শংকর মৈত্রঃ পাকিস্তানিরা এখনো বঙ্গবন্ধুকে স্বীকার করে না, বঙ্গবন্ধুকে বাঙালী জাতির জনক বলে মানে না।
পাকিস্তানিদের এই চরম ঔদ্ধত্য দেখা গেল সোমবার ঢাকাস্থ পাকিস্তান হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করার ঘটনায়।
পাকিস্তান হাইকমিশন থেকে যে প্রেস রিলিজ পাঠানো হয়েছে এবং তাদের অফিসিয়াল ওয়েব সাইটে যা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে শুধুমাত্র প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করা হয়েছে।
বলা হয়েছে, ‘প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবর রহমান ১৯৭৪ সালে ওআইসি সম্মেলনে যোগদানের ভিডিও ও কিছু ছবি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করা হয়। ‘
আমি মনে করি শেখ মুজিবের নামই হয়তো তলিয়ে গেছে বাঙালির ভালোবাসায় দেয়া উপমা ‘বঙ্গবন্ধু’র মাঝে। বঙ্গবন্ধু বললে আর নাম বলতে হয় না। বঙ্গবন্ধু মানুষের ভালোবাসা। জাতির জনক এটা এখন সাংবিধান স্বীকৃত, উচ্চ আদালতের রায়ে স্বীকৃত। জাতির জনক বা ‘ফাদার অব দ্যা ন্যাশন’ এটা সরকারি সিদ্ধান্ত।
পাকিস্তানের হাইকমিশনারের এই সাক্ষাতটি ছিল রাষ্ট্রীয়। কুটনৈতিক প্রটোকল মেনেই তা করতে হয়। কিন্তু পাকিস্তান হাইকমিশন থেকে সাক্ষাত অনুষ্ঠানের যে তথ্য পরিবেশন করা হয় তাতে, বাংলাদেশের আইন ও সংবিধানের নির্দেশনা মানা হয় নি।
শেখ মুজিবরের নামের আগে ফাদার অব দ্যা ন্যাশন বলা হয় নি। আইন অনুযায়ী বঙ্গবন্ধুর আগে অবশ্যই ফাদার অব দ্যা ন্যাশন লাগাতে হবে। যেমন পাকিস্তানিরা জিন্নাহর নাম বললে আগে ফাদার অব দ্যা ন্যাশন লাগায়, ভারতীয়রা গান্ধীর নাম বললে ফাদার অব দ্যা ন্যাশন লাগায়। আমাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নাম বললে অবশ্যই জাতির জনক বা ফাদার অব দ্যা ন্যাশন লাগাতে হবে। তা না করলে এটা আইন লঙ্ঘন হবে, অবমাননা হবে। ঢাকাস্থ পাকিস্তান হাইকমিশন সেই অবমাননা করেছে আমাদের জাতির জনকের প্রতি, বাংলাদেশের প্রতি।
পাকিস্তান হাইকমিশনারকে ডেকে এটার প্রতিবাদ করা উচিত। এটা ছোট ঘটনা নয় বা চোখ এড়িয়ে যাওয়া নয়। এটা পরিকল্পিতভাবেই পাকিস্তানিরা করে।
লেখকঃ
শংকর মৈত্র জাতীয় পর্যায়ের সিনিয়র সাংবাদিক
এবি/দৈনিক দেশতথ্য /২৬ অক্টোবর /২০২১

Discussion about this post