আন্তর্জাতিক প্রতিবেদক:
ইরান-ইসরায়েল। নামের প্রথম অক্ষরেও রয়েছে মিল।একে অপরের প্রতি চরম বৈরি দুই দেশ। সম্প্রতি ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বৈরিতা আরও বেড়েছে দুই দেশের। এছাড়া সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে হামলা ও জেনারেল নিহতের ঘটনায় ইসরায়েলে প্রথমবারের মত সরাসরি হামলা চালিয়েছে ইরান। প্রতিশোধ নিতে মিত্রদের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে শুক্রবার ভোরে ইরানের ইসপাহান শহরে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইসরাইল।এক সময় ইরান ইসরাইল ছিল পরম বন্ধু। সময়ের ব্যবধানে দুই দেশ সংঘাতের দিকে। বিবিসি।
অতীতে বন্ধু
একসময় এই ইরান এবং ইসরায়েল ছিলো একে অপরের বন্ধু। এমনকি ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় তুরস্কের পর ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়া দ্বিতীয় মুসলিম দেশ ছিলো ইরান।
বন্ধুত্ব থেকে বৈরিতা
আয়াতুল্লাহ খোমেনী এবং তার অনুসারীরাও ছিলেন ফিলিস্তিনে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে। ইরান-ইসরায়েল সম্পর্ক ভেঙ্গে পড়ে মূলত ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর।
তখন ক্ষমতায় আসা ইরানের বিপ্লবী সরকার রাষ্ট্রীয়ভাবে ফিলিস্তিনিদের পক্ষ নেয়ার ঘোষণা দেয় এবং তেহরানে ইসরায়েলের দূতাবাসকে ফিলিস্তিনি দূতাবাসে পরিণত করে। তারা ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
মূলত ইরানের বিপ্লবী সরকার ফিলিস্তিনে ইসরায়েল রাষ্ট্রের অস্তিত্বকেই অস্বীকার করে।
অন্য আরব দেশগুলো ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দুই রাষ্ট্র সমাধানে একমত হলেও ইসলামি বিপ্লবের নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনী সেটা গ্রহণযোগ্য মনে করেননি। তারা ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে অস্বীকারের নীতি নেয়।অন্যদিকে ইরানের এমন উত্থানকে হুমকি হিসেবে বিবেচনা করতে শুরু করে ইসরায়েল।
কারণ কি:
ইরানের সাথে ইসরায়েলের সম্পর্ক দিন দিন বৈরী হওয়ার পেছনে কয়েকটি কারণ আছে। তার মধ্যে প্রথমত, ইরানের দূরপাল্লার মিসাইল তৈরির চেষ্টা এবং দ্বিতীয়ত, পরমাণু প্রকল্প গ্রহণ।
তার প্রতি বৈরি হয়ে পড়া ইরানের এমন দুটি সামরিক প্রকল্পকে হুমকি হিসেবে দেখেছে ইসরায়েল। ফলে তারা ইরানের সামরিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা বিশেষত পরমাণু প্রকল্প ভেস্তে দিতে শুরু করে নানা অন্তর্ঘাতমূলত পদক্ষেপ।এসময় দেশটির একের পর এক বিজ্ঞানীকে ইসরায়েল হত্যা করেছে বলেই ইরানের অভিযোগ।
লেবাননে ইরানের প্রত্যক্ষ সহায়তায় গড়ে ওঠে হেজবুল্লাহ,হামাস, ইসলামিক জিহাদকেও হূতি সহায়তা করতে শুরু করে ইরান।ফলে মধ্যপ্রাচ্যে ইরান এবং ইসরায়েল একধরনের আধিপত্য বিস্তারের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে পড়ে। যেটা দুই দেশের সম্পর্ককে আরো খারাপের দিকেই নিয়ে যায় বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা।
বড় কথা হচ্ছে, ইরানের মতো একটা দেশ যখন ইসরায়েলকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার ঘোষণা দেয়, এবং সে দেশ যদি পরমাণু অস্ত্র বানিয়ে ফেলে তাহলে এই ভয় থাকবেই যে সে এটা কোন একদিন ব্যবহার করলেও করতে পারে,” বলছেন মেইর লিটভ্যাক।
ইসরায়েল-ইরান পরস্পর বৈরি দেশ এতে কোন সন্দেহ নেই। তবে সাম্প্রতিক হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনায় বিশ্বের অন্যান্য দেশও মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার শংকায় রয়েছে।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//

Discussion about this post