হাটহাজারী প্রতিনিধি : বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.ইউনুস এর উপজেলা হাটহাজারীর রেল স্টেশন এলাকায় প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঝুঁকিপূর্ণভাবে রেললাইনের উপর কোরবানির পশুর হাট বসেছে। তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছেন তাদের আপত্তি সত্ত্বেও নিয়মিত বসছে এই পশুর হাট। এভাবে রেল লাইনের উপর গরুরহাট বসানোর কারনে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় ও রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের আপত্তি উপেক্ষা করেই রেললাইনের উপর পশুর হাট পরিচালনা করছেন বাজার ইজারাদারা। স্টেশন এলাকার বাউন্ডারি ও সীমানা প্রাচীর না থাকায় বাজারে কেনা-বেচার জন্য নিয়ে আসা পশু রেল স্টেশন এলাকায় ঢুকে রেল লাইনের স্লিপারসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রেতারা বিক্রির সুবিধার্তে দাঁড়িয়ে পড়েন। এভাবে পশুর হাট বসার কারণে পশুগুলো এদিক ওদিক ছোটাছুটিও করে ফলে রেললাইনের পাথরও ছিটকে যাচ্ছে। এতে ট্রেন চলাচলও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
রবিবার বিকালের দিকে সরেজমিনে রেল স্টেশন এলাকায় গেলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পশু বিক্রেতারা বলেন, রেললাইনের পাশে গরু-ছাগল নিয়ে আসা ঝুঁকিপূর্ণ। যেহেতু বাজার ইজারা হচ্ছে এবং সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পাচ্ছে সেহেতু পশুর হাটের নির্দিষ্ট ও নিরাপদ জায়গা বের করা প্রয়োজন। এখানে পশুর হাটের মতো কোনো স্থান নেই। বাজার ইজারাদার কোনোকিছু তোয়াক্কা না করেই নিজের ইচ্ছেমতো পশুর হাট পরিচালনা করছেন এখানে।
রেললাইনে ঝুঁকিপূর্ণ পশুরহাটের বিষয়ে জানতে চাইলে ইজারাদার ইব্রাহিম সওদাগর গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, আমরা বেশ কয়েকজন মিলে হাটটি ইজারা নিয়েছি। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে তিনি আরেক ইজারাদার মো.রিয়াদ উদ্দিনের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।
পরে মো.রিয়াদ উদ্দিন (রিয়াদ) এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমরা ষোল জন মিলে এ হাটটি ইজারা নিয়েছি। আমাদের পক্ষ থেকে বিক্রেতাদের বার বার সতর্ক করা হচ্ছে তারা যেনো রেল লাইনে স্লিপারের সাথে কোনো পশু না বাঁধেন। আর কেউ না বুঝে বাঁধলেও আমাদের ভরান্টিয়াররা তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে দেন।
হাটহাজারী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার জয়নাল আবেদীন বলেন, রেললাইনে ঝুঁকিপূর্ণভাবে পশুরহাট বাজার বসানোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছি।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে ষোলশহর ফাঁড়ি ইনচার্জ আবুল কাশেম জানান, হাটহাজারী স্টেশন মাস্টার অবৈধ স্থাপনা, রেল লাইনে ঝুঁকিপূর্ন অবৈধ পশুর হাটের বিষয়টির ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আমার অফিসেসহ রেলওয়ের বিভিন্ন দফতরে চিঠি দিয়েছেন।
হাটহাজারী পৌরসভার প্রশাসক শাহেদ আরমান বলেন, সরকারি নির্দেশনা দেওয়া আছে, রাস্তাঘাট ও রেললাইনে গরুরহাট বসানো যাবে না। এ ব্যাপারে তাদের সতর্ক করা হয়েছিলো।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম মশিউজ্জামান বলেন, রেল লাইনে এবং মহাসড়কের পাশে কোরবানির পশুরহাট বসানোর সুযোগ নাই। রেল স্টেশন এলাকার হাটটা পৌরসভার মধ্যে পড়েছে, তাই বিষয়টি তিনি পৌর প্রশাসককে জানানোর পরামর্শ দিয়ে এব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।
এ ব্যাপারে জানতে রবিবার সন্ধ্যার দিকে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিয়ার মুঠোফোনে রিং দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

Discussion about this post