গৌরাঙ্গ লাল দাস,কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
শিশুসাহিত্যিক খালেক বিন জয়েনউদদীনকে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার চিত্রাপাড়া গ্রামে বাবা-মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে।
আজ সোমবার দুপুরে খালেক বিন জয়েনউদদীনের মরদেহ ঢাকা থেকে তার জন্মভূমি কোটালীপাড়া উপজেলার চিত্রাপাড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
এ সময় তার আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। ওই দিন বাদ আসর সাহিত্যিক, কবি, লেখক খালেক বিন জয়েনউদদীনের চিত্রাপাড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে বাবা-মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।
এর আগে কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজিম উদ্দিন বাংলা একাডেমির পুরস্কারপ্রাপ্ত ,শিশুসাহিত্যিক খালেক বিন জয়েনউদদীনের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এসময় উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার এস এম শাহজাহান সিরাজ, প্রফেসর কার্তিক চন্দ্র বিশ্বাস, কবি খান চমন-ই-এলাহি, আওয়ামী লীগ নেতা হাফিজুর রহমান, সমাজসেবক মোতাহার হোসেন সরদার,সাংবাদিক মিজানুর রহমান বুলু, গৌরাঙ্গ লাল দাসসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে আজ সোমবার বেলা ১০টায় তার মরদেহ বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে রাখা হয়। সেখানে সর্বস্তরের মানুষ এই গুণী লেখকের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এর আগে রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ঢাকার রাজা বাজার মসজিদের সামনে খালেক বিন জয়েনউদদীনের প্রথম জানাজার নামাজ অনুুষ্ঠিত হয়।
খালেক বিন জয়েনউদদীন (৭০) গত রবিবার রাজধানীর ঢাকার নিজ ফ্লাটে ঘুমন্ত অবস্থায় মারা যান। তার মৃত্যুর সংবাদ কোটালীপাড়ায় ছড়িয়ে পড়লে আত্মীয়- স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, কবি, সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিকদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও ২পুত্র সন্তান রেখে গেছেন।
সাহিত্যিক খালেক বিন জয়েনউদীন ১৯৫৪ সালের ২৪ জানুয়ারি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার চিত্রাপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আলহাজ¦ মোঃ জয়েনউদদীন। ১৯৭৫ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এম এ পাস করেন।
ধান সুপারি পান সুপারি, আপিল চাপিল ঘন্টিমালা, চিরকালের ১০০ ছড়া, হৃদয়জুড়ে বঙ্গবন্ধু, নলিনীকান্ত ভট্টশালী, হুমায়ুননামা, মায়ামাখা শেখ রাসেল, বঙ্গবন্ধু ও শেখ রাসেল, সাকিন টুঙ্গিপাড়া, কন্যে তুমি শেখ হাসিনা, একাত্তরের মিত্রমাতা ইন্দিরা গান্ধী, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, আতা গাছে তোতা পাখি, বঙ্গবন্ধু এবং রক্তাক্ত বাংলা, বঙ্গবন্ধুর বাবা শেখ লুৎফর রহমান, একাত্তরের অশোক, টুঙ্গিপাড়া ও বত্রিশ নম্বরের সেই মানুষটি, বঙ্গবন্ধুর ছেলেবেলার গল্প, রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশের গণহত্যা ৭১, ছোটদের বঙ্গবন্ধু, ছোটদের নজরুল, একাত্তর, পঁচাত্তর এবং বাংলাদেশ, খালেক বিন জয়েনউদদীনের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ।
শিশুসাহিত্যে বিশেষ অবদানের কারণে ২০১৪ সালে খালেক বিন জয়েনউদদীন বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া তিনি বঙ্গবন্ধু সাহিত্য পরিষদ, বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ, অগ্রণী ব্যাংক পুরস্কার , সাউন্ড বাংলা সম্মাননাসহ অনেক পুরস্কার লাভ করেছেন।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//

Discussion about this post