততায় এই সমস্যা সমাধানের পথে হাঁটতে পারেন বাংলাদেশ। এটা অবশ্য দেশের ভিতরে একশ্রেণির পানি বিশেষজ্ঞর মত। বাংলাদেশ সরকারের এধরণের মতামত কখনো কোথাও প্রকাশ করেনি। বাংলাদেশ এখন দ্বিপাক্ষিক আলোচনার বাইরে বিকল্প বা অন্য কোন পথে যেতে রাজি নয়। এটা স্পষ্ট । দুই দেশের অভিন্ন নদী আছে ৫৪টি । কিন্তু গঙ্গার পানি বন্টন চুক্তির ২৬ বছর পর আর মাত্র একটি নদীর পানি নিয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে – যেটি হলো কুশিয়ারা। প্রশ্নটিই উঠছে আবার – দুই দেশের মধ্যে যৌথ নদী কমিশন প্রতিষ্ঠার ৫০ বছরেও অভিন্ন নদীগুলোর পানি বন্টন সমস্যার সমাধান হচ্ছে না কেন, জটিলতা কোথায়? বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের সামনে এ নিয়ে এখন বাংলাদেশে চলছে নানা আলোচনা। দ্বিপক্ষিকভাবে কেন সমাধান হচ্ছে না? ঢাকায় কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে একান্ত বৈঠকে তিস্তা চুক্তির বিষয়ে তাগিদ দিয়েছেন। দেশের অন্যতম একজন পানি বিশেষঞ্জ ড. আইনুন নিশাত বলেছেন, দ্বিপক্ষিকভাবে অভিন্ন নদীগুলোর পানি বন্টনের প্রশ্নে মীমাংসা করা যাচ্ছে না। তিনি মনে করেন, এখন বাংলাদেশকে তৃতীয় কোন পক্ষের সহযোগিতা নেয়া প্রয়োজন। “যদি আন্তর্জাতিক মহল থার্ড পার্টি (তৃতীয় পক্ষ) এগিয়ে আসে, তখন সমাধান সম্ভব হতে পারে।”
এদিকে তৃতীয় পক্ষের সহযোগিতা নেয়ার বিষয়ে পানি বিশেষজ্ঞরা উদাহরণ হিসাবে টানছেন ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে ৬২ বছর আগের সিন্ধু নদীর পানি চুক্তির বিষয় টি কে। দেশ দুটি ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’ নামের চুক্তি সই করেছিল বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায়। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বৈরি সম্পর্ক থাকার পরও সেই চুক্তির আওতায় তারা বছরের পর বছর ধরে ছয়টি নদীর পানি ভাগাভাগি করছে। বিশ্ব ব্যাংকের সহযোগিতায় সিন্ধু নদীর পানি চুক্তির বিষয়টি ভারত এবং পাকিস্তানের সম্মতি ছিল। তারা চেয়ে ছিল বলে বিশ্বব্যাংক সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছিল চুক্তি করাতে।
তিস্তায় এখন ঘোলা ও কাদাযুক্ত পানি। এবছর ৪ অক্টোবর ভারতের উত্তর সিকিমে অতিভারী বর্ষণে সেখানকার জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ড্যাম (বাঁধ) ভেঙে য়ায়। ড্যামে জমে থাকা কাদাযুক্ত পানি তোড় এসে পরে বাংলাদেশের তিস্তা নদীতে। যার কারণে তিস্তা অববাহিকার লালমনিরহাট, নীলফামারী ও রংপুর জেলায় বুক চিঁড়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীর পানি এছর খুবেই ভারী ও ঘোলাটে হয়ে গেছ। শুস্কু মৌসুমে গজলডোবায় এক তরফা পানি প্রত্যাহার করায় তিস্তা পানি প্রবাহ এখন বন্ধ রয়েছে। যার ফলে পানিতে কাদার ঘনত্ব কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। মাঝিরা নদীর পানিতে নামলে শরীর কাদাকাদা হয়ে যায়। পানি অত্যন্ত দুর্গন্ধযুক্ত । এতে করে তিস্তা নদীর জীববৈচিত্র্যতা হুমকিতে পড়েছে। নদীর পানিতে দূষণ দেখা দিয়েছে।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//

Discussion about this post