ইরফান উল্লাহ, ইবি :
সম’কামিতা, যৌ’ন হয়রানি, শিক্ষার্থী হেনস্তাসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত ইবি শিক্ষক হাফিজকে চাকরি থেকে অপসারণ করায় শিক্ষার্থীরা আনন্দ উৎসব ও মিষ্টি বিতরণ কর্মসূচি পালন করেছে। মঙ্গলবার (০১ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়না চত্বরে এ কর্মসূচি পালন করে তারা। এসময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন শ্লোগান ও পরষ্পরের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করেন।
গত সোমবার (৩০ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এই বিষয় নিশ্চিত করা হয়।
এতে বলা হয়, হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পর্যালোচনা করে গত ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২৬৬ তম সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির (4) i (b) ও (৫) ধারা অনুযায়ী তাকে বাৎসরিক একটি ইনক্রিমেন্ট/ধাপ বাতিল করা হয় এবং তাকে সিন্ডিকেট সভার তারিখ থেকে এক বছরের বাধ্যতামূলক ছুটি প্রদান করা হয়।
সেই সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানালে তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২৬৭ তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিষয়টি পুনরায় ব্যাপক তদন্তের জন্য গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ গত ৩১ মে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২৬৮ তম (সাধারণ) সভার ০৭ নং সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী তদন্তের আলোকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও শৃঙ্খলার স্বার্থে তার এসব কর্মকান্ড ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির চরম পরিপন্থি। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির ৪(১) (F) ধারা মোতাবেক তাকে ৩১ মে থেকে চাকরি হতে অপসারণ করা হয়।
বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা আমাদের দাবিতে অবিচল ছিলাম। হাফিজের স্থায়ী বহিষ্কারের বিষয়ে কোনো আপস করিনি। অবশেষে প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে আমরা স্বস্তি পেয়েছি। আমরা অত্যন্ত খুশি, যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।আজকের দিনটি আমাদির জন্য তৃতীয় ইদের মত। এটি আমাদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফসল।
তারা আরও বলেন, ক্যাম্পাসে হাফিজের মতো আরও অনেকে রয়েছে যারা নানাভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন করে আসছে। আমরা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাই, তারা যেন সেসব ঘটনারও সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানী, সমকামিতা, শিক্ষার্থী হেনস্তা, আপত্তিকর মন্তব্য, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, দাড়ি থাকলে শিবির ট্যাগ দিয়ে হেনস্তা, ইচ্ছাকৃতভাবে ফলাফল খারাপ করে দেওয়া, ছাত্রলীগের মিছিলে যেতে বাধ্য করা সহ ২৭ দফা অভিযোগ তুলে অব্যাহতির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক আটকে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ করেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এছাড়াও তার কুশপুত্তলিকায় জুতা নিক্ষেপ ও কুশপুত্তলিকা দাহ করে শিক্ষার্থীরা। পরেও তারা ওই শিক্ষকের স্থায়ী চাকরিচ্যূত করার দাবিতে বিক্ষোভ সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য //

Discussion about this post