কুমারখালি প্রতিনিধিঃ কুমারখালি উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের বল্লভপুর গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সন্ত্রাসী হামলায় ৪ জন আহত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীর ভাই মোঃ মকবুল হোসেন।
২০ (ফেব্রুয়ারি) মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭ ঘটিকায় শাহিদ মন্ডল (৫০) ও রেজাউল মন্ডল (৫৫) তার সন্ত্রাসী বাহিনী দেশিয় অস্ত্র নিয়ে জালাল উদ্দীন, নূর উদ্দিন মন্ডল, মোঃ টামাস উদ্দিন, মোঃ শরিফুল ইসলাম বাড়িতে ঢুকে এলোপাথারি মারপিট করে জখম করে। এ সময় তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হত্যার হুমকি দিয়ে শাহিদ মন্ডল তার সন্ত্রাসী বাহিনী স্থান ত্যাগ করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায় মঙ্গলবার ৭.৩০ ঘটিকার সময় জমিজমা সংক্রান্ত ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরিয়া পরিকল্পিভাবে হাতে হাসুয়া, ছোরা, হাতুড়ি, লোহার রড, লোহার শাবল, বাশের লাঠি ও কাঠের বাটাম ইত্যাদি।মারাত্বক অস্ত্রে সস্ত্রে সজ্জিত হইয়া আমার বাড়ীর সামনে বে-আইনি জনতাবদ্ধে আসিয়া। আসামীগন আমাকে উদ্দেশ্যে করিয়া অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করিতে থাকে।
আমার ভাই মোঃ জালাল উদ্দিন (৫৫) ঘর থেকে বের হইয়া আসামীদের গালিগালাজ করিতে নিষেধ করিলে আসামী শাহিদ মন্ডল অন্যান্য আসামীদের হুকুম দিয়া বলে যে, শালাকে মারিয়া শেষ করিয়া ফেল। হুকুম পাওয়া মাত্র আসামী রেজাউল তাহার হাতে থাকা হাসুয়া দিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ভাই জালালের মাথায় কোপ মারিলে উক্ত কোপ আমার ভাইয়ের মাথার পিছনে লাগিয়া হাড় মাংস কাটিয়া গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। আমার ভাই কোপ খাইয়া মাটিতে পড়িয়া গেলে আসামী রবিউল তাহার হাতে থাকা লোহার রড দিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে জালালের মাথায় আঘাত করিলে উক্ত আঘাত জালাল বাম হাত দিয়া ঠেকাইলে বাম হাতের কনুইয়ের উপরে লাগিয়া রক্ত জমাট বাধা জখম হয়। আসামী মাসুদ তাহার হাতে থাকা হাতুড়ি দিয়া আমার ভাই জালালের বুকে পিঠে ও মাজায় এলোপাতারী আঘাত করিয়া নীলা ফোলা রক্তাক্ত জখম করে।
এ ঘটনা দেখিয়া আমার ভাই মোঃ নুরুদ্দিন (৬০) আগাইয়া আসিলে আসামী শাহিদ মন্ডল তাহার হাতে থাকা হাতুড়ি দিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ভাই নুরুদ্দিনের মাথায় আঘাত করিলে উক্ত আঘাত মাথার ডান পাশে লাগিয়া গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। আমার ভাই নুরুদ্দিন আঘাত পাইয়া মাটিতে পড়িয়া গেলে আসামী শামিম ও সাজ্জাদ হোসেন তাহাদের হাতে থাকা লোহার রড ও লোহার শাবল দিয়া আমার ভাই নুরুদ্দিনের বুকে পিঠে ও মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করিয়া থেতলা কালশিরা রক্তাক্ত ফোলা জখম করে। আমার ভাতিজা মোঃ টমাস (৩৫) আগাইয়া আসিলে আসামী আমিন মন্ডল তাহার হাতে থাকা হাসুয়া দিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ভাতিজার মাথায় কোপ মারিলে উক্ত কোপ মাথার ডান পাশে লাগিয়া গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। আমার ভাতিজা কোপ খাইয়া পড়িয়া গেলে আসামী সজিব হোসেন তাহার হাতে থাকা লোহার রড দিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে টমাসের
মাথায় আঘাত করিলে উক্ত আঘাত টমাসের মাথার মাজখানে লাগিয়া গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়।
আসামী আলাউদ্দিন তাহার হাতে থাকা বাঁশের লাঠি দিয়া টমাসের বুকে ও পিঠে এলোপাতারী আঘাত করিয়া নীলা ফোলা জখম করে। আমার ছেলে মোঃ শরিফুল ইসলাম (৪২) আগাইয়া আসিলে আসামী নবিরন নেছা তাহার হাতে থাকা লোহার শাবল দিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে শরিফুলের মাথায় আঘাত করিলে উক্ত আঘাত শরিফুল বাম হাত দিয়া ঠেকাইলে বাম হাতের কব্জিতে লাগিয়া হাড় ভাঙ্গা জখম হয়। আসামী কহিনুর তাহার হাতে থাকা কাঠের বাটাম দিয়া শরিফুলের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় উপর্যুপরি আঘাত করিয়া কালশিরা ও রক্ত জমাট বাধা জখম হয়।
এ বিয়ষে মকবুল হোসেন বলেন, রেজাউল মন্ডল, শাহিদ মন্ডল, জালাল উদ্দিন, শরিফুল সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে এসে আমার ভাই ভাতিজার উপর হামলা চালায় এবং মারধর করেন। বর্তমানে আহতরা কুমারখালি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি আছেন। আমারা এই হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানায়।
এ বিষয়ে কুমারখালি থানার ওসি মোঃ আকিবুল ইসলাম জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ঘটনায় এক পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খালিদ সাইফুল // দৈনিক দেশতথ্য // ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

Discussion about this post