পেশা বেছে নিয়েছি পত্রিকা বিক্রির। আর কোন কাজও শিখি নাই। দেশ-দশ ও মানুষের সুখ-দুঃখের খবর পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করি। প্রতিদিনকার আয় দিয়ে চলে তিন সন্ত্রান, স্ত্রী ও নিজের। কোনরকম চলে যাচ্ছে।
সন্তানদের ভবিষ্যত নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। আগে বিক্রি করতাম প্রতিদিন শথপাঁচেক পত্রিকা। এখন সে দিন আর নেই। মানুষ প্রিন্ট পত্রিকা বা কাগজে ছাপা পত্রিকা খুব একটা পড়ে না বললেই চলে। ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে আগেই দেশের খবর পেয়ে যায় মানুষ। কিছু পত্রিকা বিক্রি হয়, যারা পুরোনো ক্রেতা আর বয়স্ক মানুষেরা।
প্রায় ১০/১২ বছর ধরে পত্রিকা বিক্রি পেশার সাথে জড়িত। ৫/৭জন হকার ছিলেন আগে, এখন আমি একাই বিক্রি করি। ছাড়তেও পারিনা। মানুষের কাছে পাওনা প্রায় ৪০/৫০ হাজার টাকা, আর মালিককে দেনা দেড় লাখ টাকার উপরে। আমি প্রতিদিন ভোরে দেশ ও দশের খবর সবার কাছে পৌঁছে দেই- অথচ আমাদের খবর নেয়ার কেউ নেই। আগে পত্রিকার মালিকপক্ষ ঈদে বা বছরে দুই একবার বিভিন্ন উপহার দিতো, এখন তাও পাই না।
শুক্রবার সকালে রামগঞ্জ পৌর শহরের মোহাম্মদিয়া হোটেলে সামনে এভাবেই কথাগুলো অকপটে জানালেন, মোঃ কামাল হোসেন। কামাল হোসেনের বাড়ী পৌর অভিরামপুর গ্রামে। সংসারে রয়েছে তিন সন্তান ও স্ত্রী। পত্রিকা বিক্রির লভ্যাংশ দিয়ে খাবার জোগান দিলেও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে টিকে থাকাও কষ্টসাধ্য। সন্তানদের পড়ালেখার খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এভাবেই চলছে-চলে যাচ্ছে। আপনারা পত্রিকায় আমাদের খবর দিয়ে লাভ কি, কেউই এগিয়ে আসবে না। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে পত্রিকা বিক্রি করতে চলে যান কামাল হোসেন।
রুবেল//দৈনিক দেশতথ্য//ডিসেম্বর ২২,২০২৩//

Discussion about this post