নিজস্ব প্রতিবেদক, কুষ্টিয়াঃ কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলাধীন ছাতিয়ান ইউনিয়নের ধলসা গ্রামে রাজমিস্ত্রী মইনুদ্দিন হত্যার এক মাস পার হলেও এখনও কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এতে ক্ষোভে ফুঁসছে স্থানীয় বাসিন্দারা। সোমবার (৩ মার্চ) দুপুরে ধলসা বাজারে কয়েকশ নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে একটি মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা দাবি করেন, হত্যা মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও প্রশাসন তাদের ধরতে ব্যর্থ হচ্ছে। উল্টো আসামিপক্ষের লোকজন নিহত মইনুদ্দিনের পরিবারের সদস্যদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে এবং মিথ্যা মামলায় হয়রানি করছে।
নিহত মইনুদ্দিনের বোন সাবিহা ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
“এক মাস হয়ে গেল, অথচ প্রশাসন একজন আসামিকেও ধরতে পারল না! তারা কি থানায় বসে আঙুল চুষছে? আমার ভাই ছিল একদম নিরীহ প্রকৃতির মানুষ। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।”
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল আলীম স্বপন বলেন, “পূর্ব শত্রুতার জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। আমরা প্রশাসনের কাছে আবেদন করছি, মূল হোতা সরোয়ার হোসেন চুন্নু এবং তার সহযোগী জাহাঙ্গীর বাগ, মিলন সর্দার, রাসেলসহ সব আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।”
সূত্র জানায়, গত ২৭ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে ধলসা গ্রামে মইনুদ্দিনের সঙ্গে রাসেল নামের এক ব্যক্তির কথা-কাটাকাটি হয়। সেই সময় রাসেল তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। ওই রাতেই রাসেল মইনুদ্দিনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরদিন সকালে তার লাশ বাড়ির পাশের মাঠে পাওয়া যায়।
এই ঘটনায় নিহত মইনুদ্দিনের মা আদুরী খাতুন ২৯ জানুয়ারি মিরপুর থানায় সরোয়ার হোসেন চুন্নুকে মূল হোতা করে ১৮ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। কিন্তু এক মাস পার হয়ে গেলেও পুলিশ এখনো কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ডা. আতিয়ার রহমান, মিরপুর থানা জাতীয়তাবাদী তাঁতীদলের সদস্য সুজন মোস্তফা, আব্দুল মজিদ, শাহজাহান আলী, মইনুদ্দিনের মা আদুরী খাতুন, বোন সাবিহা ইসলাম, চাচাতো ভাই আনিসুর রহমান, চাচাতো বোন হাসিনা খাতুন, আব্দুল আলীম স্বপনসহ প্রায় চার শতাধিক এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে বক্তারা দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। তারা হুঁশিয়ারি দেন, যদি প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে তারা আরও কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তায় হতাশ নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী। তারা দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছেন।

Discussion about this post