কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কোচিং বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।
অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা কোচিং বাণিজ্যে যুক্ত স্কুল ও কলেজ শাখার শিক্ষকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছেন; যা পরিবারের ওপর বাড়তি আর্থিক চাপ সৃষ্টি করছে এবং এ ব্যয় মেটাতে অভিভাবকরা হিমশিম খাচ্ছেন। এ অবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১২ সালে কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা জারি করে। নীতিমালা জারি করলেও পুলিশ লাইনস স্কুলের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য আরো বেগবান হয়েছে।
কতিপয় শিক্ষক কোচিং বাণিজ্যে মেতে উঠেছে। তাদের কাছে প্রাইভেট না পড়লে ফেল করানোর ভয় ভীতি দেখানো হচ্ছে।এক প্রকার বাধ্য হয়েই শিক্ষার্থীরা কোচিংবাজ শিক্ষকদের কাছে ছুটছে।
শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে প্রাইভেট পড়াশোনা ব্যাপারে স্কুলের গভর্নিং বডির সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে জানান, সাবেক পুলিশ সুপার আলমগীর আলম স্যার পাকাপোক্ত রেজুলেশন করে দিয়েছেন পুলিশ লাইনস স্কুলের কোন শিক্ষক কোন শিক্ষার্থীদের আর প্রাইভেট পড়াতে পারবে না। আরো সিদ্ধান্ত হয়েছে কোচিংবাজ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে একটা সার্চ কমিটি করতে হবে, কিন্তু অধ্যক্ষ নাজমুল আরেফিন কোনো সার্চ কমিটি করেননি।
স্কুলের আরো কয়েক জন শিক্ষক নাম প্রকাশ না শর্তে জানান প্রতিষ্ঠান প্রধানের অসহযোগিতার কারণে প্রাইভেট বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। স্কুল সূত্রে আরো জানা যায় বর্তমান পুলিশ সুপার মহোদয় শিক্ষকদের সাথে মিটিং করে প্রাইভেট পড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছেন। যে সব শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কোচিং বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে তারা হলেন, পার্থ সারথি সাহা, জানে আলম তুহিন, মো: রোকনুজ্জামান, মো: মনিরুজ্জামান সুমন, মালিহা আফরোজ পপি, কামিনি নাহার, ল্যাব সহকারী জসিমউদদীন, শরিফুল ইসলাম, আহারুল ইসলাম, খান মো: ইব্রাহিম প্রমুখ।
কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো শিক্ষক নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কোচিং করাতে পারবেন না। কোনো শিক্ষক বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গড়ে ওঠা কোনো কোচিং সেন্টারে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত হতে পারবেন না বা নিজে কোনো কোচিং সেন্টারের মালিক হতে পারবেন না বা কোচিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন না। কোনো শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কোচিং এ উৎসাহিত, উদ্বুদ্ধ বা বাধ্য করতে পারবেন না।
নীতিমালায় শাস্তি বিধান রয়েছে। শাস্তি: এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত কোনো শিক্ষক কোচিং বাণিজ্যে জড়িত থাকলে তার এমপিএ স্থগিত, বাতিল, বেতনভাতা স্থগিত, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিত, বেতন একধাপ অবনমিতকরণ, সাময়িক বরখাস্ত, চূড়ান্ত বরখাস্ত ইত্যাদি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এমপিএভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ননএমপিও কোনো শিক্ষক কোচিং বাণিজ্যে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধেও একই ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নীতিমালায় আরো বলা হয়েছে কোচিং বাণিজ্যে জড়িত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে সরকার পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়াসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের অনুমতি, স্বীকৃতি ও অধিভুক্তি বাতিল করতে পারবে।
পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো: নাজমুল আরেফিনের নিকট শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্যের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি অনেকবার শিক্ষকদের প্রাইভেট পড়াতে নিষেধ করেছি। আমার কথা কেউ মানছে না।
এহ/27/10/24/ দেশ তথ্য

Discussion about this post