মোঃ ফয়সাল আলম রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহীর বাগমারায় পুকুরের মাছ লুট ও চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা দায়েরের এক দিন পরই বাদীর বাড়িতে হামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাতে উপজেলার বুজরুক কোলা গ্রামে স্থানীয় যুবদল নেতারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছেন ভূক্তভোগি মৎস্য চাষি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ১৫-১৬ জনের একটি দল বুজরুক কোলা গ্রামের আবদুল জব্বার শাহের বাড়িতে লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় তারা বাড়ির জানালা-দরজা ভাঙচুর করে। পরিবারের সদস্যদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা সটকে পড়ে।
আবদুল জব্বার শাহ অভিযোগ করেন, বুজরুক কোলা গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় যুবদল নেতা শহিদুজ্জামান মুকুলের নেতৃত্বে তার অনুসারীরা ৪ এপ্রিল মব তৈরি করে তাঁর ও এলাকার আরও কয়েক ব্যক্তির মোট সাতটি পুকুরের মাছ লুট করেন। এই বিষয়ে তিনি থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ আদালতে মামলার পরামর্শ দেয়। গত বুধবার তিনি আদালতে যুবদল নেতা শহিদুজ্জামানসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি ও মাছ লুটের অভিযোগে মামলা করেন। বিচারক পুলিশের গোয়েন্দা শাখাকে (ডিবি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ওই মামলা দায়েরের বিষয়টি জানার পর বৃহস্পতিবার রাতে শহিদুজ্জামানের নেতৃত্বে বাড়িতে হামলা করা হয়।
আবদুল জব্বার আরও বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তর থেকে তিন বছরের মেয়াদে খাস পুকুর ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করেছেন। ইজারার মেয়াদ আরও দুই বছর আছে। এর মধ্যে তার কাছ থেকে পুকুর রক্ষার জন্য দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছে। টাকা না দেওয়ায় মাছ লুট করা হয়।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে যুবদল নেতা শহিদুজ্জামান বলেন, ‘‘গ্রামের সাতটি পুকুর দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে আবদুল জব্বার শাহসহ কয়েকজন ব্যক্তি অবৈধভাবে দখল করে মাছ চাষ করেন। এর আগে পুকুরগুলো গ্রামের মসজিদ ও মন্দিরের উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করা হতো। গ্রামের লোকজন পুকুরগুলো আগের মতো ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তখন দখলকারীরা হুমকি দেয়। এতে স্থনীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যসহ গ্রামের দুই শতাধিক লোকজন সাতটি পুকুরে জাল ফেলে মাছ ধরেছে বলে শুনেছি। এদের মধ্যে মসজিদ ও মন্দির পরিচালনা কমিটির লোকজনও ছিলেন। অথচ উদ্দেশ্যমূলকভাবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকলেও আমাকে প্রধান আসামি করে দুইটা মিথ্যা মামলা করেছে।’’
বাড়িঘরে হামলার প্রসঙ্গে শহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমি কাল থেকে ঢাকায় আছি। শুনেছি, জব্বারের বাড়ির দরজা-জানালা ভাঙচুর করা হয়েছে। তবে কারা ভাঙচুর করেছে জানা নেই।’
বাগমারা থানার ওসি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Discussion about this post