নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার হরণী ইউনিয়ন জিয়া মঞ্চের সভাপতি জামসেদুল ইসলাম ওরফ টুটুলকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজিয়ে মিথ্যা প্রচারণার প্রতিবাদ সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
রোববার (২৭ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় নোয়াখালী প্রেসক্লাবের শহীদ উদ্দিন এস্কান্দার মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হরণী ইউনিয়ন জিয়া মঞ্চের সভাপতি জামসেদুল ইসলাম।
বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, তিনি ২০০৮ সাল থেকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। ২০১২ সালে তিনি হরণী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। যা দুই মেয়াদে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বহাল ছিল। তৎকালীন ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিটি দলীয় কর্মসূচিতে তিনি রাজপথে সক্রিয় ছিলেন।
জামসেদুল ইসলাম উল্লেখ করেন, ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় অবস্থা দেখে তৎকালীন হাতিয়ার আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর সন্ত্রাসী বাহিনী তাঁর স্থানীয় আলী বাজারের তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেন। তাঁকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে তুলে নিয়ে তাঁর পক্ষে কাজ করতে বাধ্য করে। এক পর্যায়ে ২০১৯ সালে আমার অসম্মতিতে মোহাম্মদ আলীর নির্দেশে হাতে লিখা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক করা হয়। বিষয়টি তিনি জানার পরপরই প্রত্যাখ্যান করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জামসেদুল ইসলাম দাবি করেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি প্রত্যাখ্যান করার পর তাঁর উপর অমানসিক নির্যাতন শুরু করে মোহাম্মদ আলীর লেলিয়ে দেওয়া বাহিনী। তাঁরা তাঁকে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করে। যার প্রেক্ষিতে তিনি টানা প্রায় দুই বছর ঢাকায় অবস্থান করতে বাধ্য হন। এরপর ২০২১ সালের জুন মাসে এলাকায় আসার পর পুণরায় তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়। তারা তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেয় এবং চুল কেটে মাথা ন্যাড়া করে বিএনপির কর্মী বলে হেনস্তা করে। তখন জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান জেলা শহর মাইজদীতে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জামসেদুল ইসলাম দাবি করেন, এত নির্যাতনের পরও তিনি শহীদ জিয়ার আদর্শ এবং জাতীয়তাবাদী দলের রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাননি। বরং প্রতিটি দলীয় কর্মসূচি সফল করেছেন রাজপথে থেকে। এসবের পুরষ্কার হিসেবে তিনি ২০২৩ সালে হাতিয়া উপজেলা জিয়া মঞ্চের স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পান। পরবর্তীতে বিগত চার মাস আগে হাতিয়ার হরণী ইউনিয়ন জিয়া মঞ্চের কমিটি গঠিত হলে তিনি ওই কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন।
জামসেদুল আলম উল্লেখ করেন, জিয়া মঞ্চের ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি হওয়ার পর তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তাঁকে সামাজিকভাবে হেয় করার জন্য উঠে পড়ে লাগেন। তাঁরা তাঁকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমের মাধ্যমে অপপ্রচার চালান। অথচ ২০২২ সালে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সর্বশেষ যে কমিটি হয়েছে, সেখানে তাঁর নাম নাই। তাই তিনি তাঁর বিরুদ্ধে চলা মিথ্যা অপপ্রচারের তীব্র প্রতিবাদ জানান। সেই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা না পেলে তাঁকে পুণরায় স্ব-পদে বহাল রাখার জন্য জিয়া মঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে আহ্বান জানান।
সংসাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হরণী ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি আবুল কাশেম, ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের জিয়া মঞ্চের সদস্য মো. আশরাফ আলী, হরণী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন, যুবদলের সদস্য মো. রাশেল প্রমুখ।

Discussion about this post