রাজনৈতিক প্রতিরোধের মুখে জাপা প্রেসিডেন্ট জিএম কাদের। তৃণমূল এমপি চায় আওয়ামীলীগ থেকে।
জিএম কাদের এমপি বির্তকিত কর্মকান্ডে সরকারি দল ও নিজ দলের নেতা কর্মীরা হতাশ। জিএম কাদের প্রতিরোধের মুখে পড়তে যাচ্ছেন। ৯০’র দশক হতে লালমনিরহাট সদর তিন আসনের এমপি জিএম কাদের। তিনি মন্ত্রীও হয়ে ছিল। এবারে জিএম কাদের এমপির সুবিদাবাদি রাজনীতি হুমকির মুখে পড়েছে। জাপার একাংশ জিএম কাদের এমপির নেতৃত্বে বিএনপি জোটে যোগ দিলেও লালমনিরহাটের সদর আসন জিএম কাদের পাবে না। এই আসন বিএনপির শক্তিশালী ঘাঁটি। এটা সাবেক উপমন্ত্রী আসাদুল হাবিব দুলুর মনোনয়ন চুড়ান্ত প্রায়। এদিকে আওয়ামীলীগের তৃণমূল লালমনিরহাট সদর ৩ আসনে মনোনয়ন চায় জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মোঃ মতিয়ার রহমানকে দিতে হবে। জিএম কাদের এমপির নানা বির্তকিত সিদ্ধান্তে জেলায় দলীয় কোন্দলে চরম আকার ধারণ করেছে। এ জেলায় জাপা ত্রি মুখী কোন্দেলে বিপর্য়ের মুখে।
এই জেলায় জাপা তিনটি গ্রুপ, জিএম কাদের গ্রুপ, রওশন এরশাদ গ্রুপ ও বিদিশা গ্রুপ। জাতীয়পার্টির স্থানীয় সিনিয়ার নেতারা রওশন এরশাদের অনুগত। যার কারনে জিএম কাদের লালমনিরহাটর রাজনীতিতে তার স্ত্রী শরিফা কাদের কে নিয়ে এসেছে। শরিফা কাদের এখন জেলা জাপার আহবায়ক। চট্রগ্রামের সংরক্ষিত মহিলা আসন- ৪৫ এর এমপি মাসুদা এমএ রশিদের মৃত্যুতে শূন্য আসানে জিএম কাদেরের স্ত্রী মোছাঃ শরিফা কাদের সংরক্ষিত আসনে এমপি হয়। ভাগ্নিকে টেক্কা দিয়ে। জাপা চুড়ান্ত ভাবে একটি পারিবারিক রাজনৈতিক দলে পরিণিত হয়ে যায়। ফরে হারিয়ে ফেলেছে জনপ্রিয়তা। এখন আর এরশাদপ্রীতি এই অঞ্চলে কাজ করে না। জাপা (একাংশের ) প্রেসিডেন্ট জিএম কাদের এমপি ৯০ দশকে এরশাদ প্রীতির ওপর ভর করে রাজনীতিতে আসে। লালমনিরহাট শহরের হাসপাতাল রোড়ে ৩/৪ শতাংশ জমি কিনে কাঁচাপাকা ঘর করে। এভাবে নিজেকে শহরে স্থায়ী বাসিন্দা প্রচার করে কিন্তু বিগত ২০ বছরে বিশ রাত থাকেনি বাসায়। আওয়ামীলীগের সাথে জোটবদ্ধ জাপার রাজনীতিতে সাফল্য আসে। এমপি হয়ে মন্ত্রী হয়। ৯০ সাল হতে টানা এই সদর আসনের এমপি তিনি। শুধু মাঝখানে জাপা একাংশের নেতা জিএম কাদের নির্বাচন করেনি। এই ৫ বছর আওয়ামীলীগের নেতা ইঞ্জিনিয়ার আবু সাইদ দুলাল এমপি নির্বাচিত হয়। ৯০ দশকের পরে জিএম কাদের এমপি লালমনিরহাট সদরের উন্নয়ন অবদান রাখতে পারেনি। বরং যোগাযোগ ব্যবস্থা, ব্যবসা বাণিজ্য দিন দিন হুমকির মুখে পড়েছে। এই জেলার সাথে পাশের জেলা কুড়িগ্রামে কোন বাস যোগাযোগ সার্ভিস চালু নেই। ৯০’র পর হতে শুনে আসছি দেশের তৃতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর বুড়িমারী সাথে ৮ লেন রাস্তা নির্মানের প্রকল্প কথা কিন্তু বাস্তবে পরিণতির কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনি। জেলা শহর হতে চা বোর্ড়ের কার্যালয়, মা ও শিশু বিশেষায়িত এক শত শষ্যার হাসপাতাল, লালমনিরহাট সরকারি পলিটেকনিক্যাল কলেজ সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান চলে গেছে কালীগঞ্জ উপজেলায়। এমনও শুনা যায় জেলা শহরের মধ্যবর্তী উপজেলা কালীঞ্জে জেলা স্থানান্তর করা হতে পারে। এমন পরিকল্পানা কথা শুনা যায়। জেলা লালমনিরহাট গুরুত্ব হারিয়ে ফেলছে। পাটগ্রাম, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, আদিতমারী এই চার উপজেলার মানুষ সরকারি কাজ ও মামলা মোকদ্দমা ছাড়া জেলা শহরে আসার প্রয়োজন পড়ে না। রংপুর বিভাগীয় শহরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ তাই দৈনন্দিন সকল প্রয়োজনে, চিকিৎসা, শপিং, কেনা কাটায় রংপুরের প্রতি নির্ভশীল। তারা কালীগঞ্জের কাকিনার মহিপুর শেখ হাসিনা দ্বিতীয় তিস্তা সেতু দিয়ে যাতাযাত করে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত একান্ত ইচ্ছেয় যতটুকু উন্নয়ন হয়েছে লালমনিরহাটের এই যা। সদরের এমপি ২০ বছরে সামান্য একটি কুলাঘাট ষ্টীলের সেতুটি নির্মানের বাজেট আনতে পারেনি। এই সেতুটি নির্মাণে খুব বেশী হলে ১০ কোটি টাকার প্রয়োজন। অথচ এই সেতুটির কারণে হাজার কোটি টাকা খরচ করে নির্মান করা শেখ হাসিনা ধরলা সেতুটি যোগাযোগ ব্যবস্থায় কোন অবদান রাখতে পারেনি ১২ বছরেও। তাই তৃণমূলের আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা সরকারি দলের এমপি হিসেবে লালমনিরহাট সদর আসনে মনোনয়ন চায় জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের প্রশাসক এ্যাডভোকেট মোঃ মতিয়ার রহমানকে। সরকারি দলের নেতা ও জাপার নেতা কর্মীরা জিএম কাদের একজন সুবিধাবাদি রাজনৈতিক নেতা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঐক্যবদ্ধ থাকা পরিবর্তে তিনি ঐক্যেচিড় ধরাচ্ছে। একবার বিএনপির সাথে, আবার সাম্প্রদায়িক রাজনীতি হিন্দু ধর্মের সনাতনপার্টি সাথে মিলে নানা তামাশার রাজনীতি শুরু করেছে। তাই সরকারি দলের মাঠ পর্যায়ের নেতা কর্মীরা এবার খোদ জিএম কাদের কে তার সংসদীয় আসনে রাজনৈতিক ভাবে প্রতিরোধ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আওয়ামীলীগের সমর্থন ছাড়া কোথাও জিএম কাদেরের জাতীয়পার্টি সংসদ নির্বাচনে এটাও আসনে জিততে পারবে না। জাপা এখন লালমনিরহাটে তিনটি ধারায় বিভক্ত। জাপার জিএম কাদেরের সাথে গুটি কয়েক ছেলে ছোকড়া, কিশোর গ্যাং ছাড়া কেউ নেই। সিনিয়র নেতা কর্মীরা তিক্তবিরক্ত হতাশ। তাই জাপা কাদেরের নেতৃত্বে সদ্য অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন চেয়অরম্যান নির্বাচনে জাপা মনোনীত একজন প্রার্থীর বিজয়ী হতে পারেনি। আওয়ামীলীগ জনগণের রাজনৈতিক দল। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছে। স্বৈরশাসকদের হটিয়ে রাজনীতিতে সুদৃঢ় অবস্থান গ্রহন করে দীর্ঘদিন ক্ষমতায়। উন্নয়ন ও বড়বড় উন্নয়ন প্রকল্প আজ দেশে দৃশ্যমান। সেই দলে কোন বেইমান থাকতে পারবে না। তাকে প্রতিরোধ করা হবে।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//সেপ্টম্বর ০২,২০২২//

Discussion about this post