নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা শামীম ওসমান আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় পুরোপুরি নির্ভার।
ভোটারদের মাঝে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের পরিচিতি কম থাকায় তার জয় হাতের মুঠায়। শুধু বেশি সংখ্যক ভোটারদের কেন্দ্রে আনার চ্যালেঞ্জ নিয়ে তিনি দিনরাত নির্বাচনি এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় শুধু তিনিই নন তার স্ত্রী সালমা ওসমান লিপি ও ছেলে অয়ন ওসমানও গণসংযোগ করছেন।
সিদ্ধিরগঞ্জে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হৃদয়মনি ক্রিয়েটিভ স্কুল মাঠে এক উঠান বৈঠকে শামীম ওসমান বলেন, আমি আপনাদের কাছে ভোট চাইতে আসিনি। আপনাদের কিছু কথা জানাতে চাই, ভৌগোলিক কারনে বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী দেশ। এ দেশকে ব্যবহারের জন্য পরাশক্তির নজর পড়েছে। একটি শক্তি ঈগল পাখির মত আকাশে উড়ছে। নির্বাচনে ভোটের পার্সেন্টেজ কম হলে ওই শক্তি ছোবল মারবে। আমাদের সবাইকে জেগে উঠতে হবে। আপনারা ভোট কেন্দ্রে আসবেন যাকে খুশি তাকে ভোট দিবেন।
তিনি বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ-ফতুল্লার উন্নয়ণে আমার সময়ে ১২ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এই অর্থে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ডিএনডির পানি নিষ্কাশন প্রকল্প, ভাষা সৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম শামসুজ্জোহা নারায়ণগঞ্জ লিংক (সাইনবোর্ড-চাষাড়া) সড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণ, ভাষা সৈনিক বেগম নাগীনা জোহা (চাষাড়া-খানপুর-হাজীগঞ্জ-গোদনাইল-আদমজী ইপিজেড) সড়ক,পঞ্চবটি হতে মুক্তারপুর সেতু পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও দোতলা রাস্তা নির্মাণ প্রকল্প, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপনসহ আরো অনেক কাজ হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নারায়ণগঞ্জ হচ্ছে। ৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর শেষ নির্বাচনি প্রচারণা সমাবেশ হবে নারায়ণগঞ্জে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের চাওয়া থাকবে মেট্টোরেল ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা। একেএম শামসুজ্জোহা স্টেডিয়ামে প্রায় আড়াই লাখ লোকের সমাগম হবে। ঈদের জামাতে সেখানে এক লাখ পঁচিশ হাজার লোক নামাজ পড়তে পারে।
দক্ষিন কদমতলীর বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান বলেন, শামীম ওসমান গত দুই টার্মে এলাকায় অনেক উন্নয়ণমূলক কাজ করেছেন। ডিএনডির জলাবদ্ধতা নিরসনে তিনি যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। নির্বাচনে তার বিকল্প নাই।
নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে শামীম ওসমান ছাড়া আরো সাত জন প্রতিদ্বন্দ্বী আছেন। আম প্রতীক নিয়ে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. শহীদ-উন নবী, মশাল প্রতীক নিয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) মো. ছৈয়দ হোসেন, চেয়ার প্রতীক নিয়ে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মো. হাবিবুর রহমান, ডাব প্রতীক নিয়ে বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. গোলাম মোর্শেদ (রনি), গোলাপ ফুল প্রতীক নিয়ে জাকের পার্টির মো. মুরাদ হোসেন জামাল, একতারা প্রতীক নিয়ে বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির (বিএসপি) মো. সেলিম আহমেদ ও সোনালী আঁশ প্রতীক নিয়ে তৃণমূল বিএনপির মো. আলী হোসেন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছে।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আংশিক, সিটি কর্পোরেশনের ১ থেকে ১০ নম্বর ওয়ার্ড ও ফতুল্লার ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ) আসন। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৬ লাখ ৯৬ হাজার ১৩৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩ লাখ ৫২ হাজার ৪৪১জন ও নারী ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৬৯২জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৬জন। এ আসনে ভোটকেন্দ্র ২৩১টি, স্থায়ী ১৪৮১ ও অস্থায়ী ৭৬টিসহ মোট ১৫৬২টি ভোট কক্ষ আছে ।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//

Discussion about this post