ভারত থেকে গরু না আসলে কাঙ্খিত মূল্য পাবেন বলে তারা আশাবাদী
কোরবানী উপলক্ষ্যে একটু বেশি দামের আশায় খামারী ও বেপারীরা তাদের পশু নিয়ে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন হাটের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। প্রতিদিন শতাধিক গাড়ি বোঝায় গরু ও ছাগল ঢাকায় নিচ্ছেন বেপারীরা ও খামারীরা।
আবার কয়েকজন গৃহস্ত একত্রে মিলে ট্রাকে করে নিচ্ছেন তাদের পশুগুলোকে। বেচা কেনা না হলেও গরু গুলোকে তরতাজা রাখতে আগে ভাগেই ঢাকার হাটে আড়া দখল করে গরু গুলোর যত্ন নিচ্ছেন খামারী ও ব্যবসায়ীরা। এবার ভারত থেকে গরু না আসলে কাঙ্খিত মূল্য পাবেন বলে আশা করছেন ।
মেহেরপুর প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্যানুযায়ি জেলায় এবার একলাখ ৯০ হাজার পশু কোরবানীর জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে জেলার চাহিদা রয়েছে ৯০ হাজার। নিজেদের চাহিদা মেটানোর পর বাকি পশু তোলা হচ্ছে ঢাকার বিভিন্ন পশু হাটে। বিশেষ করে কমলাপুর, গাবতলী বাড্ডা টঙ্গী শেওড়াপাড়াসহ অন্ততঃ ১১ টি চিহ্নিত পশুহাটে মেহেরপুরের বেপারীরা তাদের পশু বিক্রির জন্য নিয়ে যান। আবার পশু বিক্রি শেষে হাসি মুখে ফিরে আসেন ঈদের আগেই।
খামারিরা জানিয়েছেন, রাস্তাঘাটে যানজট হতে পারে। এই কারণে অনেক সময় গরু নিতে দেরি হয়। দেরির কারনে ট্রাকে থাকা গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে। অনেক গরু মারাও যায়। আবার হাটে জায়গা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এসব বিষয়কে মাথায় রেখে এবার গরু নিয়ে আগেই বের হচ্ছি।
গরুর বেপারী রেজাউল জানান, তিনি এবার ২০০টি গরু কিনেছেন। ১০ গাড়ি গরু ইতোমধ্যে ঢাকার কমলাপুর হাটে তুলেছেন। বাকি গরু নারায়নগঞ্জ ও গাবতলীর হাটে নিবেন। একটু আগে ভাগেই গরু তুলেছেন হাটে। অনেক পথ পাড়ি দেয়ার পর পশুগুলো অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই দুদিন খাবার দিলে সতেজ থাকবে। এরকই কথা জানালেন ব্যবসায়ি কুঞ্জনগরের শফি উদ্দিন। তিনি এবার কমলাপুর হাটে তুলেছেন ৪১ টি গরু। হরিয়ানা ব্রম্মা ও নেপালী জাতের গরু কিনেছেন তিনি।
খামারী এনামুল হক জানান, তিনি এবার ঢাকাতে নিচ্ছেন ৩৫ টি গরু। একেকটি গরুর দাম তিন থেকে চার লক্ষ টাকা হবে বলেও আশা করছেন। গরুর জন্য তাজা ঘাস আর ভুষিসহ অন্যান্য খাবার নিয়েছেন। সেই সাথে নিয়েছেন কিছু ওষুধ। মোটা তাজা এসব গরুর যাতে কোন অসুবিধা না হয় তার জন্য নিয়েছে বড় বড় বৈদ্যুতিক পাখা ও পানি।
গরু খামারী ওমর ফারুক মোবাইল ফোনে এ প্রতিবেদককে জানান, এবার একটু আগেই চলে এসেছি। কারণ কয়েক দিন পর রাস্তায় যানজট শুরু হবে। এ যানজটের কারণে গরু দীর্ঘক্ষণ গাড়িতে থাকতে হয়। এতে গরু অসুস্থ হওয়াসহ নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এ ছাড়া কয়েক দিন পরে আসলে হাটে জায়গা পাওয়া যায় না। আর যেসব জায়গা পাওয়া যায় সেখানে গরু রাখা যায় না। সে জন্য সব চিন্তা ভাবনা করে আগেই গরু নিয়ে এসেছি।
জিয়া বেপারি জানান, দেশি ১১ গরু নিয়ে এসেছেন। প্রথম দিকে ক্রেতা ভালো পাওয়া যায়। দাম যা চাওয়া যায় তাই মিলে। এ ছাড়া হাটে দেরিতে আসলে জায়গা পাওয়া কঠিন হয়। আগে আসায় গরুর যতœ করা যায়। আর সুন্দর করে থাকার জায়গাও করে নেওয়া যায়। এসব ভেবে তিনি আগাম এসেছেন।
মেহেরপুর পুলিশ সুপার রাফিউর আলম জানান, জেলার বিভিন্ন হাটে বাজারে ব্যবসায়িদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াও রাস্তায় পশু নিয়ে যাবার সময় যাতে কোন ব্যবসায়ি বা গেরস্ত সমস্যায় না পড়ে তার জন্য টহল জোরদার ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ব্যবসায়িরা যাতে কোন মলমপার্টি বা অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে না পড়ে অন্যের দেয়া খাবার না খায় সেজন্য সতর্ক করা হয়েছে।
খালিদ সাইফুল, দৈনিক দেশতথ্য, ২৪ জুন ২০২৩

Discussion about this post