ছাব্বির কুমারখালীঃ
কুষ্টিয়া কুমারখালী নন্দলালপুর ইউনিয়নের সোন্দাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সেশন ও স্কাউউ, স্কুলের বেতন ফি বাবদ বাড়তি টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। নির্ধারিত ফি-এর চেয়ে শিক্ষার্থীপ্রতি ১ হাজার থেকে পনেরশো টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। টাকা জমা দিলেও শিক্ষার্থীদের রসিদে বিভিন্ন অজুহাতে বাড়তি টাকা নেওয়া হচ্ছে।
গত শনি ও রোববার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বেশি টাকা নিচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিদ্যালয়ে নবম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে স্কুলের বেতন, সেশন, বিদ্যুত, স্কাউট ফি বাবদ ৩৭ শ’ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম বলেন, এখানকার অধিকাংশ মানুষজনই দরিদ্র। সব দিক দিয়ে বিবেচনা করে দুই বছরের বেতন নেওয়া হচ্ছে। আবেদনের ভিত্তিতে কয়েকজন দরিদ্র শিক্ষার্থীকে কম নেওয়া হয়েছে।
স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানান, যাদের উপবৃত্তি আছে তাদের ২৫ শ’টাকা ও যাদের উপবৃত্তি নেই তাদের কাছ থেকে ৩৭ শ’টাকা নিচ্ছে। দশম শ্রেণীর মনির হাসান বলেন, আমার উপবৃত্তি আছে আমার কাছে ২৫ শ’ টাকা চাইলে আমি ৫ শ’টাকা দিছি। আর দুই হাজার টাকা স্কুলের রশিদে বাকি লিখে দিয়েছে।
বওলা গোবিন্দপুর গ্রামে আক্কাস আলী জানান, আমার ভাতিজী আফরুজা দশম শ্রেণীর ছাত্রী তার কাছ থেকে ৩৭ শ’ ৫০ টাকা দাবি করে। করোনা কালিন সময়ে স্কুল বন্ধ ছিল এবং সেশন ফি ও দুই বছরের ফি বাবদ এই টাকা দাবি করেছে। এতো টাকা গ্ৰামের মানুষ কি ভাবে দিবে। সেশন ফি ১ শ’ থেকে দেড়শো টাকা এবং স্কাউট ফি বাবদ ৫০ টাকা নেওয়ার নিয়ম থাকলেও এটা স্কুল কর্তৃপক্ষ নিচ্ছে না। স্কুল বন্ধ থাকলেও স্কুলের হেড মাস্টার বেতন নিচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষার্থীর ও অভিভাবক অভিযোগ করেন, উপজেলার অন্য মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর তুলনায় নন্দলালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নানা অজুহাতে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। বিদ্যালয়টিতে ৭ শ’ বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। এই সুযোগে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বেশি টাকা আদায় করছে। এতে অনেক দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থী বিপাকে পড়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম বলেন, শিক্ষা মন্ত্রীর একটা নির্দেশনা আছে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কিস্তিতে টাকা নেওয়ার নির্দেশনা আছে। দুই বছরের বেতন সহ আমরা সেশনচাজ, পরিক্ষার ফি, বিদ্যুত বিল নিচ্ছি। বেশি টাকা আদায় করার অভিযোগটি সঠিক নয়। সেশন ফিসহ সব মিলিয়ে বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে না। প্রধান শিক্ষকের কাছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা দেখতে চাইলে, তিনি তা দেখাতে পারেনি।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল রহমান বলেন, আমার জানামতে স্কুলে কোন বাড়তি টাকা নেওয়ার অভিযোগ কেউ দেয়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল রশিদ বলেন, একবারে দুই বছরের বেতন নেওয়ার কোন নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। যদি কেউ নিয়ে থাকে সেটা অন্যায়।

Discussion about this post