মোঃ রাসেল, বরগুনা: প্রবল ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে বরগুনা জেলার নিচু এলাকার পথ-ঘাটসহ ফসলের মাঠ। বৃষ্টির পানি জমে গেছে তরমুজের ক্ষেত গুলোতেও। ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় মাঠেই নষ্ট হচ্ছে হাজার হাজার তরমুজ। ফলে লোকসানের আশঙ্কায় তরমুজ চাষীদের।
জানা যায়, জেলার অধিকাংশ ক্ষেত্রের তরমুজই বিক্রি করা হয়ে গেছে। তবে সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের নীমতলী বালিয়াতলী ইউনিয়নের খাকবুনিয়া, আমতলী, চৌমুহনীসহ কয়েক এলাকায় তরমুজ এখন পর্যন্ত ক্ষেতেই রয়ে গেছে। কয়েকদিন পরে অধিক লাভে এসব তরমুজ বিক্রি করার কথা ছিল।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখ যায়,বরগুনা বামনা উপজেলা, আমতলী উপজেলা, পাথরঘাটা উপজেলা ওবরগুনা সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের নীমতলী ও বালিয়াতলী ইউনিয়নের খাকবুনিয়া এলাকায় ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টির পানিতে তরমুজের ক্ষেতগুলো তলিয়ে গেছে। এসব পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় হাটু সমান পানি জমা হয়েছে ক্ষেতে। কৃষকরা ক্ষেত থেকে তরমুজ তুলে রাস্তার ওপরে স্তূপ করে রেখেছেন। কেউ আবার পানিতে ডুবে থাকা তরমুজ কেটে নৌকায় তুলছেন।
ক্ষেতসহ তরমুজ বৃষ্টির পানিতে ডুবে যাওয়ায় বিক্রি না হওয়ায় আশঙ্কা করছেন চাষিরা। এতে লাখ লাখ টাকা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন এই এলাকার তরমুজ চাষীরা।
বানাই এলাকার কৃষক সোহেল বলেন, ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা ব্যায়ে তরমুজ আবাদ করেছি। ফলন মোটামুটি ভালো ছিল। ভাবছিলাম ১০-১৫ দিন পর বিক্রি করব, তাই ফল কাটিনি। কিন্তু গত দুইদিনের বৃষ্টিতে সব শেষ। এখন এই তরমুজ ২ লাখ টাকায়ও বিক্রি করতে পারি কিনা সন্দেহ।
আমতলী গ্রামের মানিক ফকির বলেন, ২লাখ ৩০ হাজার টাকা খরচ করে ১৬ বিঘা জমিতে তরমুজ আবাদ করেছি। বৃষ্টির পানিতে ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় এখন ১০ হাজার টাকাও বিক্রি করা যাবে না। হঠাৎ বৃষ্টির ব্যাপারে কষি অফিস আমাদের সতর্ক করেনি। সতর্ক করলে হয়ত এত ক্ষতি হতনা।
আরেক চাষী মজিদ ফরাজী বলেন, আমি ৫ লাখ টাকা ব্যয় করে তরমুজ চাষ করেছিলাম। কয়েকদিন পর ১০ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারতাম। কিন্তু বিক্রি করার আগেই বৃষ্টিতে তরমুজ ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। তাই এ তরমুজ এখন বিক্রি করতে পারব কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
এ বিষয়ে বরগুনার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক আবু সৈয়দ জোবায়দুল আলম বলেন, ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে বৃষ্টিপাতে তরমুজ ছাড়া অন্য ফসল মুগ ডাল, ব্রি ধান কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। যেসব কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের তালিকা তৈরি করা হবে। পরে এসব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তা দেয়া হবে। লোকবল সঙ্কটের কারনে মাঠ পর্যায়ে অনেক কাজই করতে পারছিনা আমরা।
দৈনিক দেশতথ্য//এল//

Discussion about this post