সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে এমআরআই-সিটিস্ক্যানে দিন দিন বাড়ছে সিরিয়ালের ভোগান্তি। গত দুই বছরে প্রায় ৪০ হাজার মানুষকে এমআরআই ও সিটিস্ক্যান সেবা প্রদান করেছে ওসমানী হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগ। তবু রোগীদের চাহিদা কমেনি। সিরিয়াল সংকট শুধুই বাড়ছে। আর বিপুল রোগীর মানুষের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন এ বিভাগে কর্মরতরা।
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এ হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগে এমআরআই মেশিন উদ্বোধন করেন। এরপর থেকে হাসপাতালের এ বিভাগে ভীড় বাড়ে রোগীদের। এ পর্যন্ত বন্যার সময় ১৫/২০দিন ছাড়া আর সব দিনই এ বিভাগের কার্যক্রম চলেছে বলে জানালেন সেখানে কর্মরত অনেকেই। তারা জানান, সপ্তাহের সব দিনই এমআরই ও সিটি স্ক্যান করা হয়। গড়ে প্রায় প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ জন রোগীর এমআর আই করা হয়। ৫০টি সিটিস্ক্যান করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,বেসরকারী হাসপাতালে এমআরআই করতে ১২ হাজার টাকা লাগে। আর ওসমানী হাসপাতালে লাগে ৩ হাজার টাকা। ফলে দরিদ্র রোগীরা সেবা নিতেই এ হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালের প্রায় সব ওয়ার্ড থেকেই এ বিভাগে রোগী পাঠানো হয়। বিশেষ করে নিউরো,অর্থোপেডিক বিভাগের রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশী। কারণ মাথায় আঘাত, ব্রেইনের সমস্যা, হাড়ে আঘাতসহ মেডিসিন বিভাগের রোগীদের এখান থেকে বিভিন্ন পরীক্ষা করানো হয়। অধিক সংখ্যক রোগীকে সেবা দেয়ার মতো মেশিন নেই এখানে। জনবলও কম। তাই ইচ্ছে থাকলেও অধিক সংখ্যক রোগীকে তারা সেবা দিতে পারছেন না।
মঙ্গলবার এমআরই করতে আসা আব্দুল গফ্ফার নামের এক রোগী জানালেন, তার বাড়ী দোয়ারা বাজারে। তিনি গত বৃহস্পতিবার ভর্তি হয়েছেন। আজ ( গতকাল) এমআর আই করতে এসেছেন। তিনি সিরিয়াল জটিলতায় নয়, তাঁর রোগ নির্ণয়ে দেরী হওয়ায় এমআরআই দেরীতে হচ্ছে।
শিপ্রা রানী নামের এক মহিলা দিরাই থেকে এসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তিনি জানান, তার পিত্তথলিতে পাথর ধরা পড়েছে। এ জন্য সিটিস্ক্যান করতে ডাক্তাররা পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রচুর ভীড় , দীর্ঘ লাইন। অনেক ভোগান্তি , তারপরও কম ফি’তে পরীক্ষা করা যায়। তাই এখানে আসা।
শাহনুর নামে এক ব্যক্তি জানালেন,এমআরআই করতে গেলেই সংশ্লিষ্টরা বলেন, সিরিয়াল নিন। দেরী হবে। এ কারণে একজন রোগীকে নিয়ে তো আর আমরা বসে থাকতে পারিনা।
এ প্রসঙ্গে রেডিওলজি মেডিকেল টেকনোলজিস্ট বিএম নাছির উদ্দিন বলেন, একেকটা এমআর করতে ২৫ /৩০ মিনিট লাগে। কোনো কোনো এমআরআই করতে সোয়া দুই ঘন্টা পর্যন্ত সময় লাগে। অনুরূপ জটিল রোগীদের জন্য অনেক সময় সিটিস্ক্যানেও সময় লাগে। অনেক সময় রোগীকে খালি পেটে আসতে হয়। অনেকে না বুঝে ভরা পেটে চলে আসেন। ফলে বিভ্রান্তি ছড়ায়। বিশেষ করে আমরা যখন রোগীদের সিরিয়াল দিতে পারি না, তখন অনেকে বলে এমআরই বন্ধ। মুলত বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালরা এ ধরণের বিভ্রান্তি ছড়ায়। তিনি আরও জানান এখানে প্রত্যেকটি স্বাস্থ্যকর্মী দিবারাত্রি সেবা দেন। এখানে কোনো বিরতির সুযোগ নেই। সময়ের চাহিদায় আরও জনবল এবং মেশিনপত্র প্রয়োজন।

Discussion about this post