Sunday, 1 June 2025
🕗
দৈনিক দেশতথ্য
Advertisement
  • প্রচ্ছদ
  • জাতীয় খবর
  • স্বদেশ খবর
  • বিদেশি খবর
  • শিক্ষা
  • স্বাস্থ্য
  • কৃষি
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • ধর্ম
  • আইটির খবর
  • লাইফস্টাইল
    • ভ্রমণ তথ্য
  • সম্পাদকীয়
    • মতামত
  • অন্যান্য
    • প্রাপ্ত বয়ষ্কদের পাতা
    • সাহিত্য ও সংষ্কৃতি
    • স্মৃতিচারণ/স্মরণ
    • ফটো গ্যালারী
  • ই-পেপার
No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • জাতীয় খবর
  • স্বদেশ খবর
  • বিদেশি খবর
  • শিক্ষা
  • স্বাস্থ্য
  • কৃষি
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • ধর্ম
  • আইটির খবর
  • লাইফস্টাইল
    • ভ্রমণ তথ্য
  • সম্পাদকীয়
    • মতামত
  • অন্যান্য
    • প্রাপ্ত বয়ষ্কদের পাতা
    • সাহিত্য ও সংষ্কৃতি
    • স্মৃতিচারণ/স্মরণ
    • ফটো গ্যালারী
  • ই-পেপার
No Result
View All Result
দৈনিক দেশতথ্য
No Result
View All Result

ভাষা আন্দোলনে বাউল কামাল পাশা ও সুনামগঞ্জের ছাত্রসমাজ

দেশতথ্য ঢাকা অফিস by দেশতথ্য ঢাকা অফিস
20/02/2025
in মতামত
Reading Time: 1 min read
0
ভাষা আন্দোলনে বাউল কামাল পাশা ও সুনামগঞ্জের ছাত্রসমাজ
Share on FacebookShare on Twitter Share on E-mail Share on WhatsApp

আল হেলাল:
“যারা কেড়ে নিতে চায় মায়ের ভাষা নিদয়া নিষ্ঠুর পাষাণ
ধিক্কার দেই আমি তাদেরে বন্ধু নয় তারা বেঈমান।।
জাতিতত্ত্বের দোহাই দিল ভারতকে খন্ড করিলো
ভাষার উপর আঘাত হানলো,দাবী করে মুসলমান।।
ভন্ড খাজা নাজিমুদ্দিন,বাঙ্গালীদের রাখতে অধীন
শোষণ করে চিরদিন,কেড়ে নিলো তাজা প্রাণ।।
মোদের র্গর্ব মোদের আশা,সবার উর্ধ্বে বাংলা ভাষা
বলে বাউল কামাল পাশা,মাতৃভাষার রাখবো মান ”।।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন বিগত সরকারের আমলে ৯ বার মরণোত্তর একুশে পদক প্রস্তাব প্রেরণ করেছিল ভাটি অঞ্চলের একজন বাউল শিল্পীর পক্ষে। সেই বাউল শিল্পীর নাম মরহুম কামাল পাশা (কামাল উদ্দিন)। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার এই বাউল শিল্পীকে মরণোত্তর একুশে পদক প্রদান করেনি। অনুসন্ধানে জানা যায়,এর মূল কারনটি ছিল প্রেরিত প্রস্তাবনার হলফনামার একটি পাতায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম। এতে বলা হয়েছিল এলাকার এমপি সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত ১৯৭৯ সালে বাউল কামাল পাশাকে ঢাকার পিজি হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে অসুস্থ বাউলকে দেখতে যান তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। মূলত এ বাক্যটি থাকার কারণে বাউল কামাল পাশা মরণোত্তর স্বীকৃতি লাভে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন এবং আজো উপেক্ষিত রয়েছেন। খ্যাতনামা গবেষক লেখক সাংবাদিক আবুল মনসুর আহমদ তার আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর গ্রন্থে বলে গিয়েছেন,সাংস্কৃতিক আগ্রাসন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আগ্রাসনের চাইতে আরোও ভয়াবহ”। এই কথাটির বাস্তব প্রমাণ পেলাম বাউল কামাল পাশার মরণোত্তর স্বীকৃতির বেলায়।
১৭৫৭ সালের ২৩ শে জুন পলাশীর প্রান্তরে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌল্লার পতনের মধ্যে দিয়ে বৃটিশ বেনিয়াদের হাতে বাংলার স্বাধীনতা পদানত হয়। পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয় গোটা ভারতবর্ষ তথা বাঙ্গালী জাতি। কাঙ্কিত স্বাধীনতা স্বায়ত্বশাসন ও গণতন্ত্রের জন্য এই বাংলার মাটিতে সিপাহী বিদ্রোহ,ফকিরী আন্দোলন,তীতুমীরের বাশের কেল্লার যুদ্ধ,ফরায়েজী আন্দোলন,শহীদ ক্ষুধিরামের আত্মাহুতিসহ নানাবিধ ঐতিহাসিক ঘটনার ধারাবাহিকতায় ১৯৩৫ সালে ডিভাইড এন্ড রুল নীতির ভিত্তিতে ভারত শাসন আইন এর আওতায় সাধারন নির্বাচন পরবর্তীতে দ্বিজাতি তত্বের ভিত্তিতে ভারতবর্ষের অখন্ডতাকে ধবংস করে বৃটিশ বেনিয়ারা এইদেশ ত্যাগ করে। সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানের এলাকা হওয়ায় ধর্মের দোহাই দিয়ে তৎকালীন পূর্ববঙ্গ তথা আজকের বাংলাকে পাকিস্তান রাষ্ট্রের অন্তর্ভূক্ত করা হয়। পাকিস্তানী কায়েমী স্বার্থান্বেষীরা বাংলার শাসনভার গ্রহনের কিছুদিন যেতে না যেতেই সর্বপ্রথম আঘাত হানে আমাদের মাতৃভাষা বাংলার উপর। কূট কৌশলের আশ্রয় হিসেবে তারা সভা সেমিনার তথা শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহের কর্মসূচীগুলোতে বলতে শুরু করে উর্দ্দূ এন্ড উর্দ্দূ সেল বি দ্যা স্টেইট ল্যাংগুয়েজ অব পাকিস্তান। পূর্ববঙ্গের রাজধানী ঢাকায় বিশেষ করে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি বলে পরিচিত ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে সর্বপ্রথম এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যে ছাত্র আন্দোলন গড়ে উঠে তার নামই ভাষা আন্দোলন। কেন্দ্রীয়ভাবে ছাত্রজনতার এই আন্দোলনে সুনামগঞ্জ মহকুমার যেসব কৃতিসন্তানেরা নেতৃত্ব দেন তারা হচ্ছেন অধ্যাপক শাহেদ আলী, বরেণ্য অর্থনীতিবিদ ড.আখলাকুর রহমান,সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ,সাবেক এমপি আব্দুজ জহুর,এডভোকেট সোনাওর আলী,মাওলানা সাদিকুর রহমানসহ নাম না জানা অগনীত কৃতি সন্তানেরা। মুহুর্তের মধ্যে ভাষা আন্দোলন ছাত্র আন্দোলন থেকে গণ আন্দোলনে পরিণত হয়। এবং ঢাকা থেকে সিলেট,সিলেট হতে সুনামগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ হতে দিরাই থানা পরবর্তীতে ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে এ আন্দোলন বিস্তৃতি লাভ করে। তৎকালীন জেলা শহর সিলেটে এই আন্দোলনের অগ্রভাগে থেকে নেতৃত্ব দেন সুনামগঞ্জের কৃতি সন্তান মাহমুদ আলী ও সাহিত্যিক মুসলীম আলী। প্রতিভাবান ছাত্রনেতা ড.আখলাকুর রহমানের পত্র পেয়ে সুনামগঞ্জ মহকুমা সদরে সর্বদলীয় ভাষা সংগ্রাম পরিষদ সুনামগঞ্জ মহকুমা শাখা গঠণ করেন স্থানীয় ছাত্রনেতা সাংবাদিক শিল্পী আব্দুল হাই হাছন পছন্দ। তার সাথে আরো যারা ছিলেন তারা হলেন আব্দুর রসিদ মাস্টার,নুরুল হাদী চৌধুরী হাসনু মিয়া,গায়ক আশরাফ আলী,তজম্মুল হোসেন চৌধুরী কাচা মিয়া,হাছন আলী,আজির উদ্দিন,কবি রিয়াছত আলী,ছাদির উদ্দিন আহমদ,আব্দুল খালিক ,আব্দুল হক,চন্দ্র কুমার দাস,আব্দুল হাশিম,আলফাত উদ্দিন আহমদ,আব্দুজ জহুর,গোপেশ মালাকার,প্রিয়ব্রত দাস মঞ্জু ও সত্যব্রত দাস কাজল,দেওয়ান আজরফ,ডা. হারিছ আলী,মকবুল হোসেন চৌধুরী,ধূর্জটি কুমার বসু,মীর্জা গোলাম সামদানী,ফনীভূষন দাস,যোগেন্দ্র শর্ম্মা,যামিনী শ্যাম,অলিউন নবী বর্দ্ধন,আব্দুল আহাদ চৌধুরী কুটি মিয়া,হামিদ বখত চৌধুরী,আব্দুল জব্বার,শাহ নুরুল গনী,নুরুল আবেদীন,আব্দুর রহীম,শাহ ফজলুল কদ্দুছ,আলাউদ্দিন আহমদ,শুধাংসু শেখর রায় বর্মণ,জ্ঞানচন্দ্র সরকার,দেওয়ান নুরুজ্জামান চৌধুরী,আব্দুল হাই আজাদ,ডাঃ আবুল লেইছ,আব্দুল মতিন চৌধুরী,ফজলুল হক আছপিয়া,আব্দুর রকিব,আসকর আলী,আব্দুস সামাদ,আব্দুর রাজ্জাক তালুকদার,দেওয়ান মহসিন রাজা চৌধুরী,সাদেক আলী,আলফাত উদ্দিন আহমদ,মু. আব্দুর রহিম,আফাজ উদ্দিন আহমদ প্রমুখ সহ নাম না জানা আরো অনেকে।
মহকুমা আহবায়ক জনাব আব্দুল হাই এর নেতৃত্বাধীন কমিটির সদস্য আবুল হাশিম চৌধুরীর নেতৃত্বে মহকুমা থেকে কয়েকজন কর্মী দিরাই থানা সদরে গিয়ে বাউল কামাল পাশা কে আহবায়ক ও আব্দূন নূর চৌধুরীকে সদস্যসচিব করে ভাষা সংগ্রাম পরিষদ দিরাই থানা শাখার কমিটি গঠণ করেন। ১৯৫২ সালে পুলিশের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে ঢাকায় ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে অজোপাড়াগায়ে মিছিল সমাবেশ এর মাধ্যমে বাউল কামাল পাশাই নেতৃত্ব দেন ভাষা আন্দোলনে। আন্দোলনের সমর্থনে শিক্ষক ছাত্রনেতা ডাঃ আব্দুন নূর চৌধুরী ও তার সহকর্মী তৎকালীন দিরাই উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাতক উপজেলার চেচান গ্রাম নিবাসী মতছিন আলীর নেতৃত্বে ঢাকায় ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে স্থানীয় ছাত্র জনতার একটি প্রতিবাদ মিছিল দিরাই থানা সদর থেকে রাজানগর কৃষ্ণচন্দ্র পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করে। ১৯৫২ ইং সনের ২৭ ফেব্রুয়ারী বিকাল ৩ টায় রাজানগর হাইস্কুল প্রাঙ্গনে একই ইস্যুতে একটি প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সর্বদলীয় ভাষা সংগ্রাম পরিষদ দিরাই থানা শাখার সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন ডাঃ আব্দূন নূর চৌধুরী। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হিসেবে ঐ সভায় সভাপতিত্ব করেন তৎকালীন সময়ের উচ্চ শিক্ষিত সঙ্গীত শিল্পী ও রাজানগর হাইস্কুলের প্রাক্তন ছাত্র বাউল কামাল পাশা। সভায় অনলবর্ষী বক্তৃতা দিয়ে ভাষা আন্দোলনের পক্ষে ব্যাপক জনমত গঠণ ছাড়াও “ঢাকার বুকে গুলি কেন ? নুরুল আমিন জবাব চাই” “হায়রে আমার ভাষা আন্দোলন/ সালাম জব্বার রফিক ভাইয়ের হইলো মরণরে আমার ভাষা আন্দোলন ”এবং “নির্যাতিত নিপীড়িত জনগণ/দিকে দিকে শুরু হউক ভাষা আন্দোলন” শীর্ষক ৩ টি গণসঙ্গীত পরিবেশন করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে শহীদ দিবসে এই শিল্পীর রচিত গান,মাতৃভাষা বাংলা ও জন্মভূমি বাংলাদেশের প্রতি সাধারন জনগণকে গভীরভাবে আকৃষ্ট করে।
“ওরে আমার জন্ম বাংলাদেশে
হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রীষ্টান চলি মিলে মিশে।।
সুজলা সুফলা বাংলা শস্য আর শ্যামলা
সর্বজায়গায় ফসল ফলে দেখি সারাবেলা।
দরে সস্তা মিলে ভালা দুঃখ নাই আর কিসেরে।।
বাংলা মায়ের মুখের বানী হয়রেও ভাই বাংলা
এই ভাষার কারণে কত শহীদও হইলা।
স্বেচ্ছায় গিয়া প্রাণী দিলা যুদ্ধে গিয়া মিশেরেৃ
৫২তে হয়েছিলো ভাষা আন্দোলন
কত মায়ের বুক খালি মায় করতেছে ক্রন্দন।
মায়ের বুকে রয় জ্বালাতন মা নয়ন জ্বলে ভাসে।।
শহীদের রক্তের বদলে পাইলাম মোরা স্বাধীনতা
আজোবদি কামাল উদ্দিন ভূলি নাই তাদের কথা।
শহীদগন বাংলারী দাতা দলমত নির্বিশেষে রে ”।।
শুধুমাত্র ভাষা আন্দোলন-ই নয় বাউল কামাল পাশা বৃটিশদের বিরুদ্ধে নানকার আন্দোলনও শুরু করেন। বৃটিশ আমলে বাঘ ও বন্যপশুর দখলমুক্ত করে জঙ্গল রকম ভূমি আবাদ করা স্বত্বেও নানকার শ্রেণীর কৃষকদেরকে বঞ্চিত করে বৃটিশ সরকার জমিদারদের অনুকুলে ভূমি মালিকানা হস্থান্তর করে। তালুকদার ও মিরাশদার এর ন্যায় নানকাররাও যাতে ভূমি মালিক হিসেবে তাদের মানবিক দাবীকে প্রতিষ্টিত করতে পারে সে লক্ষ্যে ১৯৩৫ সালে কামাল উদ্দিন জমিদারদের আগ্রাসন এর বিরুদ্ধে নানকার বিদ্রোহ শুরু করেন । নিজ গ্রাম ভাটিপাড়া, রফিনগর ইউনিয়ন , দিরাই শাল্লা নির্বাচনী এলাকা থেকে শুরু করে তার এ প্রজাবিদ্রোহ সমগ্র পূর্ববঙ্গে দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ে। সুনামগঞ্জ মহকুমা ছাড়াও আসাম প্রদেশ ভিত্তিক নানকার আন্দোলন নামক সংগঠণের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক স্বয়ং তিনিই ছিলেন। সহকর্মী তৎকালীন কংগ্রেস নেতা করুনাসিন্ধু রায় ও কৃষক নেতা লালা সরবিন্দু দে বুলি বাবু সহ অনেক নেতারা বাউল কামাল উদ্দিনের স্থানীয় এ আন্দোলনকে মডেল ধরে এটিকে জাতীয় ইস্যুতে পরিণত করেন। ফলশ্রতিতে ১৯৪১ সালে তৎকালীন এমএলএ প্রজাবন্ধু করুনা সিন্ধু রায় এর প্রচেষ্টায় আসাম পার্লামেন্টে প্রজাতন্ত্র আইন পাশ হয়। ঐতিহাসিক নানকার আন্দোলনের সমর্থনে নিম্নোক্ত গানটি বাউল আব্দুল মতলিব সাহেবের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছেন গবেষক সুবাস উদ্দিন।
“ভাইটালি জমিদার,করি তোরে হুশিয়ার
ফরিঙ্গে বানাইল তোরে তাবেদার,তাবেদার।
খুঁটগাড়ি প্রথা আইনে কৃষককুল ধরেছে ডাইনিয়ে,
তুই বেখবর জেনেশুনে,ঠেস খাইচনা এই গাড়িটার।।
নদী কিংবা বাজার ঘাটে,মানুষ আইলে পরতো সংকটে
খাজনা দিয়া যাইতো ছুটে,নইলে মুক্তি নাই তারার।।
আইলে আইনেরী প্যাদা চোখ রাঙ্গিয়ে করতো সিধা
গালি দিতো হারামজাদা,এবার উপায় নাই তোমার।।
খাজনা ছাড়া ছেড়ে দিতনা, (কয়) এটা সাবের পরোয়ানা
জাইনা ব্যাটা তুই জানিসনা, লাটিদি করতো অত্যাচার।।
শঙ্খ যেমন সর্প ধরে,মানুষ তেমনি কাপতো ডরে
কামালে কয় এ সংসারে,ভাবতেছি তাই অনিবার ”।।
সামন্তবাদের বিরুদ্ধে আজীবন বিদ্রোহী কামাল উদ্দিন স্বদেশ আন্দোলন ও গণভোট আন্দোলনেও অংশ নেন। ১৯৪৭ সালের গনভোট চলাকালে দিরাই শাল্লায় সর্বত্র ছিল নির্বাচনের আমেজ। দু উপজেলার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভোটাররা স্বতস্ফুর্তভাবে পাকিস্তানের পক্ষে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ফলশ্র“তিতে অক্ষয় কুমার দাস পাকিস্তানের সবকটি সরকারের আমলে একাধিকবার মন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত হন। ৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে গনতন্ত্রী দলের আব্দুস সামাদ আজাদ এবং হারিকেন প্রতিক নিয়ে মুসলিম লীগের আবুল হোসেন মোক্তার তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বীতায় অবতীর্ন হন। এ সময় গোটা দিরাই শাল্লা জুড়ে মুসলীমলীগের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচারনা শুরু হয় আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে। হাতিয়া গ্রামের মাওলানা সাদিকুর রহমান, রাড়ইল গ্রামের আব্দুল আহাদ চৌধুরী, চন্ডিপুরের বশির মিয়া,হাজী কবির উদ্দিন. নেজাবত মিয়া. আব্দুর রউফ, ভরারগাঁয়ের ডাঃ আব্দুন নূর চৌধুরী, জগদলের আব্দুল হক মাষ্টার, দিরাইয়ের ক্ষিতিশ নাগ, সাকিতপুরের ওয়াকিব মিয়া, নগদীপুরের ধন মিয়া, মাছিমপুরের শরাফত মোড়ল, সাকিতপুরের আব্দুল গফুর সরদার, রফিনগরের আগুন মোড়ল, আটগাঁওয়ের মতিউর রহমান চৌধুরী, জগদলের ফয়জুর রহমান, কলিয়ার কাপনের হাছিল মিয়া, দলের বাদশা চৌধুরী, হাতিয়ার গুলজার আহমদ, ভাটিপাড়ার ফয়জুন্নুর চৌধুরী, কুলঞ্জের আঃ হক, গনকার গতু মিয়া, কলিয়ার কাপনের হাছিন মিয়া. রেজান মিয়া, রফিনগরের মৌলানা আব্দুল কাইয়ুম, নোয়াগাঁওয়ের লক্ষীকান্ত দাস, বলনপুরের হিটলাল দাস, বলরামপুরের রমজান আলী. রাজেন্দ্র পুরকায়স্থ, ভাটিপাড়ার মহু তালুকদার. বাছন মিয়া, ইয়ারাবাদ কান্দিগাওঁয়ের হাশিম মোড়ল, আগুয়াই গ্রামের লাল মোহাম্মদ চৌধুরী, উজান গায়ের আব্দুল খালেক, মনুয়ার ডাঃ আব্দুল হক, নারকেলার মহীম দাস প্রমুখ নেতাকর্মীরা বিপুল ভোটের ব্যবধানে সামাদ আজাদকে বিজয়ী করে ভাটি অঞ্চলে প্রগতির রাজনীতির ধারাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেন। গনভোট ও যুক্তফ্রন্টের এ দুটি নির্বাচনে সর্বাধিক গুরুত্বর্পূন ভূমিকা পালন করেন বাউল কামাল উদ্দিন । আওয়ামীলীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য আলহাজ্ব আব্দুস সামাদ আজাদ বলে গেছেন, “যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন চলাকালে ভাটি অঞ্চলে গনসংযোগে আসতে পারেননি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরেবাংলা এ.কে.এম ফজলুল হক, মাওলানা ভাসানী ও শেখ মুজিবুর রহমান প্রমুখ জাতীয় নেতারা। বিশাল হাওর অঞ্চলের বৃহত্তর নির্বাচনী এলাকায় প্রার্থী হিসেবে প্রচারাভিযান চালানো আমার একার পক্ষে দুঃসাধ্য ছিল। এ সময় বাউল কামাল ভাই ও আব্দুল করিম এ দুই বাউল শিল্পী নৌকা ও আওয়ামীলীগের সমর্থনে মুসলীমলীগের বিপক্ষে পালাগান গেয়ে ১০ গ্রামের ভোটারদেরকে আকৃষ্ট করতেন। আমার বিজয় ও আওয়ামী রাজনীতি প্রতিষ্ঠায় এদুজন বাউল শিল্পীর অবদান আজীবন কিংবদন্তী হয়ে থাকবে”।
বাউল কামাল পাশা কগ্রেস পার্টি,দিরাই থানা শাখার সভাপতি ও সুনামগঞ্জ মহকুমা শাখার সহ-সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেন। কংগ্রেস নেত্রী সরোজিনী নাইডু ও পন্ডিত জওহরলাল নেহেরুর সুনামগঞ্জ সফরকালে মহকুমা স্টেডিয়ামের বিশাল জনসভায় অখন্ড ভারতের পক্ষে গণসঙ্গীতও পরিবেশন করেন। তিনি ব্যক্তিগতভাবে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত ও পাকিস্তানকে বিভক্তির ঘোর বিরোধী ছিলেন। বিশেষ করে বৃহত্তর সিলেট জেলাকে আসাম প্রদেশ থেকে আলাদা করে পাকিস্তানের অন্তভূর্ক্তি করার ব্যাপারেও তার আপত্তি ছিল। দেশের সকল শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে তিনি আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে গেছেন,ধর্ম ও জাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে দেশ বিভক্তি হবে চরম আত্মঘাতির শামিল। রূপক অর্থে তাই তার কন্ঠে ধ্বনীতো হয়েছে দেশাত্ববোধক গান। যে গানে পাকিস্তান রাষ্ট্রের ভিত্তির উপর তার ভবিষ্যৎ বাণীর ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
“জ্ঞানী মানুষ অজ্ঞান হইয়া যে দেশেতে দিন কাটায়
এমন একটা দেশে থাকার কোন মানুষের মনে চায়।।
মানুষের কাছে যদি দাম থাকেনা মানুষের
তারে যে মানুষ বলে সেই বা মানুষ কিসের
এই দেশটা হইবে হিংস্রের বলেছেন রাসুলাল্লায়।।
১৮হাজার মাখলুকাতে সেরা হল জ্বিন ইনসান
এরা যদি নাহি আনে আল্লাহর উপর খাটি ঈমান
কোন হাদিসে এরা ইনসান কোন হাদিস কোরআন ফ্যাকায়।।
ইনসানের কাছে যদি থাকেনা মন ইনসানী
আইন করিবে যে জায়গাতে সেথায় হবে বেআইনী
কোথায় থাকে মুসলমানী কামাল কয় যাইতাম কোথায়।।
আমি মানুষ তুমি মানুষ উভয়ই সমান সমান
বিশ্বাস না হয় দেখতে পারো খুলিয়া হাদিস কোরআন
যার তার ভাবে গায় গুনগান বলে কবি কামাল পাশায় ”।।
১৯৪৭ সালের ১৪ আগষ্ট দ্বিজাতিতত্ত্বের উপর ভিত্তি করে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম। এবং পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানকে শাসন এর নামে তদানীন্তন মুসলিম লীগ সরকারের বৈষম্যমূলক শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করতে গিয়ে ৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সমর্থনে এক সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সূচনা করেন বাউল কামাল পাশা। পাকিস্তান রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি,গভর্ণর প্রধানমন্ত্রী,এমপি এসডিও,শাসন ও বিচার বিভাগ থেকে শুরু করে থানা পর্যায়ের ওসি পর্যন্ত পাক শাসন ব্যবস্থার বৈষম্যমূলক আচরন ও শোসন নির্যাতনের চিত্র তিনি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। অথচ প্রকাশ্যে নাম ধরে কারো বিরুদ্ধে গান গাইতে গেলে প্রতি পদে পদে বাধা। কিন্তু তিনি ভয় পেয়ে বসে থাকার পাত্রও নন। তাইতো মাছকে উপলক্ষ করে রুপক অর্থে মুসলিম লীগ সরকারের দুঃশাসন এর বিরুদ্ধে তিনি পরিবেশন করেন গণসঙ্গীত। ৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে বাউল কামাল পাশা বিরচিত এই সঙ্গীত নৌকা প্রতীকে যুক্তফ্রন্টের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আব্দুস সামাদ আজাদ এর বিজয় তথা বাঙ্গালী জাতিকে মুক্তির মহামন্ত্রে উজ্জীবিত করতে বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে। বাউল কামাল পাশা রচিত সেই রোমান্টিক আঞ্চলিক গানটি হচ্ছে
“দেশে আইল নতুন পানি,গুছে গেল পেরেশানী
মাছের বাড়লো আমদানী,দুঃখ নাইরে আর।।
মাছের শিকারী যারা,সংকটে পড়েছে তারা
গেলে কেউ মাছ ধরা,হয়রে গ্রেফতার
ছোট বড় যত মাছ,শিক্ষা করলো আইনের কাজ
জেলা থানা মহকুমা তাদের অধিকার।।
বেরকুল হয় রাষ্ট্রের রাজা,আর যত মাছ তাহার প্রজা
প্রধানমন্ত্রী এত সোজা বাঘাই নামটি যার।
পররাষ্ট্র-মন্ত্রী হইয়া,গাঙ্গে থাকে ইলিশ বাইয়া
দেশ বিদেশের খবর নিয়া ব্যস্ত অনিবার।।
খাদ্যমন্ত্রী কাতলা মাছে,সবার খাদ্য যোগাইতেছে
অর্থমন্ত্রী রুহীত মাছে অর্থ খুজে তার।
সিও বাবু পাঙ্গাসে বিদেশের মাল আনিতেছে
অভাব ঘুচিবে কিসে ভাবনা তাহার।।
রিলিফ মন্ত্রী বুত্তিয়া ভাই ,রিলিফের মাল আমরা না পাই
কি খাইয়া জীবন বাছাই গরীব দুঃখীরার।
ঘাগট বাবু কন্ট্রলারে,মুখ ছিনিয়া মাল বন্টন করে
এম.পি সাহেব কালিয়ারে বাধ্য করে তার।।
চাটাপুটি দারকিনায়, থানায় গিয়া কেইস লাগায়
আর কত সহা যায়,সব খাইছে ডিলার।
এস.ডি পিও গজারের মতে,নালিশা দিল কোর্টেতে
ওয়ারেন্ট হইয়াছে তাতে আসামী সবার।।
চেয়ারম্যান সাহেব বাউশে কয়,আমার মনে লাগছে ভয়
মীরগায় কেন কথা কয়,ওয়ার্ডেরই মেম্বার।
গন্যায় পাইলো মোক্তারগিরী, মুখ চলে তার তাড়াতাড়ি
কাতলায় পাইলো মোহরীগিরী, লেখা পড়ার ভার।।
কুইচ্যা পেশকারের কাছে,নথিপত্র জমা আছে
নকলের দরকার পড়েছে টাকা কর যোগাড়।
ওসিবাবু রাঘুয়া বোয়াল,কথা কয় ফুলাইয়া গাল
টাকা আনো সকাল সকাল গনে দশ হাজার।।
রোহিত কাতলা মিরগায়,সরকারী নোর্টিশ পায়
হাজির হইবার সুযোগ না পায় কোর্টেরই মাজার।
কাটুয়ায় কয় আপীল কর, ঘুষখোর গাউরারে ধর
আছে যে সবার উপর কাছিম ব্যারিষ্টার।।
লাছ আর এলংগনে,যুক্তি করে কাকরার সনে
ভেদায় কয় মনে মনে লড়বার কি দরকার।
ভেদায় পাইল দফাদারী বালীঘরায় চৌকিদারী
ছেলায় পাইল মাতব্বরী গ্রাম সরকার।।
শিং মাগুর দুই পুলিশ লইয়া,আসামী আনলো ধরিয়া
দিল যে হাজির করিয়া কোর্টেরী মাজার।
বাইমে কয় পুটিরানী,দেখাও দরখাস্থ খানী
এইসব তত্ব আমি জানি কোর্টেরই ব্যাপার।।
পকেট কাটা কই মাছে,কানখার বলে আসিতেছে
ইছাবাবু হইয়া গেছে সরকারী ডাক্তার।
কাক্যিয়া সরকারী উকিল তার কাছে ছিল শীল
নথী যখন করলো হাজির কোর্টেরই মাজার।।
শিক্ষামন্ত্রী হইল বাছা,সাক্ষী সত্য নয়রে মিছা
স্কুল কলেজ মাদ্রাসা ইন্সপেকসনের ভার।
এ্যাগ্রিমেন্টে চললো কেইছটি সবমাছ হইয়াছে গিলটি
এখন উপায় করা কি ভাবনা তারার।।
কুম্ভির বাবু বিচার কর্তা,শুনিয়া সাক্ষীরার কথা
রায় দিল শুনে বার্তা দ্বিপান্তর সবার।
কই যদিগো আসল কথা কয়েকটার ঘুরাইবে মাথা
কামাল পাশার পলোর জাতা থাইকো হুশিয়ার।।
বাউল কামাল পাশা সংস্কৃতি সংসদ সুনামগঞ্জ এর সভাপতি সেলিম উদ্দিন আহমদ বলেন,“দ্বীন দুনিয়ার মালিক খোদা এত কষ্ট সয়না/তোমার দ্বীলকি দয়া হয়না,তোমার দ্বীলকে দয়া হয়না” “প্রেমের মরা জলে ডুবেনা/ওপ্রেম করতে একদিন ভাঙ্গতে দুইদিন/এমন প্রেম আর কইরোনা দরদী ” এবং “সাজিয়ে গুজিয়ে আমায়দে/স্বজনীগো সাজিয়ে গুজিয়ে আমায় দে” ইত্যাদি জনপ্রিয় গানের গীতিকার ও সুরকার বাউল কামাল পাশা ১৯০১ ইং সনের ৬ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জের দিরাই থানার ভাটিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহন এবং ১৯৮৫ সালের ২০ বৈশাখ মৃত্যুবরন করেন। একজন ভাষা সৈনিক হিসেবে তিনি আপাদমস্তক খাটি বাঙ্গালী ছিলেন। বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ ছিল তার আদর্শ। স্বরচিত গানে তিনি নিজেকে বাঙ্গালী,বাংলাদেশী,বাংলাদেশের লোক এবং এক মায়ের সন্তান হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। সর্বধর্মের বিশ্বাসের আলোকে এক স্রষ্টায় বিশ্বাসী একজন আস্তিক মরমী সাধক হিসাবে মরমী ভূবনে নিজেকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট সঙ্গীত সাধকের মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করে গেছেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিময় শোসনহীন সমাজ কায়েমে তার নিরলস সাধনাই তাকে সংস্কৃতিতে কিংবদন্তী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শান্তির পক্ষে তিনি মানবতার জয়গান গেয়ে অমর হয়ে আছেন।
“এক পিতা এক মায়ের সন্তান আমরা ভাই ভাই
আমরা দেশের শান্তি চাই।।
একটাই আমাদের পৃথিবী,এক আল্লাহ আমাদের দাবী
সব নবী আমাদের নবী,বিভিন্নতা নাই।।
হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রীস্টান,তাতে নাই কোন ব্যবধান
সবে চাই দেশের কল্যাণ,দেশেরী ভালাই।।
কেউ করোনা বিভিন্নতা,আমরা হই স্বাধীন জনতা
বাউল কামালে কয় শুন কথা,সবারে জানাই ”।।
উল্লেখ করা একান্ত আবশ্যক যে,গায়ক পিতা মরমী কবি আজিম উদ্দিন ওরফে টিয়ারবাপের সুযোগ্য সন্তান হিসেবে জন্মগতভাবে গান গাওয়ার অপরাধে জমিদারদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত গ্রামের হাইস্কুলে তাকে অধ্যয়নের সুযোগদান থেকে বিরত রাখায় তিনি একই থানার দূরবর্তী রাজানগর কৃষ্ণচন্দ্র পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এম.ই,সুনামগঞ্জ জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিকুলেশন,সিলেটের এমসি কলেজ থেকে বিএ এবং ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসা থেকে হাদিস শাস্ত্রের উপর উচ্চতর ডিগ্রী গ্রহন করেন। অসম্ভব পান্ডিত্যের অধিকারী গীতিকার হিসেবে আরবী ফারসি হিন্দী ও ইংরেজী ভাষায় অজস্র গান তিনি রচনা করেছেন। সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামে সরজমিনে গিয়ে এই মহাণ ভাষা সৈনিক শিল্পীর কবর জেয়ারত,কামাল সঙ্গীত চর্চা প্রচার ও প্রসারে বাংলাদেশের সকল শিল্পী ও সংস্কৃতানুরাগীরা এগিয়ে আসবেন এ প্রত্যাশায় নিম্নোক্ত দেশাত্ববোধক গানটি উপস্থাপন করতে চাই।
“বাংলা মায়ের সন্তান আমরা কাঁধে কাঁধ মিলাইয়া চলি
আমরা বীরবাঙ্গালী রে ভাই আমরা বীরবাঙ্গালী।।
ভূলবোনা শহীদ ভাইদের কথা,স্মরণ আছে সেই ব্যথা
অন্তরে বায়ান্ন চিতা উঠে জ্বলি জ্বলি।
মাগো তোমার সুকোমলে জানাই শ্রদ্ধাঞ্জলী
ল্যাংরা লোলা বোবা কানা মায়ের কোলে লয়মা তুলি।।
সুজলা সুফলা বাংলা দেখিতে লাগে শ্যামলা
আরো কত লাগে ভালা মায়ের মুখের বুলি।
সকাল বেলা উঠে রবি করে ঝিলিমিলি
নদী ভরা স্নিগ্ধজল,আরো মাটের ফসল লইবো তুলি।।
যারা আনলো বাংলার স্বাধীন,ভূলিবার নয় রক্তেরী ঋণ
স্মরণ করি বৎসরে ৩দিন,যতসব বাঙ্গালী।
গাই শহীদের স্মৃতির কথা বিশ্ববাসী মিলি
বাউল কামাল পাশা পায় আনন্দ,শুনাইয়া মুখেরী বুলি ”।।
পরিশেষে বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষি সকল শহীদ পরিবারসহ দেশপ্রেমিক জনগণ এবং গবেষকদের সবিনয়ে বলতে চাই ভাষা আন্দোলনে অজোপাড়াগায়ের প্রয়াত বাউল কবি কামাল পাশার অবদানকে জানার এবং সরকারকে মানার ও বুঝার জন্য ভূমিকা রাখুন। কারণ ভাষা সৈনিক কামাল পাশাকে মরণোত্তর স্বীকৃতি অথবা রাষ্ট্রীয় কোন পদক সম্মানে ভূষিত করা হলে দেশ সত্যিকার অর্থেই একজন খাটি বাঙ্গালী ও প্রকৃত ভাষা সৈনিককে মূল্যায়ন করা হবে বলে বাংলাদেশের মরমী জগতের মানুষেরা মনে করবেন। আপাতত রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই শীর্ষক কামালগীতি পরিবেশনের জন্য সকল শিল্পী কলা কূশলীদেরকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়ে প্রতিবেদনের ইতি টানলাম।
“ঢাকার বুকে গুলি কেন ? নুরুল আমিন জবাব চাই
ওসে উর্দ্দূ প্রেমে মন মজাইয়া,মারলো কতো শহীদ ভাই।
ওসে উর্দ্দূ প্রেমে মন মজাইলো,করলো কত রং বড়াই।।
শেখ মুজিব কারাঘারে,আন্দোলন কেউ নাহি ছাড়ে
সত্যাগ্রহে এক কাতারে,সামনে আছেন সামাদ ভাই।।
ওয়ান ফৌরটি ফৌর জারী করলো,নির্র্বিচারে ছাত্র মারলো
কত মায়ের বুক খালি হইলো,সে কথাতো ভূলি নাই।।
সালাম বরকত রফিক জব্বার,হলেন শহীদ বাংলাভাষার
একটাই দাবী কামাল পাশার,রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই ”।।
লেখক : গীতিকার,সাংবাদিক ও বাউল শিল্পী বাংলাদেশ বেতার সিলেট, যুগ্ম আহবায়ক বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বাউল দল এবং সভাপতি জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা সুনামগঞ্জ জেলা শাখা ।

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন
Previous Post

কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির জনসভা

Next Post

শার্শায় ব‍্যবসায়ীকে কুপিয়ে ছিনতাই, আটক ৪

Related Posts

খাইতে পারি না পড়াশোনা করাব কিভাবে?
মতামত

খাইতে পারি না পড়াশোনা করাব কিভাবে?

নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করা যায়নি
মতামত

নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করা যায়নি

ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ নাকি সংস্কার?
মতামত

ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ নাকি সংস্কার?

Next Post
শার্শায় ব‍্যবসায়ীকে কুপিয়ে ছিনতাই, আটক ৪

শার্শায় ব‍্যবসায়ীকে কুপিয়ে ছিনতাই, আটক ৪

Discussion about this post

সর্বশেষ সংবাদ

কুড়িগ্রামে জমে উঠেছে যাত্রাপুর গরুর হাট

কুড়িগ্রামে জমে উঠেছে যাত্রাপুর গরুর হাট

দুই যুগ পর কোটালীপাড়া উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন

দুই যুগ পর কোটালীপাড়া উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন

রাজশাহীতে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উদযাপিত

রাজশাহীতে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উদযাপিত

কুড়িগ্রাম বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস পালিত

কুড়িগ্রাম বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস পালিত

ঘাটে আটকে থাকা ৪ মরদেহ বিশেষ ছাড়ে গন্তব্যে পৌঁছাল

ঘাটে আটকে থাকা ৪ মরদেহ বিশেষ ছাড়ে গন্তব্যে পৌঁছাল

আর্কাইভ

June 2025
S M T W T F S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
« May    

প্রকাশক ও সম্পাদকঃ মোঃ আব্দুল বারী
ইমেইলঃ dtbangla@gmail.com

Mobile No- +88 01710862632
ঢাকা অফিসঃ ৩৩ কাকরাইল (২য় তলা)
ভিআইপি রোড, কাকরাইল ঢাকা -১০০০
প্রেসবিজ্ঞপ্তি পাঠানোর ইমেল:
newsdtb@gmail.com
কুষ্টিয়া অফিস: দৈনিক দেশতথ্য
দাদাপুর রোড (মজমপুর)
(কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনের সামনে)
মোবাইল:01716831971

Copyright © 2024 dailydeshtottoh All right reserved. Developed by WEBSBD.NET

No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • জাতীয় খবর
  • স্বদেশ খবর
  • বিদেশি খবর
  • শিক্ষা
  • স্বাস্থ্য
  • কৃষি
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • ধর্ম
  • আইটির খবর
  • লাইফস্টাইল
    • ভ্রমণ তথ্য
  • সম্পাদকীয়
    • মতামত
  • অন্যান্য
    • প্রাপ্ত বয়ষ্কদের পাতা
    • সাহিত্য ও সংষ্কৃতি
    • স্মৃতিচারণ/স্মরণ
    • ফটো গ্যালারী
  • ই-পেপার

Copyright © 2024 dailydeshtottoh All right reserved. Developed by WEBSBD.NET

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In

Add New Playlist