নিজস্ব প্রতিবেদক
এইচএসসি পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরা হলোনা মেধাবী ছাত্রী আঁখির। ফিরলো নিথর দেহ। মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনায় আঁখির মা-সহ সিএনজির চালক গুরুতর আহত। মেধাবী ছাত্রী আঁখির এই অকাল মৃতুকে মেনে নিতে পারছেন না তার পরিবার, সহপাঠী-শিক্ষক ও এলাকাবাসি। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান ছিল আঁখি। আঁখির মৃতুর পর পুরো পরিবারের স্বপ্ন আজ ভেঙ্গে গেছে। এলাকায় চলছে শোকের মাতম।
আজ বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মির্জাপুর সরকারি কলেজ কেন্দ্র থেকে এইএসসি পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে সিএনজি অটো উল্টে বংশাই নদীতে ডুবে আখি আক্তার (১৭) নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আখির মাসহ সিএনজির চালক। গুরুতর অবস্থায় সিএনজির চালক ফরহাদকে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করেছে। দুপুর বারটার দিকে মির্জাপুর-পাথরঘাটা আঞ্চলিক রোডের বংশাই নদীর বীর মুক্তিযোদ্ধা একাব্বর হোসেন ব্রিজ সংলগ্ন উত্তর পাশে ত্রিমোহন এলাকায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। আখির পিতার নাম মো. আবুল হোসেন এবং মাতার নাম ফরিদা ইয়াসমিন। গ্রামের বাড়ি ১৩ নং বাঁশতৈল ইউনিয়নের গায়রাবেতিল গ্রামে।
মির্জাপুর থানার ওসি (তদন্ত) মো. গিয়াস উদ্দিন এবং বাঁশতৈল মো. খলিলুর রহমান কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফায়জুল ইসলাম তারা জানান, আঁখির মা ফরিদা ইয়াসমিন উত্তর পেকুয়া জাগরণী উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষিকা। আঁখি বাঁশতৈল মো. খলিলুর রহমান কলেজ থেকে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল দশটা থেকে বেলা সারে এগারটা পর্যন্ত মির্জাপুর সরকারি কলেজে তার পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে বংশাই নদীর বীর মুক্তিযোদ্ধা একাব্বর হোসেন ব্রিজের উত্তর পাশে সিএনজি অটো উল্টে নদীতে ডুবে যায়। স্থানীয় লোকজন আঁখির মা ফরিদা ইয়াসমিন এবং সিএনজির চালক ফরহাদ হোসেনকে উদ্ধার করলেও আঁখি নদীতে ডুবে যায়। খবর পেয়ে মির্জাপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা এবং টাঙ্গাইলের ডুবুরী দল দুই ঘন্টা চেষ্টার পর নদী থেকে আঁখির নিথর দেহ (লাশ) উদ্ধার করে। আঁখির নিথর দেহ (লাশ) দেখে এ সময় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। আঁখির স্বজন এবং সহপাঠীদের কান্নায় চার পাশের বাতাস ভারি হয়ে আসে। সন্ধ্যার পর তার নিজ গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে আঁখির লাশ দাফন করা হয়েছে।
মির্জাপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স অফিসের স্টেশন অফিসার মো. বেলায়েত হোসেন এবং ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স অফিস টাঙ্গাইলের সহকারী পরিচালক মো. আলাউদ্দিন জানান, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা উদ্ধার কাজ চালায়। তিন ঘন্টা চেষ্টার পর মেধাবী ছাত্রী আঁখির লাশ উদ্ধার করতে সক্ষম হন।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ রিজাউল হক শেখ দিপু বলেন, লাশ উদ্ধারের পর আইনী প্রক্রিয়া শেষে আঁখির লাশ তার পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় এইচএসসি পরীক্ষার্থী মেধাবী ছাত্রী আঁখির মৃতৃুর ঘটনায় মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হাফিজুর রহমান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর এনায়েত হোসেন মন্টু, এসিল্যান্ড মীর্জা জুবায়ের হোসেন এবং মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার তার পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন।

Discussion about this post