মাহাবুল ইসলাম, গাংনী, মেহেরপুর: মেহেরপুরের অধিকাংশ এলাকায় চলছে ধান কাটামাড়াইয়ের কাজ। তীব্র তাপদাহের মধ্যেও কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন ধানের আটি বাঁধা, পালা কিংবা হাঙ্গা দেওয়া নিয়ে। কেউ কেউ ধান কর্তনের পর তা মাড়াই করা নিয়েও ব্যস্ত রয়েছেন।
রোববার (১১ মে), সকাল থেকে বিকেল অবধি মেহেরপুর সদর, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন দৃশ্য চোখে মেলে। আগাম আবাদকৃত ধান কর্তন শুরু হলেও কর্তনের জন্য আরো কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে (নামলা) এমন জমির পরিমাণও কিন্তু কম নয়।
গাংনী উপজেলার আজান গ্রামের কৃষক তৌহিদুল জানান, যদিও এবার ধানের জমিতে পোকামাকড়ের উপদ্রব বেশি ছিল। তবুও মোটামুটি ভালো ফলন হয়েছে। বিঘা প্রতি জমিতে ১০/১২ হাজার টাকা খরচ করে প্রায় ৩০ মণ ফলন পাওয়া সম্ভব বলে আশাবাদী তিনি।
মুজিবনগর উপজেলার বল্লভপুর গ্রামের দিলিপ জানান, তিনি ২ বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন। সার, সেচ, কীটনাশক মিলে বেশ কিছু টাকা খরচ হয়েছে। নিজেই পরিশ্রম করে থাকেন সেক্ষেত্রে ধান চাষ লাভজনক হবে তিনার জন্য।
অপর এক কৃষক জানান, প্রতি বছরে বিঘা প্রতি জমি বর্গা নিতে ৪০ হাজার টাকা গুনতে হয়। আর সেচের জন্য গুনতে হয় ৫ হাজার টাকা। যদিও বছরে ৩ বার ধানের আবাদ করা হয় কিন্তু সার ও কীটনাশকের মূল্য বৃদ্ধিতে তেমন একটা লাভবান হওয়া সম্ভব না।
মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের কৃষক গোলাম জানান, ইতিপূর্বে ধান চাষে তেমন একটা লাভ না হলেও এখন কিছুটা লাভের মুখ দেখা যাচ্ছে। তবে কৃষি বিভাগ থেকে কোনরকম পরামর্শ ও সহযোগিতা পাওয়া যায় না।
এদিকে এসব ধান কর্তনে বিঘা প্রতি জমিতে ৫ জন শ্রমিকের দরকার হয় এবং মজুরী নেওয়া হয়ে থাকে ৭’শ টাকা বলে মুজিবনগর এলাকার কয়েকজন শ্রমিকের সাথে আলাপকালে জানা যায়। তবে এলাকাভেদে কিছুটা তারতম্য রয়েছে। মেহেরপুর সদর ও গাংনী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মজুরি ৫/৬’শ টাকা নেওয়া হয়ে থাকে। কোথাও কোথাও বিঘা চুক্তিতেও ধান কর্তন করা হয়ে থাকে। ধান কর্তনে প্রতি দলে ১৮/২০ জন সদস্য থাকে।
এরা মূলত: ধান কর্তন, আটি বাঁধা, বহন করে থাকে। শুকনা এলাকায় ট্রাক্টর, ট্রলি, আলগামনসহ অন্যান্য যানবাহনে ধান বহন করা হয়ে থাকে। মাড়াই কাজ মেশিনে হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবছর জেলায় প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে।

Discussion about this post