মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল:
আবেগঘন পরিবেশে প্রধান শিক্ষকসহ তিন গুনী শিক্ষককে অবসরজনিত বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘ ৩৩ বছরের কর্মজীবনের ইতি টেনে তারা বিদায় নিয়েছেন। এই বিদায় ছিল খুবই কষ্টের ও বেদনার। তিন গুনী শিক্ষকসহ অনুষ্ঠানস্থলে আসা অতিথি, বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবার চোখে ছিল জল।
অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ এবং বিদায়ী শিক্ষকগন যখন স্মৃতি চারণ করেন তখন পুরো পরিবেশ স্তব্দ হয়ে যায়। তাদের কর্মজীবনের দীর্ঘ দিনের স্মৃতিচারণ, আবেগ ও অনুভুতির কথা শুনে অনেকেই কান্নায় ভেঙ্গে পরেন। টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে উপজেলা সদরের মির্জাপুর এস কে পাইলট মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ছিল প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম খান, সহকারী শিক্ষক সৈয়দ হাসিফ আল মনসুর এবং আলো রাণী পোদ্দারের অবসরজনিত বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। বিদ্যালয় কতৃপক্ষ এ অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিলেন। দিনভর বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও বিদ্যালয়ে প্রাঙ্গনে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মিলন মেলায় পরিনত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যালয়ের সভাপতি ও মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ বি এম আরিফুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন মির্জাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জুলফিকার হায়দার।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আবুল বাশারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, বিদায়ী প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম খান, সহকারী শিক্ষক সৈয়দ হাসিফ আল মনসুর, বিদ্যালয়ের বর্তমান সহকারী প্রধান ও (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক প্রফুল্ল সরকার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আতিকুর রহমান, মির্জাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সুলতান উদ্দিন, দেওহাটা এ জে উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. খোরশেদ আলম, সিয়াম একাডেমিক প্রধান শিক্ষক মো. আকরাম হোসেন, প্রেস ক্লাবের সভাপতি সোহেল মোহসীন শিপন, বরাটী হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সহিনুর রহমান খান প্রমুখ। অবসরজনিত বিদায়ী শিক্ষকদের উত্তরীয় পরিধানস, ক্রেস্টসহ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়।
বিদায়ী প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম খান তার বক্তব্যে বলেন, দীর্ঘ ৩৩ বছরের কর্মজীবনে আমি ন্যায়, নিষ্ঠা, সততা ও আন্তরিকতা দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেছি। মানুষ ভুলের উর্দ্বে নয়। আমার সময়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী, এলাকাবাসি, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, স্থানীয় প্রশাসন এবং রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পরামর্শ ও সহযোগিতা নিয়ে এই বিদ্যালয়েকে জাতীয় করনসহ সরকারী করন করেছি। এর সুফল ভোগ করবে এলাকাবাসি। বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ও ফলাফল অত্যান্ত সন্তোষজনক। এই সুনাম ও শিক্ষার মান ধরে রাখার জন্য সবাইকে অনরোধ জানান। তিনি আরও বলেন, আমার কোন ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার জন্য সবিনয় অনুরোধ করছি।
প্রধান অতিথি ও বিদ্যালয়ের সভাপতি এ বি এম আরিফুল ইসলাম তিনি তার বক্তব্যে বলেন, একজন প্রধান শিক্ষক হিসেবে যতগুলো গুনাবলী থাকার কথা তার সবগুলো গুনাবলী প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম খানের মধ্যে ছিল। তিনি অত্যান্ত ধৈর্যশীল মানুষ। তার মেধা, মনন ও পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়ে শিক্ষকতা পেশাকে আকড়ে ধরে এই বিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে এসেছেন। তিনি একজন সাধা মানের মানুষ এবং তার কোন তুলনা হয়না। শেষ বক্তব্যে একই অভিমত ব্যক্ত করেন অনুষ্ঠানের সভাপতি ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জুলফিকার হায়দার।

Discussion about this post