কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় দিঘলকান্দি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষে জামাল মোল্লা (৪৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন। এঘটনায় আহত হয়েছেন তিনজন। শনিবার (০২ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে দিঘলকান্দী গ্রামের মধ্যপাড়া মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত জামাল মোল্লা দৌলতপুর উপজেলার রিফাইতপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দিঘলকান্দী গ্রামের আজগর মোল্লার ছেলে। জামাল ইট ভাটার শ্রমিক ছিলেন।
আহতরা হলেন- জহির উদ্দিন মোল্লার ছেলে রবিউল ইসলাম (৪৫), আশরাফ আলীর ছেলে বিল্লাল হোসেন (৩৪) এবং তৈয়ব আলীর ছেলে আকবর হোসেন (৭০)।
আহত রবিউল ইসলাম ও বিল্লাল বলেন, শনিবার রাতে দিঘলকান্দি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় দুপক্ষের সংঘর্ষ হয়। এতে প্রতিপক্ষের হামলায় জামাল মোল্লা নামে আমাদের পক্ষের একজন মারা গেছে। তাদের হামলায় আমরা তিনজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রবিউলের মাথায় ও পিঠে কোপানো হয়েছে, বিল্লালের হাত ও পিঠে কোপানো হয়, আকবরকে এলোপাথাড়িভাবে মারপিট করে আহত করা হয়েছে। এসময় আমাদের ঘরবাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা বলেন, দিঘলকান্দি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সভাপতি পদপ্রার্থী কাদের মোল্লা ও রুবেলের সমর্থকদের মধ্যে কয়েকদিন ধরেই ঝামেলা চলছিল। এ ঘটনার জের ধরে কাদের মোল্লার সমর্থকদের ওপর হামলা করে প্রতিপক্ষ রুবেলের লোকজন। এতে জামাল মোল্লা নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েকজন।
তারা আরও বলেন, শনিবার রাতে ভোটারদের টাকা দিয়ে ভোট কিনতে যায় রুবেল ও তার লোকজন। তাদের টাকা কেউ নেননি। বিষয়টি নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে রুবেলের নেতৃত্বে রিয়াজের ছেলে শাহীন, বদির ছেলে রাশিদুল, এলাজের ছেলে রানা, শামসুদ্দিনের ছেলে কবির, আবুল মন্ডলের ছেলে মাহাবুল, জিন্নাতের ছেলে নবীর সহ তাদের লোকজন হামলা চালিয়ে কাদেরের লোকজনদের আহত-নিহত করে এবং ঘরবাড়ি ভাংচুর করে। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছেন দৌলতপুর থানা পুলিশ।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রুবেলের পক্ষের লোকজন। তারা জানান, জামাল মোল্লার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। তাদের অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
এবিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জামাল মোল্লা নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে। লাশ ময়নাতদন্তের পরে জানা যাবে কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
খালিদ সাইফুল // দৈনিক দেশতথ্য // ৩ ডিসেম্বর ২০২৩

Discussion about this post