নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় ২০২৫ এ কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে কুষ্টিয়া কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন সংবাদ সম্মেলন করেছে।
কুষ্টিয়া কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন ১২ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুরে সানআপ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি মোঃ আতিকুল গনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইউসুফ আলী, আলোর মিছিল স্কিল ডেভেলপমেন্ট স্কুলে শিক্ষক মোঃ আব্দুল্লাহিল বাকি, সুজনশীল মডেল স্কুলের শিক্ষক মোঃ সাইদুল ইসলাম, এডুকেয়ার আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক ইসতিয়াক আহামেদ, রয়েল এক্সিড স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক মোঃ বেনজির হোসেন, রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলের শিক্ষক ফারজানা আক্তার, সবুজ কানন প্রিপারেটরি স্কুলের শিক্ষক ইয়াসমিন তারা, ধুমকেতু আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষক নুরজাহান ইসলাম, নতুন কুঁড়ি টিউটোরিয়ালের শিক্ষক সোহেলী পারভীন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে না পারলে যে মানসিক চাপ ও যন্ত্রণার শিকার হবে তার দায়দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ১৫ জুলাই ২০২৫ তারিখের নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১৭ জুলাই ২০২৫ এ জারিকৃত পরিপত্রের মাধ্যমে জানতে পারি যে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষায় যুগান্তকারী ও সময়োপযোগী অবদান রাখা কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার পরিপত্রটি বৈষম্যমূলক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা এবং ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত বৃত্তি পরীক্ষায় স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান থেকে অংশগ্রহণের মাধ্যমে কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে।
বৃত্তি শুধু একটি আর্থিক অনুদান নয়-এটি একটি শিশুর আত্মবিশ্বাস, সামাজিক স্বীকৃতি এবং শিক্ষাক্ষেত্রে অগ্রগতির অনুপ্রেরণা। যখন একটি শিশু দেখবে তার বন্ধুরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে কিন্তু সে নিতে পারছে না শুধুমাত্র তার বিদ্যালয়ের স্বীকৃতির ধরণ ভিন্ন বলে, তখন তার মনোবলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এটি শিশুদের মধ্যেই একটি বৈষম্যমূলক মনোভাব গড়ে তোলে, যা জাতীয় শিক্ষানীতির সাম্যের নীতির পরিপন্থী। বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যদি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারে শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের উপর যে মানষিক চাপ ও যন্ত্রণার সম্মুখীন হয় তার সকল দায় দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষা মানে কেবল স্বাক্ষরতা নয়। ভবিষ্যতের জন্য একটি শক্ত ভিত গড়ে দেওয়া। সেই ভিত গড়ার প্রথম ধাপেই যদি বৈষম্য শুরু হয়, তাহলে আমরা কিভাবে সমতার সমাজ গড়বো?
শিক্ষা শিশুদের মৌলিক অধিকার। কোন শিশুকে তার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা আমাদের কারোরই কাম্য নয়। জুলাই বিপ্লবে বৈষম্যের বিরুদ্ধে অনেক শিক্ষার্থীর আত্মত্যাগের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত বর্তমান বৈষম্য বিরোধী সরকার। বিধায় বর্তমান সরকারের সময়ে কিন্ডারগার্টেনের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আবার সেই বৈষম্যের শিকার হোক এটা অপ্রত্যাশিত।
অতএব, বিগত ১৭-০৭-২০২৫ তারিখের পরিপত্রটি বাতিল করে ২০২৫ এ অনুষ্ঠিতব্য প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা সহ প্রাথমিক শিক্ষার জন্য গৃহীত অন্যান্য যেকোনো কার্যক্রমে প্রাথমিক শিক্ষায় অংশীজন হিসেবে কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সমঅধিকার যেন অক্ষুন্ন থাকে তার প্রতি সদয় দৃষ্টি দানের জোর দাবি জানিয়েছেন।

Discussion about this post