নাজিবুল বাশার, মধুপুর (টাঙ্গাইল): টাঙ্গাইলের ধনবাড়িতে চাষ করা হয়েছে বেগুনি ও হলুদ রঙের ফুলকপি। জৈবিক উপায়ে চাষকৃত বিষমুক্ত রঙিন কপির ফলন ভালো হওয়ায় ভালো দাম পাচ্ছে কৃষক। রঙিন স্বপ্নের জাল বুনছেন কপি চাষে। ব্যতিক্রমী রঙের এই ফুলকপি দেখতে ও চাষে আগ্রহী অনেকেই। ঔষধিগুন থাকায় দেশজুড়ে এর চাহিদা রয়েছে । চাষীদের পরামর্শের পাশাপাশি আগামীতে আরো বেশি উৎপাদনের লক্ষে কাজ করার কথা বলছে কৃষি বিভাগ।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ইন্ডিয়ার সিনজেন্টা থেকে বীজ এনে চারা উৎপাদন করে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অ লের ফসলের নিবিড়তা প্রকল্পের মাধ্যমে ধনবাড়িতে বেগুনি ও হলুদ ফুলকপি চাষ করা হয়েছে। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে বেগুনি ও হলুদ রঙের কপি শোভা পাচ্ছে। পোকা মাকড় দমনে সেক্স ফেরোমন ও আঠালো ফাঁদ ব্যবহারের মাধ্যমে জৈবিক উপায়ে চাষ করা রঙিন ফুলকপি সুস্বাদু, পুষ্টিগুন ও ক্যান্সারসহ নানা রোগ নিরামক হওয়ায় দেশ বিদেশে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
গত বছরের ন্যায় এবছরও উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে তারা এক বিঘা জমিতে বেগুনি ও হলুদ রঙের ফুল কপি চাষ করেছে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ি মুশুদ্দি গ্রামের মৌসুমী সবজি চাষী মিলন মিয়া ও মিজানুর রহমান। ভালো ফলন হয়েছে। প্রতিদিন জমি থেকে কপি কেটে বাজারে নিয়ে বিক্রি করছেন। চাহিদা বেশি ও ব্যতিক্রমী থাকায় প্রতি কেজি কপি ৫০-৭৯ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্যতিক্রমী ফুলকপি চাষে দাম ভালো পেয়ে বেশি লাভের আশা কৃষকের।
রঙিন ফুলকপি চাষী মিলন মিয়া (৪০) বলেন, তিনি ১৫ শতাংশ জমিতে বিদেশি জাতের হলুদ ও বেগুনি রঙের কপি চাষ করেছেন। কৃষি বিভাগে দেয়া প্রদর্শনী প্লটে সার বীজ সহযোগীতা পরামর্শে ভালো ফলন হয়েছে। তার কপি বাজারে নিয়ে গেলে পাইকারি ৫০/৬০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হয়। মিজানুর রহমান (৬০) জানান, তিনি রঙিন কপি চাষ করেছেন। তার মতে এ কপি দেখতে লোভনীয় ও আকর্ষণীয়। সাধারণ কপির চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করা যায়।
ধনবাড়ি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী জানান, একই জমিতে অধিক ফসল চাষের জন্য রঙিন কপি উপযোগী। এ কপি ৭৫-৮০ দিনের মধ্যে বিক্রি করা যায়।
মুশুদ্দি বøকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন জানান, ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধির জন্য এ রঙিন কপি গুরুত্বপূর্ণ। এ কপির জমিতেই এক সাথে চাষ করা হয়েছে কুমড়া পটল। কপি কর্তনের পরই মাঁচা দিয়ে দেয়া হবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ফসলের গড় নিবিড়তা বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি মনে করেন।
ধনবাড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান জানান, সাধারণ কপির তুলনায় রঙিন কপির দাম অনেক বেশি। দেশে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আগামী বছর ধনবাড়িতে চাষাবাদ বাড়ানোর জন্য কাজ করছে কৃষি বিভাগ। এ কপিতে পুষ্টিমান বেশি। রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বেশি থাকায় এ কপি চাষে কৃষকের আগ্রহ বেশি। রঙিন কপি চাষে কৃষক বেশি লাভবান হচ্ছে।
পর্যাপ্ত চারা উৎপাদন করা গেলে রঙিন ফুলকপি চাষ করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। পাশাপাশি সাধারণ জাতের কপির চেয়ে পুষ্টি মান বেশি থাকায় পুষ্টির চাহিদা পূরণ করবে ও অধিক লাভবান হবে কৃষক এমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।
খালিদ সাইফুল, দৈনিক দেশতথ্য, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

Discussion about this post