ছাব্বির কুমারখালীঃ
কুষ্টিয়ার খোকসাতে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ায় হামলার শিকার ও ঘরবাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার রাত ১০ টার দিকে উপজেলার জানিপুর ইউনিয়নের বহরমপুর গ্রামে এঘটনা ঘটে।
এতে বহরমপুর গ্রামের মঞ্জেল আলী মোল্লা (৫৫) ও তাঁর স্ত্রী ময়না খাতুন (৫০) নামের দুইজন আহত হয়েছেন। ভাংচুর করা হয়েছে অন্তত চারটি ঘরবাড়ি।
হামলা ও ভাংচুরের শিকার হওয়া পরিবার সুত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন (ইউপি) কে কেন্দ্র করে ৬ নং ওয়ার্ডের জয়ী মেম্বর শামীম রেজা ও পরাজিত দুই মেম্বর মিল্টন এবং তাঞ্জিল মোল্লার সাথে বিরোধ চলছিল। শামীম মেম্বর ও তাঁর সমর্থকরা নৌকার পক্ষে ভোট করেন। আর মিল্টন ও তাঞ্জিল মেম্বর ও তাঁর সমর্থকরা বিদ্রোহী প্রতীকে ভোটের কার্যক্রম পরিচালনা করেন। ভোটে নৌকা প্রতীককে পরাজিত করে আনারস প্রতীকের বিজয় হয়।
আরো জানা গেছে, বিজয়ের পর থেকেই মিল্টন ও তাঞ্জিল মেম্বরের সমর্থকরা বেপরোয়া হয়ে উঠে। নানা সময়ে নৌকার সমর্থকদের উপর হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে আসছিল। এরই জের ধরে শনিবার রাতে হঠাৎ নৌকার সমর্থকদের উপর হামলা চালায় দুই পরাজিত বিদ্রোহী প্রার্থী সমর্থিত দুই মেম্বর ও তাঁদের সমর্থকরা। এতে মঞ্জেল আলী মোল্লা ও তাঁর স্ত্রী ময়না খাতুন হাত, মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে প্রতিবেশিরা উদ্ধার করে খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এছাড়াও এসময় সাদেক মোল্লা, সোনাই মন্ডল, মজিবর মোল্লা ও মঞ্জেল আলী মোল্লার বাড়িতে ভাংচুর করা হয়।
তবে অভিযুক্ত মেম্বর ও পুলিশ দাবি করেন ইউপি নির্বাচন নয়, ডিস লাইনের ব্যবসাকে কেন্দ্র করে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।
এ বিষয়ে আহত মঞ্জেল আলী মোল্লা বলেন, আমরা নৌকায় ভোট দিয়েছিলাম। তাই আনারস মার্কার সমর্থক মিল্টন ও তাঞ্জিল মেম্বর ও তাঁর লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রাতের আধারে হামলা চালিয়েছে। আমার স্ত্রীকে ছাড়িনি।
ভাংচুরের শিকার সোনাই মন্ডল ও সাদেক মোল্লা বলেন, নৌকার পক্ষে ভোট করায় এখন কাল হয়েছে দাড়িয়েছে। বিজয়ী বিদ্রোহী চেয়ারম্যানের লোকজন ঘরবাড়িতে ভাংচুর করেছে। এলাকায় বাস করায় দায় হয়ে পড়েছে।
৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও মেম্বর (ইউপি সদস্য) শামীম রেজা বলেন, আমি ও আমার লোকজন দলীয় প্রতীকে ভোট করেছি। বিদ্রোহী প্রার্থীর লোকজন হুমকি ধামকি দিলেও দলের বাইরে যায়নি। তবুও নৌকার পরাজয় হয়েছে। শনিবার রাতে হঠাৎ হামলা চালায়। এতে আমার দুইজন আহত হয়েছে। চারজনের ঘরবাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে।
৬ নং ওয়ার্ডের পরাজিত মেম্বর মিল্টর ও তানজির বলেন, ‘ ভোট নয়, ডিসলাইনের ব্যবসবাকে কেন্দ্র করে নিজেরা নিজেরা হামলা ও ভাংচুর করেছে। এখন আমাদের নামে মিথ্যে অভিযোগ করছে।’
নৌকা প্রতীকে পরাজিত চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ আহত ও ভাংচুরের শিকার সবাই আমার সমর্থক। আনারস মার্কার চেয়ারম্যানের লোকজন এমন ঘৃণিত কাজ করেছে। মামলা করা হবে।’
জানিপুর ইউনিয়ন পরিষদের বে-সরকারি ভাবে নির্বাচিত চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মজিদ বলেন, ‘ কে কার পক্ষে ভোট করেছে তা জানা নেই। তবে শুনেছি ডিসলাইনের ব্যবসা নিয়ে ঝামেলা। ‘ খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, নির্বাচন নয়, ডিসলাইনের ব্যবসা নিয়ে দুপক্ষের বিরোধ। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। অভিযোগ পাওয়া গেছে। ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
দৈনিক দেশতথ্য//এল//

Discussion about this post