শেখ নাদীর শাহ্,পাইকগাছা(খুলনা) : সাতক্ষীরার তালা উপজেলার কানাইদিয়া-রথখোলা সহ পাশ্ববর্তী পাইকগাছার কপিলমুনির বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন কৌশলে চলছে ভ্রাম্যমান মাদক বিকিকিনি ও অনলাইন জুয়ার ব্যবসা। ব্যবসায়ীদের থেকে পছন্দের জায়গায় বাইকযোগে মাদক পৌছে পেয়ে ধ্বংশের দারপ্রান্তে বিস্তীর্ণ জনপদের যুবসমাজ। অভিযোগ রয়েছে প্রথম প্রথম সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রকরা স্কুল-কলেজ পড়ুয়া কোমলমতি শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে মাদক সেবন ও জুয়ায় উদ্বুদ্ধ করতে ভিন্ন ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে। যদিও সর্বশেষ পুলিশ মাদক ও জুয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা জানালেও দৃশ্যমান পরিস্থিতিতে খানিকটা অসহায় হয়ে পড়েছেন সচেতন অভিভাবক মহল।
অনুসন্ধানকালে স্থানীয়রা জানায়, কানাইদিয়া-রথখোলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল উপজেলার একেবারেই সীমান্তবর্তী হওয়ায় ওই এলাকায় প্রশাসনের নজরদারি কম থাকায় গোপনে গড়ে তোলা হয়েছে মাদক ও জুয়ার সিন্ডিকেটের বাণিজ্যিক জোন হিসেবে। তাছাড়া ওই এলাকায় একাধিক খেয়াঘাট থাকায় বিভিন্ন কৌশলে সেগুলোকে ব্যবহার করে সীমান্তবর্তী পাইকগাছার কপিলমুনিসহ আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকায় বাইকযোগে মরণ নেশা ইয়াবা,গাঁজা সহ দেশি বিদেশী বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ সাপ্লাই সহ এ সিন্ডিকেট বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছে ব্যবসায়ীরা। তাছাড়া ব্যবসায় সম্পৃক্ত প্রভাবশালী অনেকের কপিলমুনিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকায় মাদক ও জুয়ার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ সহজে করতে পারছেন বলেও সূত্রটি দাবি করেন।
এনিয়ে কয়েকদিন আগে একটি অনলাইন পোর্টালে তথ্যবহুল খবর প্রকাশিত হয়। সেখান মাদক ব্যবসায়ীদের কয়েক জনের নাম উল্লেখ করা হয়। তাদের মধ্যে অন্যতম একজন কানাইদিয়া গ্রামের প্রভাবশালী ব্যক্তি কমল দত্তের ছেলে জয় দত্ত।
নাম না প্রকাশের শর্তে স্থানীয়রা জানায়, বাবার প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে জয় এলাকায় গড়ে তুলেছে মাদকের স্বর্গরাজ্য। এমনকি সে নিজেও একজন মাদক সেবনকারী ও স্বীকৃত জুয়াড়ি। প্রভাবশালী পরিবারের হওয়ায় সে কাউকে তোয়াক্কা করেনা এমনটাই দাবি তাদের।
এমনকি মাদক ও জুয়ার ওই সিন্ডিকেটের সদস্যদের মোবাইল নম্বর ও অনলাইনে মাদকের অর্ডার প্রদান করলে স্থানীয় রথখোলা বাজারস্থ একটি সেলুনির দোকান, ভাড়ায় চালিত জনৈক মোটরসাইকেল চালক সহ অন্যান্য সহযোগীরা বিভিন্ন জায়গায় মাদক পৌছে দেয়। কিছুদিন আগে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনেও এমন তথ্য উঠে আসে।
তাদেরকে নাকি আবার নিয়ন্ত্রণ করে প্রীতম হালদার ওরফে কাম্য নামে জয়ের এক বন্ধু ও সহযোগী। সুযোগ বুঝে একটি আর ওয়ান ফাইভ মডেলের বিলাসবহুল মোটরসাইকেলে চেপে কানাইদিয়া-রথখোলা সহ পাশ্ববর্তী উপজেলা পাইকগাছার কপিলমুনির বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে মাদক দ্রব্য পৌছে দেয় প্রিতম।
এলাবাসীর ধারণা, প্রভাবশালী মাদক কারবারি জয় দত্তরও মাস্টার মাইন্ড আছে। মূলত ধরাছোয়ার বাইরে থেকে গড-ফাদাররা কৌশলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে এভাবেই জয়দের টিকিয়ে রেখে যুব সমাজকে ধ্বংসের পথে ধাবিত করে কৌশলে অবৈধ পন্থায় অর্থ উপার্জনে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে গড়ে তুলেছে অপকর্মের সম্রাজ্য।
স্থানীয়দের দাবি, সংশ্লিষ্ঠদের ম্যানেজ করে অদৃশ্য শক্তিতে ভর করে কানাইদিয়া-রথখোলা এলাকায় গড়ে উঠেছে মাদকের সম্রাজ্য। হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে গাঁজা, হেরোইন, ফেন্সিডিল, ইয়াবা সহ হরেক রকমের মাদক দ্রব্য। যদিও সর্বশেষ এ নিয়ে একটি অনলাইন পোর্টালে তথ্যবহূল একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তার পর থেকেই খানিকটা নড়ে চড়ে বসেছে মাদক ও জুয়া সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণকারীরা। সাংবাদিকদের তথ্য দিয়ে সহায়তা কারীদের বিভিন্ন ভাবে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। এমনকি পারিবারের সহায়তায় তথ্য প্রদানকারীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানি করবেন বলেও প্রকাশ্যে হুমকি প্রদর্শন করে বেড়াচ্ছেন সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রকরা। এমন পরিস্থিতে প্রভাবশালী মাদককারবারিদের ভয়ে খানিকটা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন তারা।
সর্বশেষ যুবসমাজকে রক্ষায় সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে মাদক ও জুয়ার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণকারীদের গ্রেপ্তার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
এব্যাপারে তালা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মোঃ শাহিনুর রহমান জানান, মাদক ও জুয়ার বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের নির্দেশে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করা হয়েছে। মাদক নির্মুল ও জুয়া বন্ধে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রাখবেন বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

Discussion about this post