সরকারের প্রতিশ্রুতির উন্নয়নের ছোয়া লাগলেও অবহেলিত রয়ে গেছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের মাইলমারী গ্রাম। গ্রামের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রায় ডজন খানেক নেতা নির্বাচন পূর্ব মূহুর্তে সম্ভাব্য সংসদ সদস্য, চেয়ারম্যানদের গ্রামে এনে উন্নয়নের নামে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকলেও তা আজ প্রশ্নবিদ্ধ। দীর্ঘদিন প্রতিক্ষার পর বিদ্যুৎ ও কয়েকটি রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হলেও এখন রাস্তাঘাটগুলির বেহাল অবস্থা।
মাইলমারী মন্ডলপাড়া-সর্দারপাড়া, সর্দারপাড়া-গোরস্থান, লক্ষ্ণীনারায়নপুর-হিন্দা, মাইলমারী-কুলবাড়ীয়া সড়কসহ বিভিন্ন অলিগলির রাস্তাগুলোর অধিকাংশ ভেঙে চলাচলের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাছাড়া মাইলমারী গ্রামের অলিগলি ও মাঠের কয়েকটি রাস্তার কাজ শুরু হলেও তা গন্তব্যস্থল পর্যন্ত পৌঁছায়নি।
মন্ডলপাড়া থেকে সর্দারপাড়ার রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শতশত মানুষ ও যানবাহন চললেও তা ভেঙে হারিয়ে যাওয়ায় এখন অন্যের জমির উপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। যাতে করে ক্ষতিগ্রস্হ হচ্ছে জমির মালিক। এদিকে একটু বৃষ্টি হলেই গোরস্থানের রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সুতরাং মরদেহ নিয়ে যেতে পিছলে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকলেও বাধ্য হয়ে যেতে হয়। মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন গোরস্থানে সৌরবিদ্যুতের আলোর ব্যবস্থা করা হলেও পিছিয়ে রয়েছে মাইলমারী গ্রাম।
কাথুলী ও তেঁতুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের বেশ কিছু সড়কে উন্নয়নের কাজ হলেও সরকারের এত উন্নয়নের মাঝেও রয়েছে হতাশার গল্প। কিছু নামধারী নেতা সরকারের উন্নয়নের নাম করে নিজের পকেট ভারী করার অভিযোগ রয়েছে অসংখ্য।
এলাকাবাসী জানান, মাইলমারী গ্রামে কিছু সড়ক নির্মাণ করা হয়েছিল কিন্তু রাস্তাগুলো সংস্কার করা হয়নি বহুদিন। তাই বৃষ্টি এলে উক্ত রাস্তা হাটার অযোগ্য হয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যেতে পড়তে হয় ভোগান্তিতে আর কোনো রোগীকে গাড়ি দিয়ে নেওয়ার কথা তো স্বপ্ন এখানে। মাইলমারী মন্ডলপাড়া-সর্দারপাড়া সড়কে এমন কোন দিন নেই যে দু’চারজন মোটরসাইকেল ও পাখিভ্যান আরোহী তাদের যানবাহন নিয়ে পুকুরে পড়েনা। বাইসাইকেল নিয়ে পুকুরে পড়ার কথা বাদই দিলাম। কালের বিবর্তনের সাথে সব কিছুই পাল্টেছে শুধু একই রয়েছে মাইলমারী গ্রামের রাস্তার চিত্র। তাহলে সরকারের এত উন্নয়নের টাকা যায় কোথায় এমনটাই প্রশ্ন স্থানীয় এলাকাবাসীর।
তিনারা আরো জানান, অনেক নেতাই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কিন্তু উন্নয়ন হয়নি মাইলমারী গ্রামের।
গ্রামের অনেকেই জানান, মেহেরপুর সদর উপজেলা ও গাংনী উপজেলার শেষে কাথুলী ইউনিয়ন। তাছাড়া তেঁতুলবাড়ীয়া ও কাথুলী ইউনিয়নের একেবারে শেষ প্রান্তে মাইলমারী গ্রামের অবস্থান হওয়ায় অবহেলিত রয়েছে গ্রামটি।
গ্রামবাসীরা আরও জানায়, ঐতিহাসিক মুজিবনগর তথা মেহেরপুরে রয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ পদে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন এমপি এবং গাংনীতে আওয়ামী লীগেরই আরেকজন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন এমপি। যিনাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় জেলায় উন্নয়নের জোয়ার চলছে। তবে কেন থেমে রয়েছে মাইলমারীর উন্নয়ন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য কাবের আলী জানান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ ইউনিয়ন পরিষদ কে অবহিত করা হয়েছে। বর্ষা মৌসুম শেষে রাস্তাগুলোর উন্নয়ন কাজ শুরু হবে ইনশাআল্লাহ।
কাথুলী ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, মাইলমারী গ্রামের সড়কগুলোর পাশে অসংখ্য পুকুর রয়েছে। পুকুরের পাড় বাঁধার দায়িত্ব পুকুর মালিকদের। পুকুরের পাড় না বাঁধার কারণেই সড়কগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তবে সড়কগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান।
গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি বলেন, আমি গ্রামের উন্নয়নে যথেষ্ট চেষ্টা করেছি। যার কারণে অসংখ্য সড়কের উন্নয়নও হয়েছে। তাছাড়া নতুন আরো কিছু সড়ক, মসজিদ ও মাইলমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আধুনিক ভবনের জন্য চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ কাজগুলোও যথাসময়ে শুরু হবে বলে জানান।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//সেপ্টম্বর ১৬,২০২২//

Discussion about this post