ইরফান উল্লাহ, ইবি :ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দুইদিন ব্যাপী ‘বৈশাখীয়ানা উৎসব’ উদযাপন করা হয়েছে।
বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ উপলক্ষে গ্রামীণ হালখাতার ঐতিহ্যকে ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বপ্নবিতান-ইবি পরিসর’ এ আয়োজন করে।
গত রবিবার (২০ এপ্রিল) ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহণে এ আয়োজন উৎসব উদযাপিত শুরু।
প্রাচীন বাংলার গ্রামীণ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য, তরুণ উদ্যোক্তা গড়তে বিভিন্ন স্টল বরাদ্দসহ
বটগাছ কেন্দ্রিক যে মেলার প্রচলন ছিল তা বটতলায় উন্মুক্ত মঞ্চের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছে সংগঠনটি।
সরেজমিনে দেখা যায়, সুতির পরশ,পাতে বাঙালিয়ানা, রূপরত্ন, মাচাং রসনা বিলাশসহ ২২টি স্টলে তরুণ উদ্যোক্তারা কুষ্টিয়ার ঐতিহ্যবাহী তাতেঁর লুঙ্গি, পান্তাভাত, পিজ্জা, জিলাপি, তিলের খাজা, মিষ্টি, আচার, লুচি ও পায়েসসহ নানা খাবার বিক্রি করছেন। এছাড়া বই, ক্যালিগ্রাফি, ফেসওয়াশ, বডিস্প্রে, চুড়ি, কানের দুল, গলার হারসহ মেয়েদের বিভিন্ন উপকরণ বিক্রি করতে দেখা যায়।
এছাড়া নজরকারা নাগরদোলা, চরকি, পল্লীগীতি ও বাউল গানসহ নানা লোকজ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা পরিবেশকে উৎসবমুখর করে রাখে।
আল ফিকহ্ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী বলেন, স্বপ্নবিতানের এই বৈশাখীয়ানা উৎসবে এসে আমরা আমাদের ছোটবেলার স্মৃতি পুনরায় স্মরণ করতে পারছি। ছোটবেলায় আমরা যেমন বৈশাখী মেলায় যেতাম এখানে এসেও তেমনি মেলার উৎসব আনন্দ উপভোগ করছি। মেলায় নাগরদোলা, মিষ্টির দোকান, বিভিন্ন খেলার মাধ্যমে একটি উৎসবের আমেজ ফুটে উঠতো, স্বপ্নবিতান এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সেই উৎসবের আমেজ ফিরিয়ে এনেছে। আমরা সকলে উৎসবমুখর পরিবেশে মেলার আনন্দে মেতে উঠছি। বাঙালির একটি চিরায়ত স্মৃতি এই বৈশাখী মেলা।
স্বপ্নবিতান ইবি পরিসরের আহ্বায়ক আরিফা ইসলাম ভাবনা বলেন, প্রথমবারের মতো এ আয়োজনে আমরা আমাদের বাঙালির ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি তুলে ধরতে নাগরদোলা, চরকির ব্যবস্থা করেছি। আমরা হালখাতার প্রচলনে প্রতিটি স্টলে টোকেনের মাধ্যমে হালখাতা পদ্ধতিতে বেচাকেনার ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া বটতলা কেন্দ্রিক মঞ্চ
তৈরি ও সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আমাদের প্রাচীন বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্যের মূর্তপ্রতীক হিসেবে ভূমিকা রেখেছে।
এ আয়োজনের উদ্দেশ্য নিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা শিক্ষার্থীরা বর্তমানে আধুনিক সমাজে বসবাস করি। আমরা বটতলা কেন্দ্রিক গান, নাগরদোলা ও চরকিতে চড়া
এমন মেলা দেখতে অভ্যস্ত না। তাই এই বিষয়গুলো তুলে ধরার জন্য এ উৎসবের আয়োজন করেছি।

Discussion about this post