চার বছর আগে (২০১৮ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি) তৎকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর একটা আর্টিকেল লেখেছিলাম।
সময়ের ব্যবধানে ওই লেখার আগাম চিন্তা কতটুকু প্রতিফলিত হয়েছে তা জানার আগ্রহে কলামটি পূণঃপ্রকাশ করলাম। আশাকরি আমার লেখার পাঠকরা নিশ্চয়ই মন্তব্য দিয়ে উৎসাহিত করবেন।
সেই সময়ে ওই লেখার শিরোনাম ছিল-
“বিদায় হতে যাচ্ছে সহিংস আন্দোলন! শুরু হয়েছে স্নায়ু যুদ্ধ”
৮ ফেব্রুয়ারি (২০১৮) একটি মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার সাজা হয়েছে। ওই দিন ব্যাপক সহিংসতা হবে এমনটাই ছিল সবার শঙ্কা। আশ্চর্য হলেও সত্য সেই দিন সেই আশঙ্কার বিচ্ছুরণ কোথাও ঘটেনি।
অভিজ্ঞতা বলে বিএনপি এত শান্ত প্রকৃতির দল নয়। কেউ কেউ বলছেন সহিংস আন্দোলন করার ক্ষমতা বিএনপির নেই। এর সাথে একমত হওয়া যায়না। কারন, তাদের সাংগঠনিক শক্তি মোটেও উপেক্ষণীয় নয়।
বাস্তবতা বলছে রাজপথের সহিংস আন্দোলন বহু আগেই হারিয়েছে জন সমর্থন। জনগণ হরতাল ও জ্বালাও পোড়াও রাজনীতি পছন্দ করে না। এই বিষয়টি উপলদ্ধি করেই বিএনপি আন্দোলনের কৌশল পাল্টে ফেলেছে। এরই অংশ হিসেবে তারা পরিকল্পিত ভাবেই অহিংস নীতি অনুসরণ করেছে।
তাদের অহিংস আন্দোলন করার কৌশল না বুঝেই আওয়ামী বলয়ে আনন্দের সুর লহরী বেজে উঠেছিল। খালেদা জিয়ার জেলে যাওয়াকে ইঙ্গিত করে “আজ কোথায় সে” বলে দেওয়া শেখ হাসিনার একটি বক্তব্য “কোথায় সেই সিরাজ শিকদার ” দম্ভোক্তির সাথে মিলে যায়।
এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। এই বক্তব্যের কুফল শেখ হাসিনা এবং সুফল খালেদা জিয়ার ঘরে উঠেছে। বিষয়টি বুঝতে পেরে শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি জনগণের সহানুভূতি পায় এমন কোন বক্তব্য দেয়া যাবেনা।
সহিংসতা না করে বিএনপি নেতা কর্মীরা আন্দোলনের নতুন কৌশল বাস্তবায়নে খালেদা জিয়াকে যেভাবে এগিয়ে দিয়েছে ঠিক একই ভাবে শেখ হাসিনার নির্দেশ মেনে আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীরা বিএনপির নতুন কৌশল রুখে দিতে পেরেছে।
দুই বৃহৎ দলের এই তৎপরতার মধ্য দিয়ে বোধ হয় বিদায় হতে যাচ্ছে সহিংস আন্দোলন। আর এরই সাথে রাজনীতিতে শুরু হয়ে গেছে স্নায়ু যুদ্ধ।
গায়ের শক্তি বা আন্দোলনে বিএনপির জনসমর্থন নেই একথা বিশ্বাস করা মূর্খামি। একথা বলে কারো বিরাগভাজন হতে চাই না। বিএনপির সবই আছে। তারা রয়েছে সময়ের অপেক্ষায়। যতদিন যাচ্ছে সময় তাদের জন্য তত নিকটবর্তী হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
উপরের এই লেখার বাস্তবতা কি তা কারো অজানা নয়। এই মন্তব্যের কতটা প্রতিফলন দেখা গিয়েছে তা নিশ্চয়ই বলার অপেক্ষা রাখেনা।
লেখক: জাতীয় পর্যায়ের সিনিয়র সাংবাদিক।

Discussion about this post