নোয়াখালী প্রতিনিধি: নানান অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের অনুমোদনহীন কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো.জাহেদ আলম ও দুদকের কোর্ট পরিদর্শক মো. ইদ্রিস নেতৃত্বে এই অভিযান চালানো হয়।
অভিযোগ রয়েছে,২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের নিজস্ব ল্যাব থাকলেও সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা না করে কিউনি ডায়ালাইসিস ইউনিটে স্বতন্ত্র ভাবে আরেকটি ল্যাব পরিচালনা করা হয়। একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা ডায়ালাইসিস,ক্যাথেটার ও ফিস্টুলা করার কথা থাকলেও এখানে তা করে টেকনেশিয়ান ইসমাইল। সরকারি ভাবে নির্ধারিত ফিস ৫০০শত টাকা হলেও ডায়ালাইসিস ইউনিটে কাথেটার করতে নেওয়া হয় ২ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে এবং ফিস্টুলা করতে হয় ৬হাজার টাকা দিয়ে। যে টেস্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ৭শত টাকা নেওয়া হয়, একই টেস্ট কিডনি ল্যাবে ১৪শত টাকা আদায় করা হয়। এভাবে প্রতিমাসে এই ইউনিট থেকে কমপক্ষে ২০ লক্ষ টাকা অবৈধ ভাবে আয় হয়। যার ভাগ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরীসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির কাছে খাম করে পৌঁছে যায়। এ সকল অবৈধ কাজ নিয়ন্ত্রণ করে ডা. মামুন পারভেজ। ডা.মামুন পারভেজ একজন সরকারি বেতনভুক্ত কর্মচারি হওয়া স্বত্ত্বেও কিউনি ইউনিট থেকে প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা করে নিয়ে আসছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর ডা.ফজলে এলাহী খানের তদবিরে দীর্ঘ সময় ধরে সে ডায়ালাইসিস এসব অপকর্ম করে আসছে। ডা.মামুন নামের পাশে ভুয়া ডিগ্রি ব্যবহার করেন এবং ৬০০ টাকা ভিজিটে কিডনি বিশেষজ্ঞ পরিচয়ে বাহিরে চেম্বার করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ডা.ফজলে এলাহীর মুফোঠোনে একাধিকবার কল করা হলে সংযোগ পাওয়া যায়নি। তাই এ বিষয়ে তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের ডা.মামুন পারভেজ অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন,মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এই কিডনি ইউনিট চালানো হচ্ছে। এই ক্ডিনি ইউনিট বন্ধ হলে অনেক সাধারণ রোগী ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এখানে কোন দুর্নীতি হয়না। আমি এখন বাহিরের চেম্বারে কোন রোগী দেখিনা।
তবে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ অসত্য।
অভিযানের পর এক দুদকের নোয়াখালী কার্যালয়ের কোর্ট পরিদর্শক মো. ইদ্রিস সাংবাদিকদের বলেন, বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি অভিযান পরিচালনা করা হয়। আজকে আমরা বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শন করেছি। কিছু বিষয়ে আমরা অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। এ বিষয় গুলোর আমরা কাগজপত্র সংগ্রহ করেছি। এগুলো প্রতিবেদন আকারে প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করব।

Discussion about this post